ডেস্ক রিপোর্ট

৩ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৩৬ পূর্বাহ্ণ

জীবন চলছে কেমন?

আপডেট টাইম : নভেম্বর ৩, ২০২৪ ১২:৩৬ পূর্বাহ্ণ

শেয়ার করুন

রাজেকুজ্জামান রতন :
দেখা হলে কেমন আছেন জিজ্ঞেস করা আমাদের অভ্যাস। ভেতরে যত কষ্টই থাক মুখে হাসি ফুটিয়ে ‘ভালো আছি’ বলাটা আমাদের স্বভাব। এতে প্রশ্নকর্তা এবং উত্তরদাতা দুজনেই জানেন, উত্তরটা সঠিক নয়। সীমিত আয়ের মানুষের মাথায় চেপে আছে যেন অসীম ব্যয়ের বোঝা। ফলে একটু হেসে ‘ভালো আছি’ বললেও হাসিটা কান্নার মতো দেখায়। বাজারে পণ্যের অভাব নেই, কিন্তু পকেটে টাকার অভাব। এর সমন্বয় হবে কীভাবে, এই দুশ্চিন্তা তাড়িয়ে বেড়ায় মধ্যবিত্তকে। মাস শেষ হওয়ার আগেই টাকা শেষ হওয়া একটি সাধারণ ঘটনা। এর সঙ্গে যদি যুক্ত হয় মাস শেষেও মজুরি না পাওয়া বা চাকরি হারানোর ব্যাপার, তখন মানসিকভাবে সুস্থ থাকা কঠিন। ফলে বাসে, বাজারে, রাস্তায় এবং ঘরে অসহিষ্ণুতা বাড়ছে দিন দিন। রেগে গেলেন তো হেরে গেলেন বলে যতই প্রচার করা হোক না কেন, অল্পতেই ক্ষেপে যাচ্ছে মানুষ।

দ্রব্যমূল্য নিয়ে অনেক কথা হচ্ছে। কিন্তু উদ্যোগ নেওয়ার ঘোষণার বাইরে আর কোনো দৃশ্যমান ফলাফল নেই। বেশিরভাগ আলোচনা আর উদ্বেগ যেন খাবারের জিনিসের দাম নিয়ে। চাল, ডাল, তেল, আটা, চিনি, মাছ, মাংস, ডিম, দুধ, শাক, সবজি, পেঁয়াজ, রসুন, আদা সব কিছুই আলোচনার বিষয় হয়ে উঠে দামের কারণে। নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্ত সবার জীবন যেন আটকে আছে পরিবারের জন্য খাদ্যদ্রব্যের সংস্থান করার চিন্তায়। এর বাইরে যে জীবনের আরও প্রয়োজন আছে, যেগুলো পূরণ না করলে বেঁচে থাকাই মুশকিল সেগুলোর সংস্থান করতে যে জীবন জেরবার হয়ে যায়, সে কথা যেন আড়ালেই থেকে যাচ্ছে। সংখ্যার দিক থেকে দেশের জনসংখ্যার একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ শিশু ও বৃদ্ধ। এক থেকে পাঁচ বছর বয়সী শিশুর সংখ্যা কমপক্ষে দেড় কোটি আর এরা আছে কমপক্ষে এক কোটি পরিবারে। ফলে শিশুখাদ্য, ওষুধ, পোশাক, জুতা, খেলনাসহ কত আয়োজন লাগে। বাবা-মা নিজেদের সামর্থ্যরে বাইরে গিয়েও সন্তানের চাহিদা পূরণ করতে চান। কিন্তু চাওয়াটা পূরণ করা যখন কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে তখন সেই অসহায়ত্ব বেদনাদায়ক। আবার ৬০ বছরের বেশি বয়সীদের বৃদ্ধের তালিকায় রাখলে সে সংখ্যাটা প্রায় দুই কোটি হবে। বৃদ্ধদের দরকার একটু যত্ন, বিশেষ খাবার, চিকিৎসা, ওষুধপত্র। ফলে যে পরিবারে শিশু এবং বৃদ্ধ আছে সেই পরিবারের ব্যয়ের বহর একটু বেশি। শিশুখাদ্য এবং ওষুধের দাম যেভাবে বাড়ছে তাতে এই পরিবারগুলো পড়েছে ভীষণ সমস্যায়। বাসা আর অফিসের দূরত্বটা চাকরিজীবীদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যদি এই রুটে বাস চলে তাহলে কিছুটা নিশ্চিন্ত। তারপরও অফিস শুরু ও ছুটির সময়টাতে প্রচণ্ড ভিড় মোকাবিলা করে এমনকি দরজায় ঝুলে মানুষকে যাতায়াত করতে হয়। নারীদের জন্য এটা অসম্ভব। ফলে তাদের ভরসা রিকশা কিংবা সিএনজিচালিত অটোরিকশা অথবা ভাড়ায় চালিত কিংবা অ্যাপের মোটরসাইকেল। ‘সিটিং সার্ভিস’ নামে যেসব বাস চলে তাদের সর্বনিম্ন ভাড়া ১০ টাকা। পা ফেলার জায়গা থাকে না। এমন ভিড়ে চাপাচাপি যে, কোনো বাসে যাত্রীর সংখ্যা থাকে আসনসংখ্যার দ্বিগুণের বেশি। যেসব রুটে বাস চলে না সেখানে বিকল্প হিসেবে রিকশা, মোটরসাইকেল অথবা সিএনজিচালিত অটোরিকশা ছাড়া উপায় নেই। তিন কিলোমিটারের দূরত্বে বাস ভাড়া ১৫ থেকে ২০ টাকা। কিন্তু এই দূরত্বে রিকশা ভাড়া ৮০ থেকে ৯০ টাকা, সিএনজি অটোরিকশার ভাড়া ১৫০ থেকে ২০০ টাকা আর মোটরসাইকেলের ভাড়া ১২০ থেকে ১৫০ টাকা। দৈনিক আসা-যাওয়ার খরচ দাঁড়ায় ১৫০ থেকে ৪০০ টাকা। গণপরিবহন না থাকলে একজন অফিস যাত্রীকে প্রতিদিন অফিসে যাতায়াত করতে ৬ থেকে ১০ গুণ বেশি ভাড়া গুনতে হয়। বাড়তি ভাড়ার বাড়তি চাপ মোকাবিলার একটি মাত্র পথ জানা আছে সাধারণ মানুষের। তা হলো খরচ কমাও, খাওয়া কমাও। যার প্রভাব পড়ছে ঘরে-বাইরে সর্বত্র।

ঢাকার গণপরিবহন ব্যবস্থাকে সুশৃঙ্খল করার প্রয়োজন কেউই অস্বীকার করেন না। দুই কোটি অধিবাসী নিয়ে ঢাকা বিশে^র অন্যতম প্রধান ঘনবসতিপূর্ণ এক শহর। প্রতি বর্গকিলোমিটারে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ বসবাস করে, প্রতিদিন লাখ লাখ মানুষ নানা কাজে ঢাকায় আসে এবং ফিরে যায়। সড়কে শৃঙ্খলা আর গণপরিবহনের পরিসর বাড়ানো ছাড়া দ্রুতই এই শহর চলাচল অযোগ্য শহরে পরিণত হবে। সেই বিবেচনা থেকেই পরিবহন ব্যবস্থায় একটা কাঠামোগত সংস্কার প্রয়োজন। ইতিমধ্যেই ঢাকা বিশে^র সবচেয়ে ধীরগতির শহরে পরিণত হয়েছে। কর্মক্ষেত্রে এবং কাজের প্রয়োজনে যাওয়া-আসা যেন এক বিড়ম্বনার নাম। এক গবেষণায় দেখা গেছে, ঢাকার প্রাণকেন্দ্র মতিঝিল এলাকায় বাসের গতি ঘণ্টায় ৪ কিলোমিটারের মতো। হেঁটে গেলেও এর চেয়ে দ্রুত যাওয়া সম্ভব। কিন্তু হেঁটে যাওয়ার উপায় তো নেই। একে তো ফুটপাত নেই, যাও আছে তাও দখল হয়ে আছে। আর যেগুলো ফাঁকা আছে সে ফুটপাত দিয়ে হাঁটা কঠিন। কারণ এত ভাঙাচোরা, উঁচু-নিচু যে ধরে নেওয়া হয়েছে এই ফুটপাতে নারী, শিশু, বৃদ্ধরা হাঁটবেন না। রাস্তা পারাপারের জন্য ফুটওভার ব্রিজগুলো ব্যবহার অযোগ্য এবং মানুষকে কষ্ট দেওয়ার জন্যই যেন তৈরি করা হয়েছে। অব্যবস্থাপনার পাশাপাশি ঢাকা অন্যদিকে দক্ষিণ এশিয়ার দ্বিতীয় ব্যয়বহুল শহর। ঢাকায় এলেই কৃষি এবং খাদ্যপণ্যের দাম বহুগুণ বেড়ে যায়। নিত্যপণ্যের দাম, বছর বছর ঐকিক নিয়মে বেড়ে চলা তো সারা দেশের ব্যাপার কিন্তু ঢাকায় এর হার অর্থনীতির কোনো সূত্রকেই মানে না। কেন ১৫ টাকার সবজি উত্তরবঙ্গ থেকে ঢাকায় এলে তার দাম ৬০ থেকে ৮০ টাকা হয়ে যায় এই প্রশ্ন দীর্ঘদিনের। এর উত্তর জানা থাকলেও সমাধানের উদ্যোগ দেখা যায় না কখনো। মাঝে মাঝে লোক দেখানো অভিযান চলে, টিভি এবং পত্রিকায় ছবি আসে যে, ব্যাপক তৎপরতা চলছে। কর্তাব্যক্তিরা বলেন, জনগণকে কষ্ট দিলে কাউকে ছাড়া হবে না। কিন্তু দু-চারজনকে জরিমানা করা পর্যন্তই কাজ। তারপর যথারীতি আগের মতোই। ফলে জনগণ আর ভরসা করতে পারে না বরং সন্দেহ করে যে, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে সিন্ডিকেট আছে, এই সিন্ডিকেট শুধু শক্তিশালীই নয়, ক্ষমতাসীনদের সঙ্গেও সম্পর্কিত। এ বাঁধন যায় না ছেঁড়া।

দ্রব্যমূল্য, বাসা ভাড়ার সঙ্গে যানবাহনে যাতায়াতের অযৌক্তিক ব্যয় ঢাকা শহরকে বাসযোগ্যতার তলানিতে থাকা এক শহরে পরিণত করেছে। পরিবহন ও যোগাযোগ বিশেষজ্ঞরা বলেন, নাগরিকদের আয়ের সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ যদি যাতায়াতে খরচ হয়, সেই শহরটিকে টেকসই ধরা হয়। কিন্তু সবচেয়ে কম করেও যদি হিসাব করা হয় তাহলে দেখা যাবে ঢাকায় যাতায়াত ব্যয় অনেক ক্ষেত্রেই কোনো পরিবারের ক্ষেত্রে ৩০-৪০ শতাংশ পর্যন্ত। যাতায়াতের পেছনে এত খরচ করতে হলে মানুষ সংসার চালাবে কীভাবে? এই দুশ্চিন্তা তাকে উত্তেজিত করে রাখে সবসময়। সে কারণেই বাসে চিৎকার-চেঁচামেচি একটি নিয়মিত বিষয়। জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান বাংলাদেশের ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায় তৈরি করেছে। মনে হতে পারে, এই অভ্যুত্থান স্বতঃস্ফূর্ত কিন্তু এরও গড়ে উঠার ইতিহাস আছে। ১৫ বছরের সরকারবিরোধী আন্দোলন তো আছেই, ২০১৮ সালে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা নিরাপদ সড়ক আন্দোলন করে ঢাকাসহ সারা বাংলাদেশকে যে ঝাঁকুনি দিয়েছিল, দমন-পীড়নের কারণে তা স্তিমিত হয়ে গেলেও পাঁচ বছর পর সেই প্রজন্মই জান বাজি রেখে আন্দোলন করে সরকারকে উৎখাত করেছে। ফলে এই অভ্যুত্থান যেসব আকাক্সক্ষার ভিত্তিতে গড়ে উঠেছিল তার অন্তরালে অনেক দাবির মতো স্বাভাবিকভাবেই সড়কে শৃঙ্খলা ও মৃত্যুর মিছিল বন্ধের দাবিটাকেও সামনে নিয়ে আসে।

সরকারের সামনে এখন অনেক কাজ। একটি সুষ্ঠু, অবাধ নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় কাজ করা এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। পাশাপাশি ব্যাংকসহ আর্থিক খাত, প্রশাসন, পুলিশ খাতে সংস্কারের প্রয়োজন আছে। একটা দায়হীন লুটপাটের দেশকে শৃঙ্খলায় আনার কাজ কঠিন, এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু তাই বলে সড়ক ও পরিবহন খাত কি এখনো গুরুত্বহীন হয়ে থাকবে? থাকবে কি সেই আগের মতোই বিশৃঙ্খলা, নৈরাজ্য। এখনো প্রতিদিন সড়কে রক্ত ঝরছে, প্রাণ যাচ্ছে। এর অন্যতম প্রধান কারণ ট্রাফিক অব্যবস্থাপনা। ছাত্র-শ্রমিক-জনতার অভ্যুত্থানের আড়াই মাস পরও ঢাকার ট্রাফিক ব্যবস্থা স্বাভাবিক না হওয়ার একটাই অর্থ যে, বিষয়টি গুরুত্ব পাচ্ছে না। চালকরা যেমন ট্রাফিক পুলিশকে মানে না, আবার ট্রাফিক পুলিশও তাদের দায়িত্ব পালনকে যেন হয়রানি করা আর টাকা রোজগারের বিষয় হিসেবে মনে করেন। ফিটনেসবিহীন গাড়ি পাশ দিয়ে কালো ধোঁয়া ছেড়ে চলে যায়, যত্রতত্র যাত্রী ওঠানামা করাতে গিয়ে যানজট লাগিয়ে ফেলে কিন্তু এতে কারও যেন কিছু আসে-যায় না। বেশিরভাগ সিগন্যালেই দেখা যায়, দু-একজন কনস্টেবল দায়িত্ব পালন করছেন আর কর্মকর্তারা গোল হয়ে দাঁড়িয়ে কিংবা রাস্তার পাশের চায়ের দোকানে বসে গল্প করছেন। চালকরা নিয়ম মানে না, বেপরোয়া গাড়িচালায় আর পথচারীরাও নিয়ম না মানার প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হওয়ার কারণে সড়কের যান চলাচল পরিস্থিতি হয়ে উঠেছে দুর্বিষহ। যাত্রীরা জ্যামে পড়ে ক্ষিপ্ত আর চালক-হেল্পাররা দিন শেষে যে টাকা মালিককে দিতে হবে তা তোলার জন্য অস্থির। ফলাফল হচ্ছে, সুযোগ পেলেই গতি বাড়িয়ে সময় পুষিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা। যে কারণে দুর্ঘটনা ঘটেই চলেছে। রিকশা, ব্যাটারিচালিত রিকশা, মোটরসাইকেল, ঘোড়ার গাড়ি; ছোট-বড়, হালকা-ভারী, দ্রুতগতির যানসহ ১৮ সংস্করণের যানবাহন চলে থাকে ঢাকায়। ফলে ঢাকার সড়কে শৃঙ্খলা ফেরানো একটি জটিল ও কঠিন কাজ। ‘গণপরিবহন ব্যবস্থা’ না থাকায় সাম্প্রতিক সময়ে মোটরসাইকেল অনেকটা ‘গণপরিবহন’ হয়ে উঠেছে। ব্যক্তিগত যাতায়াত এবং জীবিকার অংশ হিসেবে মোটরসাইকেল এখন সড়কের অন্যতম প্রধান বাহন। প্রায় ১৩ লাখ মোটরসাইকেল চলছে ঢাকার সড়কে। এর চালকরা তরুণ, যাত্রী হিসেবে তরুণ যুবকরাই এই বাহনকে পছন্দ করেন। নিয়ম না মানা এবং নিয়ম ভাঙ্গার প্রতিযোগিতা এক্ষেত্রে খুব বেশি। সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর মিছিলে মোটরসাইকেল চালক এবং আরোহীরা এখন শীর্ষে।

সড়কে শৃঙ্খলা, দুর্ঘটনা কমানো আর যানজট থেকে মুক্তি দিতে গেলে কী কী করা দরকার, সেটা নিয়ে নতুন করে ভাবনা-চিন্তা করার খুব বেশি দরকার নেই। ২০১৮ সালের শিক্ষার্থীদের নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের পর বিশেষজ্ঞরা যে সুপারিশগুলো দিয়েছিলেন, সেগুলোর বাস্তবায়ন শুরু করলে সমস্যা দূর হতে থাকবে। এর জন্য দরকার সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্ত আর দক্ষ ও দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের নিয়ে গড়ে তোলা একটি টিম। নগর পরিবহন বিশেষজ্ঞদের মতে, ছয় হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করা গেলে ঢাকার গণপরিবহন ব্যবস্থার খোলনলচে বদলে দেওয়া সম্ভব। ২৯১টির বেশি রুটে পাঁচ হাজার বাস চলে ঢাকায়। ৫৩ শতাংশ যাত্রী এই গণপরিবহন ব্যবহার করেন। ১১ শতাংশ যাত্রী ব্যবহার করেন ব্যক্তিগত গাড়ি। অথচ রাস্তার ৭০ শতাংশ দখলে থেকে ব্যক্তিগত গাড়ি ব্যবহারকারীদের দখলে। ফলে বাসের জন্য রাস্তা যাচ্ছে কমে। আর অনেক কোম্পানির বাস একই রুটে চলে। ফলে এদের অভ্যন্তরীণ প্রতিযোগিতা ড্রাইভারদের বেপরোয়া করে তোলার অন্যতম প্রধান কারণ। কে কার আগে যাবে, বেশি যাত্রী নেবে এই প্রতিযোগিতায় যানজট বাড়ে, দুর্ঘটনাও বাড়ে। ঢাকায় একই ছাতার নিচে একটা সিটি বাস সার্ভিস চালু করা এবং রুট সংখ্যা কমানোর কথা চলছে বহুদিন ধরে, কিন্তু কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেই।

সাম্প্রতিক সময়ে দেশে দুর্নীতি সহায়ক যেসব মেগা প্রকল্প হয়েছে, সেই তুলনায় ছয় হাজার কোটি টাকা খুব বড় বিনিয়োগ নয়। কিন্তু নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, ওষুধের দাম বৃদ্ধি, বাড়ি ভাড়া, গ্যাস, বিদ্যুৎ পানির দাম বৃদ্ধি, পরিবহন ভাড়া বৃদ্ধি সব মিলে সাধারণ মানুষের জীবনে যেন মূল্যসন্ত্রাস চেপে বসছে। এর সঙ্গে যানজট কেড়ে নিচ্ছে সময় এবং স্বস্তি। সাধারণ মানুষ বলেন, এভাবে জীবন চলে না তবুও চালাতে হয়। রাজনৈতিক সংস্কারের পাশাপাশি সংসার চালানোর স্বস্তি পেতে চান মানুষ। সংস্কারের এমন সময়ে এই বিষয়গুলো যেন উপেক্ষিত না হয়।

লেখক: রাজনৈতিক সংগঠক ও কলাম লেখক

শেয়ার করুন