ডেস্ক রিপোর্ট
৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৯:১০ অপরাহ্ণ
অধিকার ডেস্ক: বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক কমরেড বজলুর রশীদ ফিরোজ আজ ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ সংবাদপত্রে দেওয়া এক বিবৃতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ, সংবিধান, জাতীয় সঙ্গীত ও জাতীয় পতাকা, মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা ইত্যাদি সেটেলড বিষয়কে আনসেটেলড করার অপপ্রয়াস চালাচ্ছে স্বাধীনতা বিরোধী একদল মানুষ যারা মুক্তিযুদ্ধকে কখনোই মেনে নিতে পারেনি।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, স্বাধীনতাত্তোর ৫২ বছরে শাসকশ্রেণি সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার এবং রাষ্ট্রীয় ৪ মূলনীতি গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও জাতিয়তাবাদ এই মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত চেতনার বিপরীতে দেশ পরিচালনা করে বিশেষ করে গত ১৫ বছরে আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকার চরম দুঃশাসন জনগণের উপর চাপিয়ে দিয়েছিল। দেশ ও জনগণের স্বার্থে নয় শাসকরা নিজেদের ক্ষমতার স্বার্থে সংবিধানকে ১৭ বার সংশোধন করে এর চেহারা বদলে দিয়েছে। জনগণ সকল ক্ষমতার মালিক, সংবিধানে বর্ণিত মৌলিক অধিকার পরিপন্থি কোন আইন রাষ্ট্র সরকার প্রণয়ন করতে পারবে না এটাকে দ্বিতীয় সংশোধনীর মতো চরম অগণতান্ত্রিক সংশোধনী অর্থাৎ সংসদের দুই তৃতীয়াংশ সদস্যের সম্মতিতে যে কোন আইন প্রণয়ন করতে পারবে এটা এনে জনগণের সার্বভৌমত্বের জায়গায় সাংসদদের সার্বভৌমত্ব কায়েম করে কালাকানুন জারির সিংহদ্বার খুলে দিয়েছে। সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ যা সাংসদদের ব্যক্তি স্বাধীনতাকে খর্ব করেছে এই ধরনের অগণতান্ত্রিক ধারা ও সংশোধনী বাতিলের দাবি আমাদের দল বাসদসহ বামপন্থিরা দীর্ঘদিন ধরেই করে আসছি।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, বিভিন্ন জাতিসত্ত্বা তথা আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি, সম্পত্তির উত্তরাধিকারে নারী-পুরুষের সমানাধিকার, ২৬ অনুচ্ছেদ থেকে শুরু হওয়া মৌলিক অধিকারসমূহ আইনের মাধ্যমে কার্যকর করার বিষয়টি নিশ্চিতসহ নির্বাহী, বিচার, আইন বিভাগ তথা ক্ষমতা কাঠামোর পৃথকীকরণ (Seperation of power) তথা ভারসাম্য প্রতিষ্ঠাসহ ’৭২ এর সংবিধানের অসম্পূর্ণতা দূর করে সংবিধানের মৌল কাঠামো অক্ষুন্ন রেখে যুগোপযোগি করার দাবি করেছি। কিন্তু যারা মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতায় বিশ্বাস করেনা তারা ২০২৪ সালের জুলাই অভ্যুত্থানের বৈষম্য বিলোপ ও ফ্যাসিবাদ পুরুত্থান রোধ করার চেতনা ও আকাঙ্ক্ষা ব্যর্থ করতে মুক্তিযুদ্ধ, সংবিধান এমনকি জাতীয় সঙ্গীত পরিবর্তনের যে আওয়াজ দিচ্ছে তা দেশের জন্য এক অশনি সংকেত।
বিবৃতিতে তিনি মুক্তিযুদ্ধ, সংবিধান, জাতীয় সঙ্গীতের উপর যে কোন আঘাত, গণঅভ্যুত্থান ’২৪ এর চেতনা এবং মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত চেতনায় বিশ্বাসী গণতন্ত্রপ্রিয় ছাত্র-জনতাকে ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মূল চেতনা হলো সমাজের সকল বৈষম্য বিলোপ এবং ফ্যাসিবাদী শাসনের ভিত্তি উপরে ফেলা। তিনি অভ্যুত্থানের মূল চেতনাকে ব্যর্থ করার যে কোন অপতৎপরতা রুখে দাঁড়ানোরও আহ্বান জানান।