ডেস্ক রিপোর্ট
১৮ জুন ২০২৪, ১১:২৩ অপরাহ্ণ
অধিকার ডেস্ক: উজানের পাহাড়ি ঢল ও ভারী বৃষ্টিতে মৌলভীবাজার সদর, রাজনগরসহ সাতটি উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় ঈদুল আজহার দিনেও ভোগান্তিতে পড়েন মুসল্লিরা। পানিবন্দি অনেক মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে উঠছেন।
জানা যায়, সোমবার (১৭ জুন) ভোর থেকেই মৌলভীবাজার জেলার বিভিন্ন উপজেলায় টানা বৃষ্টিপাত হয়। এতে করে ডুবে যায় নিম্নাঞ্চলের রাস্তাঘাট। ঈদের দিন এই টানা বৃষ্টিপাত ও বন্যার কারণে মানুষ ভোগান্তিতে পড়েন। অনেক ঈদগাহে পানি উঠে যাওয়ায় ঈদের নামাজ হয় উঁচু স্থান ও মসজিদে। অনেক রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে করে জেলার সাতটি উপজেলার প্রায় ২০টি ইউনিয়নের ৫ লাখের বেশি মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েন।
সরেজমিন দেখা গেছে, মৌলভীবাজার সদর উপজেলার খলিলপুর ইউনিয়নের ১,২ ও ৩নং ওয়ার্ড পানিতে তলিয়ে গেছে। মনুমুখ ইউনিয়নেরও কয়েকটি ওয়ার্ডে পানি বেড়ে বন্যা হয়েছে। ঈদের দিন নামাজ ঈদগাহে গিয়ে আদায় করতে পারেননি নিম্নাঞ্চলের মানুষ। পশু কোরবানি দিতে গিয়ে পড়ছেন বিড়ম্বনায়। চারদিকে পানি থাকায় ও অঝোর ধারায় বৃষ্টিপাত হওয়ায় এই সমস্যায় পড়েন মানুষজন। বাড়িঘরে পানি প্রবেশ করায় আশ্রয়কেন্দ্রে যাচ্ছেন অনেকে। কুশিয়ারা নদীর পানি বেড়ে রাজনগর উপজেলার উত্তরভাগ ও ফহেতপুরসহ কয়েকটি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। এ ছাড়া মৌলভীবাজারের কুলাউড়া, জুড়ি ও বড়লেখা উপজেলার হাকালুকি হাওর এলাকা, রাজনগর ও সদর কুশিয়ারি নদীর পানিতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জ উপজেলার নিচু এলাকায় ভারী বর্ষণে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
খলিলপুর ইউনিয়নের হামরেকোনা গ্রামের বাসিন্দা মামুন বলেন, দুই দিনের টানা বৃষ্টিতে এবার পানি বেশি বেড়েছে। রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। যার কারণে বাড়ি থেকে বের হওয়া যাচ্ছে না। পানি বাড়তেই আছে। ঈদের দিন নামাজ আদায় ও পশু কোরবানি দিতে ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে মুসল্লিদের।
শ্রীমঙ্গল আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, গতকাল সোমবার সকালে মাত্র ২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। আজ মঙ্গলবার বেড়ে গিয়ে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত ১২৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। আগামী ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টায় এই অঞ্চল ও তৎসংলগ্ন উজানে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, মৌলভীবাজারে আজ মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় কুশিয়ারা নদীর শেরপুর পয়েন্টে পানি বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই। যার কারণে ওই এলাকার কিছু এলাকা প্লাবিত হবে। কয়েকটি ইউনিয়নে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে।
মৌলভীবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাসরিন চৌধুরী বলেন, আমার খলিলপুর ও মনুমুখ ইউনিয়ন বন্যাকবলিত হয়েছে। মাইকিং করা হয়েছে যাতে সবাই আশ্রয়কেন্দ্রে যান। সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে আশ্রয়কেন্দ্রে হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক ড. উর্মি বিনতে সালাম বলেন, মৌলভীবাজার সদর ও রাজনগরের কয়েকটি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। জুড়ি ও বড়লেখা উপজেলায় বন্যাকবলিতদের আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া হয়েছে। আরও বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস থাকায় আমরা সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছি। জেলার প্রতিটি উপজেলার ইউএনওদের নিয়ে কমিটি করা হয়েছে। সার্বক্ষণিক নজরদারি করা হচ্ছে। আমাদের সকল প্রস্তুতি সম্পূর্ণ আছে।