ডেস্ক রিপোর্ট

৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১১:৩১ অপরাহ্ণ

শাবিতে হলে ওঠা নিয়ে দ্বন্দ্বে ছাত্রলীগ নেতাকে আরেক নেতার সমর্থকদের মারধর

আপডেট টাইম : ফেব্রুয়ারি ৬, ২০২৩ ১১:৩১ অপরাহ্ণ

শেয়ার করুন

সিলেট প্রতিনিধি: সিলেটে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসিক হলের সিট নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে এক ছাত্রলীগ নেতাকে আরেক ছাত্রলীগ নেতার সমর্থকেরা মারধর করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল রোববার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহপরান হলে এ ঘটনা ঘটে।

মারধরের শিকার সানজিদ চৌধুরী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি ওই বিভাগের ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দেওয়া তথ্যে জানা গেছে, সানজিদ চৌধুরী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক উপদপ্তর সম্পাদক সজীবুর রহমানের অনুসারী ছিলেন। কয়েক মাস আগে অন্তঃকোন্দলের জেরে সানজিদকে নিজের পক্ষ থেকে বের করে দেন সজীব। সানজিদ চৌধুরী বিশ্ববিদ্যালয়সংলগ্ন এলাকায় একটি মেসে ওঠেন। গতকাল রাতে তিনি শাহপরান হলের ৪২৫ নম্বর কক্ষে গেলে ছাত্রলীগ নেতা সজীবুর রহমানের অনুসারী সাজ্জাদ হোসেনসহ ২০–২৫ মিলে তাঁকে মারধর করেন। পরে হলের ‘গেস্টরুমে’ নিয়ে হাত বেঁধে রাখেন।

এদিকে খবর পেয়ে রাতেই হলের প্রাধ্যক্ষ মীজানুর রহমান খান, সহকারী প্রাধ্যক্ষ কৌশিক সাহা, সমুদ্রবিজ্ঞানের বিভাগীয় প্রধান সুব্রত সরকারসহ কয়েকজন উপস্থিত হন। পরে প্রাধ্যক্ষ জানান, সানজিদ চৌধুরী হলের বৈধ ছাত্র নন। এ সময় সানজিদ নিজেকে হলের বৈধ শিক্ষার্থী হিসেবে দাবি করেন। পরে দুই পক্ষকে বুঝিয়ে সানজিদকে হল থেকে বাইরের আবাসিক একটি ছাত্রাবাসে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।

সানজিদ চৌধুরীর দাবি, তিনি শাহপরান হলের ৪২৫ নম্বর কক্ষের বৈধ শিক্ষার্থী। রোববার দুপুরে ওঠার জন্য হলের কার্যালয়ে টাকা জমা দিয়েছিলেন। সে অনুযায়ী তিনি ওই কক্ষে গিয়েছিলেন। সেখানে যাওয়ার পর তাঁকে ছাত্রলীগ নেতা সজীবুর রহমানের পক্ষে রাজনীতি না করায় মারধর করা হয়। তিনি বলেন, সম্প্রতি তিনি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাফিজ আল আসাদের হয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখালেখি করেছিলেন। এ জন্য সজীবুর রহমানসহ তাঁর সমর্থকেরা ক্ষিপ্ত ছিলেন। যদিও তিনি তাঁদের সঙ্গে আগে এক বলয় হিসেবে রাজনীতি করেছেন।

তবে সজীবুরের অনুসারী সাজ্জাদ হোসেনের দাবি, সানজিদ চৌধুরী গভীর রাতে হলে উঠেছিলেন। এ সময় ৪২৫ নম্বর কক্ষে আরও দুই ছাত্র ছিলেন। সানজিদ ওই কক্ষে গিয়ে নিজেকে সেখানকার বৈধ শিক্ষার্থী দাবি করেন। যদিও আগে তিনি ৪২৭ নম্বর কক্ষে ছিলেন। এরপর প্রায় দেড় মাস থেকে তিনি বাইরে থাকেন। এর আগেও বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকাকালে হলে গিয়ে কক্ষের তালা ভেঙে অবস্থান করেছিলেন সানজিদ। এ নিয়ে একাধিকবার ঝামেলাও হয়েছে।

মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করে সাজ্জাদ হোসেন বলেন, সজীবুর রহমানের সঙ্গে বেয়াদবি করায় সানজিদকে গ্রুপ থেকে আলাদা করা হয়েছিল। রোববার রাতেও ছুরি হাতে কয়েকজনের ওপর তেড়ে গিয়েছিলেন সানজিদ। পরে তাঁকে আটক করে গেস্টরুমে নেওয়া হয়। সেখানে হলের প্রভোস্টসহ অন্য শিক্ষকদের ডেকে তাঁকে তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল।

হলের প্রাধ্যক্ষ মীজানুর রহমান খান বলেন, সানজিদ চৌধুরী হলের বৈধ শিক্ষার্থী নন। আগেও তাঁর বিরুদ্ধে হলের কক্ষের তালা ভেঙে অবস্থানের অভিযোগ রয়েছে। রোববার রাতে তাঁকে মারধর করা হয়েছে কি না, সেটি তিনি দেখেননি। তবে তাঁকে গেস্টরুমে হাত বাঁধা অবস্থায় পেয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, সেটি দেখে তিনি ও অন্য শিক্ষকেরা খুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছিলেন। বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য তদন্ত করা হবে।

শেয়ার করুন