ডেস্ক রিপোর্ট
২৬ মার্চ ২০২২, ৮:১৪ অপরাহ্ণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক :: রাশিয়ার ওপর পশ্চিমা দেশগুলোর জারি করা অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার প্রভাবে রুশ সরকারে টালমাটাল পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে— এমন ভাবনাকে ‘নির্বুদ্ধিতাপূর্ণ’ বলে উল্লেখ করেছেন দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট ও বর্তমান জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের উপপ্রধান দিমিত্রি মেদভেদেভ।
শুক্রবার রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম রিয়া নভোস্তিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মেদভেদেভ বলেন, ‘আসুন, আমরা বরং নিজেরাই নিজেদের প্রশ্ন করি যে, যেসব ব্যবসায়ীকে পশ্চিমা দেশগুলো নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, দেশের সরকার বা জাতীয় নেতৃত্বে কি তাদের ন্যূনতম প্রভাব আছে?’
‘আমি খোলাখুলিভাবে বলতে পাারি— নেই, একদমই নেই।’
‘পশ্চিমের নিষেধজ্ঞায় রাশিয়ার সরকারব্যবস্থা ও ক্রেমলিনের মধ্যে কোনো ফাটল ধরবে না, বরং (এসব নিষেধাজ্ঞা) রাশিয়ার সমাজকে একত্রিত করবে।’
পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটোকে কেন্দ্র করে দ্বন্দ্বের জেরে ইউক্রেনে রাশিয়ার ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ শুরুর পর থেকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে একের পর এক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও তাদের মিত্র দেশগুলো।
এসব নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হওয়ায় ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে ব্যবসা গোটাতে বাধ্য হয়েছে রাশিয়ার প্রধান ব্যাংকগুলো, আন্তর্জাতিক মুদ্রা লেনদেন ব্যবস্থা সুইফট থেকে রাশিয়াকে বাদ দেওয়া হয়েছে এবং দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের যে সম্পদ ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রে ছিল, সেসবও জব্দ করা হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে স্বাভাবিকভাবেই কিছুটা চাপে পড়েছে রাশিয়া। তবে সাক্ষাৎকারে দিমিত্রি মেদভেদেভ বলেছেন, ইউক্রেনে ক্রেমলিনের সামরিক অভিযানের পক্ষে রাশিয়ার দুই তৃতীয়াংশ জনগণের সমর্থন আছে। এমনকি, এই অভিযান শুরুর পর থেকে রাশিয়ায় পুতিনের জনপ্রিয়তা বেড়েছে বলেও দাবি করেছেন তিনি।
তবে পুতিনের ঘনিষ্ঠ এই কর্মকর্তা মনে করেন, নিষেধাজ্ঞার আঘাতে জর্জরিত জাতীয় অর্থনীতিকে চাঙা করতে অবশ্যই রাশিয়াকে এখন নতুন কিছু নীতি নিতে হবে এবং বিমান, যানবাহন ও তথ্যপ্রযুক্তির মত ক্ষেত্রগুলোর উন্নয়নের জন্য নিজেদের সামর্থ্যের ওপর নির্ভর করতে হবে।
‘অনাগত দিনগুলোতে এসব ইস্যু মোকাবিলা করা অনেক বেশি চ্যালেঞ্জিং হবে আমাদের জন্য। তার কারণ, আমরা কারো ওপরই এখন ভরসা করতে পারছি না। তবে আমি মনে করি, এখন নিজেদের সামর্থ্যের ওপর সর্বোচ্চ আস্থা রাখতে হবে আমাদের।’
প্রবাসী রুশদের অনেকেই ইউক্রেনে রুশ অভিযানের ব্যাপক সমালোচনা ও নিন্দা করছেন। রিয়া নভোস্তির এ বিষয়ক এক প্রশ্নের উত্তরে মেদভেদেভ বলেন, ‘কর্তৃপক্ষের কিছু সিদ্ধান্তে আপনি অসন্তুষ্ট হতেই পারেন, এটা স্বাভাবিক।’
‘কিন্তু তাই বলে আপনি দেশের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে পারেন না, তাও এমন কঠিন পরিস্থিতিতে। কেউ যদি এমন করেন, সেক্ষেত্রে তা হবে দেশদ্রোহিতা।’
সূত্র: রয়টার্স