ডেস্ক রিপোর্ট

১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১০:০৫ অপরাহ্ণ

সর্বজনীন রেশনিং ও খাদ্য পণ্যের রাষ্ট্রীয় বাণিজ্য চালুর দাবি

আপডেট টাইম : ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০২৪ ১০:০৫ অপরাহ্ণ

শেয়ার করুন

অধিকার ডেস্ক: অবিলম্বে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি রোধ, সর্বজনীন রেশনিং ও খাদ্য পণ্যের রাষ্ট্রীয় বাণিজ্য চালু , সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং আওয়ামী ফ্যাসিবাদী দুঃশাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলার দাবিতে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল—(মার্কসবাদী) আজ ১৭ ফেব্রুয়ারি’২৪ বিকাল ৪টায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে।

পল্টন মোড়ে সমাবেশ ও সমাবেশ পরবতীর্তে একটি মিছিল পল্টন মোড় থেকে শুরু হয়ে জিরো পয়েন্ট, বায়তুল মোকারম হয়ে পুনঃরায় পল্টন মোড়ে এসে শেষ হয়।

বাসদ (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় নির্বাহী ফোরামের সমন্বয়ক কমরেড মাসুদ রানা’র সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী ফোরামের সদস্য ও ঢাকার নগর শাখার ইনচার্জ জয়দীপ ভট্টাচায্যর্, সীমা দত্ত, রাজু আহমেদ প্রমুখ। উল্লেখ্য কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ একই দাবিতে জেলায় জেলায় বিক্ষোভ—সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

কেন্দ্রীয় সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, “গত ৭জানুয়ারি’২৪ একটি প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী সরকার পুনঃরায় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়েছে। এই সরকার ক্ষমতায় বসে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্ররণ কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া তো দূরের কথা, বরং সিণ্ডকেট ব্যবসায়ী চক্রকে নানান উপায়ে সুরক্ষা দিচ্ছে। দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন উর্ধ্বগতি জনজীবনকে বিপর্যস্ত করে তুলেছে। খোদ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ই বলছে ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে দেশি পেঁয়াজের দাম ছিল ৩০— ৩৫ টাকা, যা এ বছরের জানুয়ারি মাসে এসে হয়েছে ৮০টাকা, চিনির দাম ছিল ১১০—১২০টাকা, যা বর্তমানে দাড়িঁয়েছে ১৪৫ টাকায়। এভাবে প্রত্যেকটি জিনিসের দাম বেড়েছে। আগামী মার্চ মাস থেকে শুরু হবে রমজান মাস। প্রতি রমজান মাসেই ভোজ্য তেল, চিনি, ছোলা, ডাল, খেজুর ইত্যাদির দাম বেড়ে যায়। রমজান মাসের আরো এক মাস বাকি। এরই মধ্যে ঢাকায় ছোলা, খেজুর, সয়াবিন তেলের দাম বেড়েছে। সরকার বলছে, কিছু ‘অসাধু লোক’,‘সিন্ডিকেট চক্র’ নাকি এ মূল্যবৃদ্ধি করেছে। কিন্তু এই অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে মুখে বড় বড় কথা বললেও, কার্যকর কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না। কারণ, মূল্যবৃদ্ধির সাথে যুক্ত বসুন্ধরা গ্রুপ, সিটি গ্রুপ, আকিজ গ্রুপের মতো বড় কর্পোরেট সংস্থাগুলি। এরাই সেই কথিত অসাধু ব্যবসায়ী। এদের আর্থিক আনুকূল্যেই বর্তমান সরকার ক্ষমতায়। এরই জলন্ত প্রমাণ হলো, বর্তমান সংসদ। এই সংসদের ১৯৯ জন প্রতিনিধিই ব্যবসায়ী। ফলে এটা সহজেই অনুমেয় যে, ব্যবসায়ীদের স্বার্থ সংরক্ষণই এই সরকারের কাজ। আবার সরকার এ যুক্তিও করছে যে, ডলার সংকটে ব্যবসায়ীরা নতুন করে এলসি খুলতে পারছে না। কিন্তু ব্যাপক লুটপাট, দুনীর্তি করে দেশের টাকা বিদেশী পাচারকারীদের বিরুদ্ধে তারা কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না। ব্যাংক লুট করলো যারা তাদের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না।

এ অবস্থা থেকে আশু মুক্তির জন্য একদিকে যেমন প্রয়োজন সর্বজনীন রেশনিং ও খাদ্য পণ্যের রাষ্ট্রীয় বাণিজ্য চালু। অন্যদিকে প্রয়োজন দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি রোধ ও অসাধু সিণ্ডকেট ব্যবসায়ীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা। অথচ আমরা দেখছি, সরকার তার উল্টো পথে হাটছে। এর কারণ অত্যন্ত পরিস্কার সরকার আর সিণ্ডিকেট ব্যবসায়ীদের স্বার্থ আজ অভিন্ন। সরকার ক্ষমতায় থাকতে সিণ্ডিকেট ব্যবসায়ীদের, আর সিণ্ডিকেট ব্যবসায়ীরা তাদের মুনাফার জন্য সরকারকে সমর্থন দিচ্ছে। তাই দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রন, খাদ্য পণ্যের রাষ্ট্রীয় বাণিজ্য চালুর আন্দোলন আর আওয়ামী ফ্যাসিবাদী দুঃশাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন আজ একই সুতোয় গাথা।”

নেতৃবৃন্দ, দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি রোধ, সর্বজনীন রেশনিং ও খাদ্য পণ্যের রাষ্ট্রীয় বাণিজ্য চালু এবং সিণ্ডিকেট ব্যবসায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে সামিল হওয়ার আহ্বান জানান।

শেয়ার করুন