ডেস্ক রিপোর্ট

১৩ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:১৩ পূর্বাহ্ণ

দুই মেরুতে নৌকা-স্বতন্ত্র প্রার্থীদের নেতাকর্মী

আপডেট টাইম : ডিসেম্বর ১৩, ২০২৩ ১২:১৩ পূর্বাহ্ণ

শেয়ার করুন

অধিকার ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিলেট আগমন উপলক্ষে ব্যাপক প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। সরকারপ্রধানের নির্বাচনী সফর ঘিরে উচ্ছ্বসিত আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়নপ্রাপ্তদের নেতাকর্মী। তবে দলের স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে কাজ করায় সমাবেশে আসতে তাদের নেতাকর্মী পড়েছেন অনেকটা অস্বস্তিতে।

আগামী ২০ ডিসেম্বর হজরত শাহজালালের (রহ.) মাজার জিয়ারতের মাধ্যমে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচার শুরু করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই দিন আলিয়া মাদ্রাসা মাঠের জনসভায় নৌকার প্রার্থীদের পরিচয় করিয়ে দেবেন তিনি।

এবারই দলে থেকে নির্বাচন করছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। এ অবস্থায় তৃণমূলে তৈরি হয়েছে বিভক্তি। এমনকি নির্বাচনে অন্যান্য দলের প্রার্থী থাকলেও বেশির ভাগ আসনেই স্বতন্ত্র প্রার্থীরা হয়ে উঠেছেন নৌকার শক্তিশালী প্রতিপক্ষ। এ অবস্থায় এবারের নির্বাচন অনেকটা ব্যতিক্রমী বলে মনে হচ্ছে নেতাকর্মীর কাছে। এ অবস্থায় শেখ হাসিনার সিলেট সফর নিয়ে তৃণমূলে শুরু হয়েছে নানা আলোচনা। দলীয় প্রধানের আগমনে মনোনয়নপ্রাপ্তদের নেতাকর্মী উচ্ছ্বসিত থাকলেও স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মী-সমর্থক রয়েছে বিপাকে। তাদের মতে, দলীয় সভাপতি ওই দিন সমাবেশ করে দলীয় মনোনয়নপ্রাপ্তদের পরিচয় করিয়ে দেবেন। আর স্বতন্ত্ররা থাকবেন আড়ালে– এটি খুবই পীড়াদায়ক।

সিলেট-১ আসনে মিসবাহ উদ্দিন সিরাজের ঘনিষ্ঠজন জাবেদ হোসেন বলেন, আমরা আওয়ামী লীগ করি। আমাদের প্রতীক নৌকা। কিন্তু যার হাত ধরে আমার আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে আসা, তিনি নির্বাচন করছেন স্বতন্ত্র। এটি আমার জন্য পীড়াদায়ক হলেও করার কিছু নেই। কারণ স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে দলের রয়েছে সবুজ সংকেত। তিনি বলেন, ওই দিন নৌকার প্রার্থীরা থাকবেন মঞ্চে। আর যদি নির্বাচন থেকে মিসবাহ সিরাজ সরে যান তাহলে ওই দিন মঞ্চে তাঁকে দেখা যেতে পারে। তবে শেখ হাসিনার একজন কর্মী হিসেবে তাঁকে এক নজর দেখার জন্য জনসভায় যাব।

সিলেট-১ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন তিনবারের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ। বিগত ১৫ বছর ধরে তিনি মনোনয়ন পাওয়ার আশায় ছিলেন। এবার মনোনয়ন না পেয়ে দলের প্রার্থী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের প্রতিপক্ষ হয়ে উঠেছেন তিনি। সিলেট-৬ আসনে কানাডার নাগরিকত্ব বাদ দিয়ে ১৫ বছর ধরে মাঠে আছেন কানাডা আওয়ামী লীগ সভাপতি সরওয়ার হোসেন। তিনি সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র নির্বাচন করছেন।

সিলেট-৫ আসনে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন সিলেট নগর আওয়ামী লীগ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ। ওই আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি অর্থনীতিবিদ ড. আহমদ আল কবির।

একইভাবে সুনামগঞ্জ-১ আসনে দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে টানা তিনবারের এমপি মোয়াজ্জেম হোসেন রতন ও জেলা আওয়ামী লীগ সদস্য সেলিম আহমদ স্বতন্ত্র নির্বাচন করছেন। সুনামগঞ্জ-২ আসনে বর্তমান এমপি জয়া সেনগুপ্তা, সুনামগঞ্জ-৫ আসনে মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমদ চৌধুরী। সুনামগঞ্জ-৪ আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) সাবেক চেয়ারম্যান ও সাবেক সচিব ড. মোহাম্মদ সাদিক। মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সম্পাদক এনামুল কবির ইমন।

হবিগঞ্জ-১ আসনে গাজী মোহাম্মদ শাহনেওয়াজ ও হবিগঞ্জ-২ আসনে মো. আব্দুল মজিদ খান স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। একইভাবে মৌলভীবাজারেও নির্বাচন করছেন আওয়ামী লীগের ৩ স্বতন্ত্র প্রার্থী।

একইভাবে হবিগঞ্জ-৪ আসনে নৌকার মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন। তাঁর ঘনিষ্ঠজন আবু হেনা বলেন, প্রধানমন্ত্রীর এই সফর আমাদের জন্য অত্যন্ত আনন্দের। কিন্তু ওই দিন শেখ হাসিনার পাশে থাকবেন নৌকার প্রার্থীরা। আমরা যেতে চাইলেও অনেক কষ্ট নিয়ে যেতে হবে। তিনি জানান, এবারের নির্বাচনে দলীয় কোন্দল অনেকটা বেড়ে যাবে। নিজেদের মধ্যে তিক্ততাও তৈরি হয়েছে।

এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০ ডিসেম্বর সিলেট আসবেন। ওই দিন তিনি আলীয়া মাদ্রাসা মাঠের জনসভায় ভাষণ দেবেন। এর আগে ২০১৮ সালেও সিলেট থেকে নির্বাচনী প্রচারে নেমেছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি।

শেয়ার করুন