ডেস্ক রিপোর্ট
১ জুলাই ২০২৫, ৭:৩০ অপরাহ্ণ
অধিকার ডেস্ক: জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদের এক কর্মীসভা আজ ১ জুলাই ২০২৫ বিকাল ৪:৩০টায় সেগুনবাগিচাস্থ ভ্যানগার্ড মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়। কর্মীসভায় বক্তব্য রাখেন দলের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা কমরেড খালেকুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ।
সভাপতিত্ব করেন সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য নিখিল দাস। সঞ্চালনা করেন ঢাকা মহানগরের নেতা খালেকুজ্জামান লিপন।
কর্মীসভায় কমরেড বজলুর রশীদ ফিরোজ বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তির দ্বারপ্রান্তে আমরা। বৈষম্যহীন সমাজের আকাঙ্ক্ষায় এদেশের ছাত্র-শ্রমিক-জনতার অপরিসীম আত্মত্যাগ আর সাহসী লড়াইয়ের মাধ্যমে কর্তৃত্ববাদী শেখ হাসিনার শাসনের অবসান ঘটিয়েছিল এদেশের জনগণ। দীর্ঘদিন ধরে জনগণের বুকের উপর জগদ্দল পাথরের মতো যে স্বৈরাচারী সরকার বসেছিল, জনগণের বাক-ব্যক্তি, সংবাদপত্রের স্বাধীনতাকে হরণ করে একটা ফ্যাসিবাদী কায়দায় রাষ্ট্রকে পরিচালনা করে আসছিল তার বিরুদ্ধে ১৬ বছরের লড়াইয়ের বহমান এক ফল্গুধারা মিলিত হয়েছিল জুলাই আন্দোলনে। জনতার সম্মিলিত প্রতিরোধে স্বৈরাচারী হাসিনা এবং তার দলীয় ক্যাডার বাহিনী শুধু ক্ষমতা থেকে উচ্ছেদ নয় দেশ থেকে পালাতে বাধ্য হয়। সে সময়ই আমাদের দল বাসদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল একটা ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন হয়েছে কিন্তু যে ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা এই ফ্যাসিস্ট উৎপাদন করে সে ব্যবস্থাকে উচ্ছেদ করা ছাড়া জনগণের মুক্তি আসবে না। আদতে তাই দেখা গেল, এক ফ্যাসিস্ট রেজিমের অবসান হতে না হতেই ধর্মীয় ফ্যাসিস্ট শক্তির উত্থান বাংলাদেশের মানুষ প্রত্যক্ষ করছে, নারীদের উপর আক্রমণ, তাদের স্বাধীন চলাফেরায় বাঁধা দেয়া, মব সন্ত্রাসের মাধ্যমে মাজার ভাঙা, বাউল আখড়ায় হামলা, মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি চিহ্ন স্মারক ভাঙাসহ জনগণের মৌলিক মানবিক অধিকারকে হরণ করা, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করতে নাপারা, আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির নাজুক অবস্থা দূর করা, দেশের সম্পদ বিদেশি শক্তির হাতে তুলে দেওয়ার নানা নতজানু নীতি গোটা দেশের মানুষকে হতবাক করেছে। জুলাই আন্দোলনে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের বিচার, সুষ্ঠু অবাধ গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য রাষ্ট্রের ন্যূনতম গণতান্ত্রিক সংস্কার এবং নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেওয়া নিয়ে চলছে নানা তালবাহানা। পূর্বের ন্যায় রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার অপব্যবহার, দুর্নীতি-লুটপাট ইত্যাদি নানা কিছুরও বহু অভিযোগ শোনা যাচ্ছে। তাই আজ জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তির ক্ষণে দাঁড়িয়ে একদিকে যেমন আমাদের সংগ্রামের শক্তিকে স্মরণ করা দরকার আবার একই সাথে সেই লড়াইয়ের শপথকে পুনর্বার উচ্চারণের মাধ্যমে প্রতিরোধের দ্বিতীয় ধাপের জন্য প্রস্তুতি নেওয়াও প্রয়োজন। সে লক্ষ্যকে সামনে রেখে বাসদ এবং তার বিভিন্ন গণসংগঠন মাসব্যাপী নানা কর্মসূচির মাধ্যমে এই জুলাই অভ্যুত্থানকে স্মরণ করবে।
আগামী ৩ জুলাই বৃহস্পতিবার বিকাল ৩ টায় গণহত্যার বিচার, সংস্কার ও নির্বাচনের দাবিতে ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে একটি গণসমাবেশ দিয়ে এই কর্মসূচি শুরু হবে। পরবর্তীতে ১৪ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়য়ের ছাত্রী শিক্ষার্থীদের মধ্যরাতের প্রতিরোধ, ১৫ জুলাই রাষ্ট্রীয় নিপীড়ন বিরোধী দিবস পালন, ১৬-২৩ জুলাই আন্দোলনে বিভিন্ন শহিদদের এলাকায় স্মরণ অনুষ্ঠান, ১৯ জুলাই-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রতিরোধ দিবস, ২৬ জুলাই – কারফিউ ভঙ্গ সাংস্কৃতিক কর্মীদের ও বামপন্থীদের, ২৯ জুলাই- শ্রমিক প্রতিরোধ দিবস এবং পরবর্তীতৈ জুলাই অভ্যুত্থানের প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি শীর্ষক সেমিনার ও বিজয় মিছিল সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।