ডেস্ক রিপোর্ট
১৯ এপ্রিল ২০২৫, ১০:২০ অপরাহ্ণ
অধিকার ডেস্ক : লুণ্ঠনের বুর্জোয়া ধারা ও ধর্মীয় মৌলবাদী ধারার বিপরীতে বাম বিকল্প রাজনৈতিক ধারা গড়ে তোলা ও আগামী অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দিতে বামপন্থি দলগুলোর প্রতি প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানান জানিয়েছেন বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) উপদেষ্টা কমরেড খালেকুজ্জামান।
শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) রাজধানীর তোপখানা রোডের বিএমএ ভবনের মিলনায়তনে বাসদের সমর্থক শুভানুধ্যায়ীদের দিনব্যাপী ২১তম বার্ষিক মিলন মেলা অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা জানান।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক কমরেড বজলুর রশীদ ফিরোজ।
কমরেড খালেকুজ্জামান দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে উল্লেখ করে বলেন, গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে জনগণের মধ্যে যে আশাবাদ গড়ে উঠেছিল তা ক্রমাগত ফিকে হয়ে যাচ্ছে। কারণ বৈষম্যের বিলোপ সাধনের স্লোগানে আকৃষ্ট হয়ে মানুষ গণঅভ্যুত্থানে শামিল হলেও একই শ্রেণির এক অংশকে হটিয়ে অপর অংশ শাসন ক্ষমতায় যাওয়ায় গত আট মাসেও জীবনযাত্রার ব্যয় কমেনি, আইনশৃঙ্খলার অবনতি থামেনি, গণতন্ত্রে উত্তোরণের জন্য যে নির্বাচন তা নিয়েও ধূম্রজাল সৃষ্টি করা হয়েছে। এর সঙ্গে ভৌগোলিক কারণে যুক্ত হয়েছে নানা সাম্রাজ্যবাদী দেশের ষড়যন্ত্র, টানাটানি। অনির্বাচিত দুর্বল সরকার সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলোর চক্রান্ত মোকাবিলা করতে অক্ষম শুধু নয় অনেক ক্ষেত্রে ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করতে তাদের ক্রীড়নক হিসেবে কাজ করছে বলে জনমনে সন্দেহ সৃষ্টি হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত চেতনা বাস্তবায়নে বিপ্লবী দলের নেতৃত্বে বিপ্লবী গণঅভ্যুত্থান না হওয়া পর্যন্ত শাসক বদল হলেও ব্যবস্থা বদল হবে না ফলে নির্দিষ্ট সময় পরপর গণঅভ্যুত্থানের ঢেউ আসতেই থাকবে।
আগামী পাঁচ/দশ কিংবা ২০ বছর পর যে অভ্যুত্থান হবে, তার জন্য বাসদ এবং বামপন্থি দলগুলোকে প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য তিনি আহ্বান জানান।
সারা দেশের ছয় শতাধিক সমর্থক-শুভানুধ্যায়ী দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে অংশ নেন করেন। বিভিন্ন বাম প্রগতিশীল রাজনৈতিক দলের নেতারা, প্রকৌশলী, কৃষিবিদ, চিকিৎসক, শিক্ষক, সাংবাদিক, আইনজীবীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষও অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে বাসদের কার্যক্রম, রাজনৈতিক সংগ্রাম, পরামর্শ, সমালোচনা তুলে ধরেন।
মিলন মেলায় বক্তব্য দেন বাংলাদেশ জাসদের সভাপতি শরীফ নূরুল আম্বিয়া, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড সাইফুল হক, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য কমরেড অধ্যাপক আব্দুস সাত্তার, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) সাবেক অধ্যাপক আবিদুর রেজা, দৈনিক সমকালের উপদেষ্টা সম্পাদক আবু সাঈদ খান, সুপ্রিম কোর্টের প্রবীণ আইনজীবী জেড আই খান, পান্না, গণতন্ত্রী পার্টির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যাপক ডা. শহীদুল্লাহ সিকদার, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের ট্রেজারার খায়রুজ্জামান কামাল, সাবেক অতিরিক্ত সচিব রশীদুল হাসান, শেখ আহাদ আহম্মেদ, কৃষিবিদ গিয়াস উদ্দিন পাটওয়ারী, বাসদের সহকারী সাধারণ সম্পাদক কমরেড রাজেকুজ্জামান রতন।
সভাপতির বক্তব্যে কমরেড বজলুর রশীদ ফিরোজ বলেন, বৈষম্যহীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা এবং ফ্যাসিবাদের পুনরুত্থানকে ঠেকাতে হলে শোষণমূলক পুঁজিবাদী লুণ্ঠনের পাহারাদার বুর্জোয়া জাতীয়তাবাদী ধারা ও বুর্জোয়া মৌলবাদী ধারার বিপরীতে বাম ও উদারনৈতিক গণতান্ত্রিক দল, সংগঠন, ব্যক্তির সমন্বয়ে বিকল্প রাজনৈতিক শক্তি গড়ে তোলা এখন সময়ের দাবি।