ডেস্ক রিপোর্ট
২৭ মার্চ ২০২৫, ৯:২১ অপরাহ্ণ
,বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ ঢাকা মহানগর শাখার উদ্যোগে মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে গতকাল ২৬ মার্চ ২০২৫ বিকাল সাড়ে ৪টায় সেগুনবাগিচাস্থ ভ্যানগার্ড মিলনায়তনে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। বাসদ ঢাকা মহানগর শাখার ইনচার্জ নিখিল দাসের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আলোচনা করেন বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির উপদেষ্টা, বীর মুক্তিযোদ্ধা কমরেড খালেকুজ্জামান, বাসদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক কমরেড বজলুর রশীদ ফিরোজ ও ঢাকা মহানগররের সদস্য খালেকুজ্জামান লিপন।
কমরেড খালেকুজ্জামান বলেন, গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আওয়ামী ফ্যাসিবাদী শাসনের অবসান হলেও ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা উচ্ছেদ হয়নি। ফলে অতিনিয়ন্ত্রিত স্বৈরাচার থেকে এখন অনিয়ন্ত্রিত স্বেচ্ছাচার চলছে। এখন অনেকে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের কথা বলছে, কিন্তু ব্যবস্থা বদল না হলে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ সৃষ্টি হবে না। অনেকে ’২৪ এর গণঅভ্যুত্থান দিয়ে ’৭১ এর মুক্তিযুদ্ধকে ঢেকে দিতে চায়। এটি অসম্ভব।
তিনি বলেন, ’৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের সাম্যের চেতনা যতদিন বাস্তবায়িত না হবে ততদিন ’৯০ ও ’২৪ এর মতো গণঅভ্যুত্থান বারে বারে আসবে। ’৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ হলো জনযুদ্ধ। যা বাংলাদেশের ভিত্তি। এটির সাথে অন্য কিছুর তুলনা হয় না। তিনি বলেন, শাপলা চত্বর আর শাহবাগের মতো অহেতুক বিতর্ক সামনে এনে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করছে। মুক্তিযুদ্ধকে বাতিল করার পরিকল্পনা হিসাবে সংবিধান থেকে চার মূলনীতি বাতিলের প্রস্তাব তোলা হচ্ছে। এই চার মূলনীতি আওয়ামী লীগের আবিষ্কার নয়। বরঞ্চ পাকিস্তানি প্রায় উপনিবেশিক শাসন শোষণের বিরুদ্ধে লড়তে গিয়ে গণমানুষের আকাঙ্খায় গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা, জাতীয়তাবাদ ও সমাজতন্ত্রের চেতনা মূর্ত হয়েছিল। কিন্তু স্বাধীনতার ৫৪ বছর যাবত বুর্জোয়া শাসকগোষ্ঠী এই মূলনীতির বিপরীতে দেশ পরিচালনা করে বাংলাদেশকে চরম বৈষম্যমূলক রাষ্ট্রে পরিণত করেছে।
কমরেড বজলুর রশীদ ফিরোজ বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গণঅভ্যুত্থানের চেতনার বিপরীতে রাষ্ট্র শাসন করছে। চাল, তেলসহ নিত্যপণ্যের বাজার সিন্ডিকেটের দখলে। ট্রাক সেলের দীর্ঘ লাইন দেখে বুঝা যায় নি¤œআয়ের মানুষের জীবনে নাভিশ্বাস উঠছে। বেতন-বোনাসের দাবিতে আন্দোলনরত শ্রমিকদের উপর হামলা-নির্যাতন বিগত ফ্যাসিবাদী দুঃশাসনের কথা আমাদের মনে করিয়ে দেয়। মাজার ধ্বংস, নারীর উপর সহিংসতা, মব সন্ত্রাসে আতংকিত দেশবাসী। দেশকে অস্থিতিশীলতার হাত থেকে বাঁচাতে হলে নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা দরকার। অথচ আজ প্রধান উপদেষ্টার ভাষণেও তার কোন সুস্পষ্ট দিক নির্দেশনা নাই। এতে করে জনমনে ধোঁয়াশা সৃষ্টি হচ্ছে। তিনি অবিলম্বে সুনির্দিষ্ট তারিখসহ নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করে একটি অবাধ, সুষ্ঠ, গ্রহণযোগ্য অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের মাধ্যমে একটি নির্বাচিত সরকারের হাতে শাসন ভার তুলে দেওয়ার দাবি জানান।