ডেস্ক রিপোর্ট
১৯ মার্চ ২০২৫, ১১:২১ অপরাহ্ণ
অধিকার ডেস্ক: বিএনপির ইফতার মাহফিলে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা অংশ নিয়েছেন। বুধবার রাজধানীর ইস্কাটনের লেডিস ক্লাবের ইফতারে শেখ হাসিনার স্বৈরাচারী শাসনের অভাবনীয় পতন ঘটানো অভ্যুত্থানে শরিক সব দলের প্রতিনিধিই উপস্থিতি ছিলেন। পুরো অনুষ্ঠান মিলনমেলায় পরিণত হয়।
ইফতারের আগে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে বলেন, ধর্মীয় উগ্রবাদীদের অপতৎপরতা ও চরমপন্থা নিয়ন্ত্রণে সরকার ব্যর্থ হলে তাদের সঙ্গে নিয়ে পরাজিত অপশক্তি দেশে ফের গণতন্ত্রের কবর রচনা করবে।
তিনি বলেন, গণহত্যাকারী পলাতক মাফিয়া চক্রকে যে কোনো মূল্যে বিচারের সম্মুখীন এবং গণতান্ত্রিক বিধি-ব্যবস্থা শক্তিশালী করতে হবে। বিএনপিসহ গণতন্ত্রের পক্ষের শক্তির আগামী দিনের রাজনৈতিক বন্দোবস্ত এটিই।
তারেক রহমান বলেন, নারীদের নিরাপত্তাহীন রেখে দেশ এগিয়ে নেওয়া সম্ভব নয়। সরকার, প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত তৈরি কিংবা অন্য কোনো কাজে বেশি মনোযোগী হওয়ায় আমাদের মা-বোন-কন্যারা নিরাপত্তা সংকটে পড়েছে কিনা, তা ভাবার প্রয়োজন রয়েছে।
তিনি বলেন, শুধু একটি জাতীয় নির্বাচনের জন্য মাফিয়া সরকারের পতন ঘটেনি– একথা যেমন সত্য, তার চেয়েও চরম সত্য, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন না করার জন্যই তাদের নির্মম পতন হয়েছে। ফলে নির্বাচনকে শুধু কোনো একটি রাজনৈতিক দলের ক্ষমতায় যাওয়া-না যাওয়া বিবেচনা করার সুযোগ নেই।
তিনি আরও বলেন, জনপ্রত্যাশার প্রতি শ্রদ্ধা না দেখিয়ে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের নামে গৌন ইস্যুকে মুখ্য করে সময়ক্ষেপণের চেষ্টা জনমনে ভুল বার্তা দেবে। অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষতা ও সরকারের কার্যক্রমের প্রতি জনগণের আস্থার সংকট সৃষ্টি হলে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার যাত্রা বিপদসংকুল হয়ে উঠতে পারে। এ ধরনের পরিস্থিতি শেষ পর্যন্ত পলাতক মাফিয়া চক্রের দোসরদের পুনরুদ্ধারের পথ সুগম করবে।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ফ্যাসিবাদমুক্ত পরিবেশ পেলেও গণতন্ত্রের দিশা খুঁজে পাচ্ছি না। ঐক্যে জোর দিয়ে তিনি বলেন, এ মুহূর্তে ঐক্য অত্যন্ত জরুরি। আলোচনার মাধ্যমে সমস্যাগুলো সমাধান করা প্রয়োজন।
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘দেশের বিভিন্ন জায়গায় এখনও ফ্যাসিবাদী শক্তি ও তার দোসররা রয়েছে। ফ্যাসিবাদী পদ্ধতি পাল্টাতে হবে। একটি পরিবর্তিত ব্যবস্থা প্রয়োজন। গত বছর ৫ আগস্ট মানুষ মুজিববাদ ও ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগকে বিতাড়িত করেছে। দেশের ভবিষ্যৎ রাজনীতি ও নির্বাচনে মুজিববাদী রাজনীতির কোনো স্থান হবে না।’
জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের বলেন, ‘আজ বাংলাদেশ পরীক্ষার মধ্য দিয়ে অগ্রসর হচ্ছে। ৫ আগস্টের সফলতার মূলে ছিল সব শ্রেণির মানুষের ঐক্য। দেশের ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে জাতীয় ঐক্যই হবে শক্তিশালী হাতিয়ার।’
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে ও প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর সঞ্চালনায় ইফতার মাহফিলে বক্তৃতা করেন এলডিপির প্রেসিডেন্ট কর্নেল (অব.) অলি আহমদ, জাতীয় পার্টির (জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর প্রমুখ। দোয়া পরিচালনা করেন খেলাফত মজলিসের আমির মামুনুল হক।
উপস্থিত ছিলেন জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল হালিম, জাসদের সভাপতি শরীফ নুরুল আম্বিয়া, বিজেপি চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির বহ্নিশিখা জামালী, জেএসডির তানিয়া রব, এবি পার্টির মজিবুর রহমান মঞ্জু, আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, গণফোরামের সুব্রত চৌধুরী, ইসলামী ঐক্যজোটের আব্দুর রকিব, বাংলাদেশ এলডিপির শাহদাত হোসেন সেলিম, জাতীয় দলের সৈয়দ এহসানুল হুদা, এনপিপির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ববি হাজ্জাজ, এনসিপির নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, সারজিস আলম প্রমুখ।