ডেস্ক রিপোর্ট

১২ মার্চ ২০২৫, ৯:০৬ অপরাহ্ণ

নারী-শিশু ধর্ষণ-নির্যাতন, নারীবিদ্বেষী উস্কানীমূলক বক্তব্য বন্ধের দাবি বাম জোটের

আপডেট টাইম : মার্চ ১২, ২০২৫ ৯:০৬ অপরাহ্ণ

শেয়ার করুন

অধিকার ডেস্ক: অব্যাহত নারী-শিশু ধর্ষণ, নির্যাতন, নারীবিদ্বেষী উস্কানীমূলক বক্তব্য, চুরি, ডাকাতি, মব সন্ত্রাস বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবি।

আজ ১২ মার্চ ২০২৫ বাম গণতান্ত্রিক জোটের বিক্ষোভ সমাবেশ বিকাল ৪টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় নেতৃবৃন্দ বলেন, সারাদেশে নারী-শিশু ধর্ষণ, নির্যাতন, মব সন্ত্রাসের মাধ্যমে নারীর উপর সহিংসতা ক্রমবর্ধমান হারে চলছে। সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠি কর্তৃক নারী বিদ্বেষী উস্কানিমূলক বক্তব্য নারীর উপর সহিংসতাকে মদত যোগাচ্ছে। দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটেছে। ক্ষমতাসীন অন্তর্বর্তী সরকার এসব পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে তো পারছেই না বরং গতকাল আমরা দেখলাম ধর্ষণের বিরুদ্ধে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মিছিলে পুলিশ বর্বরোচিত হামলা করে অনেক শিক্ষার্থীকে গুরুতর আহত করেছে। গতকাল মধ্যরাতে একদল মব সিপিবি নেতা লাকী আক্তারের গ্রেফতার ও ফাঁসীর দাবিতে মিছিল করেছে। কেননা লাকী আক্তার ধর্ষণের বিরুদ্ধে গতকাল মশাল মিছিলে অংশ নিয়েছিলেন। সরকারের উপদেষ্টারা সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট দিয়ে বলে বেড়াচ্ছেন এসকল মবকে কঠোর হস্তে দমন করা হবে কিন্তু তাদের নাকের ডগাতেই এই মব সন্ত্রাস চলছে। কিন্তু কোন কার্যকর ব্যবস্থা সরকারের পক্ষ থেকে নেয়া হচ্ছে না। বাম জোট নেতৃবৃন্দ হুশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, আজ লাকীসহ যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে আন্দোলনকারী জনতাকে যারা হত্যার হুমকি দিচ্ছে তাদের অবিলম্বে গ্রেফতার ও বিচার করুন অন্যথায় যেকোন পরিস্থিতির দায় প্রশাসন এড়াতে পারবে না। দেশবাসী গভীর উদ্বেগ, উৎকন্ঠা ও ঘৃনাভরে লক্ষ্য করে আসছে যে, পতিত ফ্যসিবাদী সরকারের মত বর্তমান সরকারও ছাত্র, শ্রমিক, শিক্ষক, আদিবাসী, বিভিন্ন পেশাজীবিদের দাবি আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের পথে না হেঁটে এসব গণতান্ত্রিক আন্দোলন বল প্রয়োগ করে দমনের পথ বেছে নিয়েছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।

নেতৃবৃন্দ বলেন, আমরা হতবাক হয়ে দেখলাম পুলিশ গতকাল হামলা করল যা দেশের প্রায় প্রতিটি গণমাধ্যমে এসেছে অথচ আজ পুলিশই বাদী হয়ে ৭০-৮০ জন শিক্ষার্থীর নামে মামলা করেছে। এগুলো সরকারের চূড়ান্ত দমননীতির বহিঃপ্রকাশ। সরকার মৌলবাদী জঙ্গি গোষ্ঠীকে তোয়াজ করে চলেছে আর আন্দোলনরত জনতার উপর হামলা মামলা নামিয়ে নিয়ে আসছে যা জুলাই গণ অভ্যুথানের চেতনার সাথে সাংঘর্ষিক। অবিলম্বে এই মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান নেতৃবৃন্দ।

নেতৃবৃন্দ বলেন, চুরি,ডাকাতি, ছিনতাই, দখল-চাঁদাবাজি, রাহাজানিসহ আইন-শৃঙ্খলার চরম অবনতিতে জানমাল ও সামাজিক নিরাপত্তাহীনতায় মানুষ দিশেহারা। সরকার সন্ত্রাসী ও দুষ্কৃতকারীদর দমনের ক্ষেত্রে শুধু ব্যর্থই নয়, বরং সরকারের নির্বিকার, দায়িত্বহীন ভূমিকা এসকল কাজকেই উৎসাহিত করছে। সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বলছেন, দেশে গাজার মত পরিস্থিতি বিরাজ করছে, সেনা প্রধান বলছেন, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে আবার তথ্য উপদেষ্টা বলছেন, দেশে যুদ্ধাবস্থা বিরাজ করছে, সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারি আনিসুজ্জামান বলেছেন, নির্বাচিত সরকার না এলে দেশে বৈদেশিক বিনিয়োগ পরিস্থিতির উন্নয়ন ঘটবে না। এ থেকেই বোঝা যায় দেশের হাল কি!

নেতৃবৃন্দ, অবিলম্বে সরকারকে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করার আহ্বান জানান এবং একটি নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবি করেন।

বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশের বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক কমরেড ইকবাল কবির জাহিদ এর সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সিপিবির সাধারণ সম্পাদক কমরেড রুহিন হোসেন প্রিন্স, বাসদের সাধারণ সম্পাদক কমরেড বজলুর রশীদ ফিরোজ, বাসদ (মার্কসবাদী)’র সমন্বয়ক কমরেড মাসুদ রানা, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড মোশরেফা মিশু ও সমাজতান্ত্রিক পার্টির নির্বাহী সভাপতি আব্দুল আলী প্রমূখ। সমাবেশ শেষে নগরীর বিভিন্ন সড়কে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।

 

শেয়ার করুন