ডেস্ক রিপোর্ট

১৩ জানুয়ারি ২০২৫, ২:১৪ অপরাহ্ণ

‘গণঅভ্যুত্থানের মালিকানা নিয়ে দ্বন্দ্ব শুরু হয়ে গেছে’

আপডেট টাইম : জানুয়ারি ১৩, ২০২৫ ২:১৪ অপরাহ্ণ

শেয়ার করুন

অধিকার ডেস্ক : গণঅভ্যুত্থানের মালিকানা নিয়ে দ্বন্দ্ব শুরু হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর।

রোববার (১২ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে সম্মুখ সারির আহত ছাত্র-জনতার উদ্যোগে আয়োজিত জুলাই-আগস্টে গণঅভ্যুত্থানে আহত এবং নিহতদের পরিবারের পুনর্বাসন, রাষ্ট্রীয় সম্মাননা, মাসিক ভাতা ও সুচিকিৎসার দাবিতে মানববন্ধনে তিনি এ কথা বলেন।

নুরুল হক নুর বলেন, ইতোমধ্যে গণঅভ্যুত্থানের মালিকানা নিয়ে দ্বন্দ্ব শুরু হয়ে গেছে। গণঅভ্যুত্থানের মালিক কে, কোন দলের কতজন মারা গেছেন, কোন দলের কি কন্ট্রিবিউশন, সেই প্রতিযোগিতা লেগেছে। যদিও এটা কোনোভাবে কাম্য নয়। কারণ, এটা কোনো রাজনৈতিক দলীয় আন্দোলন ছিল না। এটা ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে একটা গণআন্দোলন ছিল। এ গণঅভ্যুত্থানে সবাই অংশগ্রহণ করেছে। কাজেই এখানে কাউকে জামায়াত, শিবির, বিএনপি, গণঅধিকার হিসেবে চিহ্নিত করা, ইতিহাসের সামনের দিকে এটা ভালো কিছু হবে না।

তিনি বলেন, এখনো কেউ টের পাচ্ছেন না। কেউ দল গঠন নিয়ে ব্যস্ত, আবার কেউ ধান্দা নিয়ে ব্যস্ত। ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য ব্যস্ত হয়ে আছেন। অথচ যে ফ্যাসিস্টের বিরুদ্ধে আমরা লড়াই করলাম, সেই গণহত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে কোনো দলের আওয়াজ নেই। বরং সবাই তাদের রাজনৈতিক স্পেস দিতে চায়। আগামী নির্বাচনে সুযোগ দিতে চায়।

নুরুল হক নুর বলেন, বিএনপির বিকল্প যদি শক্তিশালী কোনো রাজনৈতিক দল গড়ে না ওঠে, আবারও আওয়ামী লীগের আসার সুযোগ থাকবে। আওয়ামী লীগকে কামব্যাক করানোর জন্য ভারত হাজার হাজার কোটি টাকা ইনভেস্ট করবে। কাজেই আওয়ামী লীগের বিচারের দাবিতে সবাইকে সোচ্চার হতে হবে। আওয়ামী লীগকে এ দেশে মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে দেওয়া যাবে না।

তিনি বলেন, দেশকে ভালো রাখতে হলে এ অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থন করতে হবে। আমাদের নিজের ভালোর জন্য এ সরকারকে আরও কিছুদিন রাখতে হবে। আমাদের প্রত্যাশা ছিল সরকার ছোট ছোট কিছু জায়গায় তাৎক্ষণিক কিছু ভূমিকা নেবে। তড়িৎ অ্যাকশন নেবে। সেটি কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি না। আজ সাড়ে পাঁচ মাসে কেন আহতদের চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন জনের দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হবে। সবচেয়ে দুঃখজনক বিষয় হলো, যে তরুণদেরকে নিয়ে মানুষ গর্ব করে, অহংকার করে, আমাদের সেই ছাত্র তরুণরাই জুলাই ফাউন্ডেশনের দায়িত্বে আছেন। কিন্তু তাদের কাছে কেন আমলাতন্ত্রের জটিলতা থাকবে। তাদের অফিসে কেন লালফিতার দৌরাত্ম্য থাকবে।

সরকার এবং জুলাই ফাউন্ডেশনের উদ্দেশে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি বলেন, আগামী ১৫ দিনের মধ্যে নিহতদের নিখুঁত তালিকা এবং আহতদের তালিকা করে; আহতদেরকে কমপক্ষে ৫০ লাখ টাকা করে দিতে হবে। নিহতদের ১ কোটি টাকা করে দিতে হবে। এই সরকারের প্রথম এবং প্রধান কাজ উচিত ছিল আহতদের খুঁজে খুঁজে বের করে সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা। এছাড়াও আহতদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া সরকারের উচিত ছিল।

নুরুল হক নুর বলেন, এখন রাজনৈতিক পরিস্থিতি খুবই অস্থিতিশীল। সরকার এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দল মুখোমুখি হয়ে যাচ্ছে। এ বিভাজন বিভক্তি কোনোভাবেই কাম্য নয়। এ গণঅভ্যুত্থানের সরকার, অন্যান্য সরকারের মতো তিন মাসের জন্য নির্বাচনের সরকার নয়। এ গণঅভ্যুত্থানের সরকার রাষ্ট্র পুনর্গঠনে, রাষ্ট্র সংস্কারে আমাদের সমর্থিত সরকার। কিন্তু দুঃখজনক হলো পাঁচ মাসের তাদের কর্মকাণ্ড আমাদেরকে হতাশ করেছে।

তিনি বলেন, এ সরকার যদি রাষ্ট্র সংস্কার করতে না পারে, নির্বাচিত সরকার সেভাবে আর পারবে না। সরকারের প্রতি আমাদের অনুরোধ থাকবে, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করেন। দূরত্ব কমিয়ে আনুন এবং রাষ্ট্র সংস্কারে ঐকমত্য করুন। প্রয়োজনে জাতীয় সরকার করে রাষ্ট্রের সংস্কার করুন।

শেয়ার করুন