ডেস্ক রিপোর্ট

১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ৪:৩৫ অপরাহ্ণ

অভিবাসন ব্যয় কমাও, নিরাপদ অভিবাসন ও প্রবাস ফেরতদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা কর

আপডেট টাইম : ডিসেম্বর ১৮, ২০২৪ ৪:৩৫ অপরাহ্ণ

শেয়ার করুন

অধিকার ডেস্ক: আন্তর্জাতিক অভিবাসী শ্রমিক দিবস উদযাপনে সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট শ্রমিক সমাবেশে করেছে।

জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সকাল সাড়ে ১০ টায় শ্রমিক ফ্রন্ট সভাপতি, শ্রম সংস্কার কমিশনের অন্যতম সদস্য রাজেকুজ্জামান রতন এর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব বুলবুল এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত শ্রমিক সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সাংগঠনিক সম্পাদক খালেকুজ্জামান লিপন, সহ-সম্পাদক নবকুমার কর্মকার, সহ-সম্পাদক ইমাম হোসেন খোকন, সহ-সম্পাদক জনার্দন দত্ত নান্টু, নির্বাহী সদস্য আবু জাফর প্রমুখ।

সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, বছরে প্রায় ২৪ বিলিয়ন ডলার তথা ২৪০০ কোটি ডলার বৈদেশিক মুদ্রা আসে অভিবাসী শ্রমিকদের পাঠানো রেমিট্যান্সের মাধ্যমে যা দিয়ে আমাদের রপ্তানি অতিরিক্ত আমদানির ব্যয় পরিশোধ করা হয়। অথচ, এই অর্থ প্রেরণ করতে কতজন শ্রমিক বিদেশের মাটিতে রক্ত-ঘাম ঝরাচ্ছে তার সঠিক হিসাব সরকারের কাছে
নেই। বিগত সরকারের প্রবাস মন্ত্রী জানিয়েছিল বিদেশে কর্মরত প্রবাসী শ্রমিকের সংখ্যা ১ কোটি ৫৫ লক্ষ, অন্যদিকে বিবিএস এর জরীপের রিপোর্ট অনুসারে প্রায় ৫১ লক্ষ। প্রবাসী শ্রমিকদের পরিসংখ্যানের এই পার্থক্য বলে দেয় যে যাদের আয়ে দেশের কেন্দ্রীয় ব্যংকের রিজার্ভ স্ফীত হয় তাদের প্রতি রাষ্ট্র কতখানি দায়িত্বহীন। প্রতিদিন ১১
জন প্রবাসী শ্রমিকের লাশ ফিরে আসে, অসংখ্য নারী শ্রমিক নির্যাতিত হয়ে ফিরে আসে ক্ষতিগ্রস্ত এই শ্রমিকদের পরিবারগুলির পুনর্বাসনে রাষ্ট্রের যথেষ্ট উদ্যোগ পরিলক্ষিত হয়নি। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশে অভিবাসন ব্যয় সর্বোচ্চ, প্রতি শ্রমিক কে ৫ থেকে ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ব্যয় বহন করতে হয়। এই ব্যয় বহন করতে অভিবাসী শ্রমিকরা তাদের ভিটামাটি বিক্রি করতে বাধ্য হয়, অনেক সময় প্রতারণার শীকার হয়ে নিঃস্ব হয়ে যায়, নারীরা পাচার হয়ে যায়।
নেতৃবৃন্দ বলেন, রিক্রুটিং এজেন্সির নামে মধ্যসত্ত্বভোগী দালালরা জালীয়াতি, প্রতারণা করেও শাস্তি পায়না, যাওয়া-আসার পথে বিমান বন্দরে হয়রাণী প্রবাসী শ্রমিকদের অমর্যদার ঘৃণ্যরুপ। প্রতারণা-নিপিড়ণ আর হয়রাণীর এই চক্র ভেদের আকাঙ্খা থেকে প্রবাসী শ্রমিকরা জুলাই আন্দোলন কে তরান্বিত করতে রেমিটেন্স কে হাতিয়ার বানিয়েছিল। বাংলাদেশের প্রকৃত উন্নয়ন করতে হলে অবকাঠামো উন্নয়ন ভিত্তিক উন্নয়ন পরিকল্পনার পরিবর্তে মানবসম্পদের উন্নয়ন
ভিত্তিক পরিকল্পনা করতে হবে। দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলা এবং তাদের রাষ্ট্রীয় যোগাযোগ ও অর্থায়নে প্রবাসে কাজে পাঠানোর মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের ক্ষেত্র কে প্রসারিত করতে হবে। প্রবাসির পাঠানো অর্থ এবং ফেরত আসা প্রবাসী কর্মির দক্ষতাকে সর্বোচ্চ ফলাফল পাওয়ার মত কাজে লাগানোর পরিকল্পনা করতে হবে।

নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, প্রবাসে কর্মী প্রেরণের জন্য দক্ষতার উন্নয়ন ও প্রেরণ ব্যয় বাবদ ঋণ হতে পারে ব্যাংক ঋণ বিতরণের একটি বড় ক্ষেত্র। যা কর্মীর প্রবাসে চাকরির নিরাপত্তা যেমন নিশ্চিত করবে তেমনি ব্যংকের বিনিয়োগ নিরাপত্তা বাড়াবে, খেলাপি ঋণের মাত্রা কমবে। শ্রম আইনে প্রবাসী ও প্রবাস ফেরত শ্রমিকদের ট্রেড ইউনিয়ন গঠনের অধিকার দিতে হবে। ট্রেড ইউনিয়নসমূহের আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পারস্পারিক যোগাযোগ প্রবাসি শ্রমিকদের কর্মক্ষেত্রের
অধিকার কিছুমাত্রায় নিশ্চিত করবে।

নেতৃবৃন্দ প্রবাসী শ্রমিকদের অবদানের যথাযত স্বীকৃতি, শুন্য অভিবাসন ব্যয়, ফেরত শ্রমিকদের পুণর্বাসন এবং
ক্ষতিগ্রস্তদের যথাযথ ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করার আহবান জানান।

শেয়ার করুন