ডেস্ক রিপোর্ট
১৮ নভেম্বর ২০২৪, ৭:৩০ অপরাহ্ণ
অধিকার ডেস্ক: মুক্তিযুদ্ধ ও গণ-অভ্যুত্থানের চেতনায় শোষণ বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠায় সমাজতন্ত্রের লড়াই বেগবান করার আহ্বান রেখে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ এর ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী এবং সোভিয়েত সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের ১০৭তম বার্ষিকীতে বাসদ মৌলভীবাজার জেলা শাখার ‘জনসভা ও লাল পতাকা মিছিল’ মৌলভীবাজার প্রেসক্লাবের সামনে ১৭ নভেম্বর ২০২৪ রবিবার বেলা ২:৩০ ঘটিকার সময় শুরু হয়ে বিকাল ৫টা পর্যন্ত চলতে থাকে।
বাসদ মৌলভীবাজার জেলা সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট মঈনুর রহমান মগনুর সভাপতিত্বে এবং জেলা সদস্য অ্যাডভোকেট আবুল হাসানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত বাসদ মৌলভীবাজার জেলা শাখার জনসভায় প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক কমরেড বজলুর রশিদ ফিরোজ।
বক্তব্য রাখেন সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক কমরেড আহসান হাবীব বুলবুল, বাংলাদেশ চা শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি বিপ্লব মাদ্রাজি পাশী, সহসভাপতি কাজল রায়, বাসদ জেলা সদস্য দীপংকর ঘোষ, সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরামের কেন্দ্রীয় সদস্য বিপাশা দাশ গুপ্ত, আদিবাসী ফোরামের সদস্য ফ্লোরা বাবলী তালাং, বাসদ জেলা সদস্য রেহনোমা রুবাইয়াৎ, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট জেলা সভাপতি বিশ্বজিৎ নন্দী ও সাধারণ সম্পাদক রাজিব সূত্রধর। জনসভার সমাবেশ পরবর্তীতে শহরে সুসজ্জিত লাল পতাকা মিছিলের মধ্য কর্মসূচির সমাপ্তি হয়।
জনসভায় প্রধান বক্তার বক্তব্যে বাসদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ ফিরোজ বলেন, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে এদেশের জনগণ পাকিস্তানী শাসক-শোষকদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রামের মধ্য দিয়ে পরাস্ত করে। মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্খা ছিলো বৈষম্যহীন একটা সাম্যের সমাজ নির্মাণ। কিন্তু দেশ স্বাধীনের পরই শেখ মুজিবুরের মাধ্যমেই বৈষম্যমূলক পুঁজিবাদী রাষ্ট্র পরিচালনার মাধ্যমে জনতার আকাঙ্খাকে পদদলিত করা হলো। মুক্তিযুদ্ধের ৫৩ বছরেও জনগণ তার পূর্ণ স্বাধীনতা পায় নাই। সকল শাসকই জনগণের সাথে প্রতারণা করে জনগণের সকল অধিকার হরণ করে রাষ্ট্র পরিচালনা করেছে। লুটপাটের এক মহাযজ্ঞ পরিচালিত হয়েছে শাসক গোষ্ঠীরা। সর্বশেষ স্বৈরাচার হাসিনা দেশে লুটপাটের অভয়ারণ্য তৈরি করে দেশকে লুটের রাজ্যে পরিণত করেছিলো। পতিত স্বৈরাচারের সকল অপকর্মের বিচার নিশ্চিত করতে হবে, এক্ষেত্রে কোনো ছাড় দেয়া যাবে না। একই সাথে শুধু গদির পরিবর্তন করলেই দেশে সংস্কার আসবে না, দরকার ব্যবস্থার ও নীতির পরিবর্তন। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে এখন শ্রমিক শোষণকারীদের বসানো হচ্ছে। তার মানে এরাও বৈষম্য লালন করে বাইরে বৈষম্যবিরোধী ভাব দেখাচ্ছে।
জনগণের প্রতি আহ্বান রইল মুক্তিযুদ্ধ ও গণ-অভ্যুত্থানের চেতনায় একটা বৈষম্যহীন রাষ্ট্র গড়ে তুলতে হবে। বৈষম্য বিলুপের কথা বলে বলে ৫৩ বছর ধরে সকল শাসকগোষ্ঠী জনগণের সাথে প্রহসন করে আসছে। তাই দরকার মুক্তিযুদ্ধ ও গণ-অভ্যুত্থানের চেতনার একটা বৈষম্যহীন সমাজ ও রাষ্ট্র গড়ে তুলা। বৈষম্যহীন সমাজ মানে সাম্যের সমাজ। সেই মানবিক মর্যাদার সমাজ ১৯১৭ সালের ৭ নভেম্বর বিপ্লবের মধ্য দিয়ে সোভিয়েত রাশিয়াতে সমাজতান্ত্রিক সমাজ গড়ে উঠে। এর কয়েকবছর পরই রাশিয়াতে ঘোষণা করা হয় সেখানে কোন ভিক্ষুক নাই, বেকার নাই, পতিতাবৃত্তি নাই। ফলে সারাবিশ্বে সমাজতন্ত্রের আকাঙ্ক্ষার বিস্তার লাভ করতে থাকে। আমরা চাই পুঁজিবাদের বিরুদ্ধে একটা শোষণ বৈষম্যহীন সমাজতান্ত্রিক সমাজ। একটা ন্যায় ও ইনসাফের সমাজ। মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্খার একটা সাম্যের সমাজ।