ডেস্ক রিপোর্ট

২৫ আগস্ট ২০২৪, ৮:৩১ অপরাহ্ণ

নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবসে মাগুরায় বিজ্ঞান আন্দোলন মঞ্চে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন

আপডেট টাইম : আগস্ট ২৫, ২০২৪ ৮:৩১ অপরাহ্ণ

শেয়ার করুন

অধিকার ডেস্ক: ২৪ আগস্ট নারী নির্যাতন প্রতিরোধ (ইয়াসমিন হত্যা) দিবস উপলক্ষে ঘরে-বাইরে সর্বত্র নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, ধর্ষকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং বন্যা দুর্গত এলাকায় পর্যাপ্ত ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রম নিশ্চিত করার দাবিতে বিজ্ঞান আন্দোলন মঞ্চ মাগুরা জেলা শাখার উদ্যোগে আজ ২৪ আগস্ট ২০২৪ শনিবার বিকাল ৫.৩০টায় চৌরঙ্গী মোড়ে মাগুরা জেলা প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করা হয়।

বিজ্ঞান আন্দোলন মঞ্চ মাগুরা জেলা শাখার সংগঠক নবীনা আখতারের সভাপতিত্বে এবং প্রিয়ন্তী ইসলামের পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিজ্ঞান আন্দোলন মঞ্চের কেন্দ্রীয় সদস্য প্রকৌশলী শম্পা বসু ও সংগঠনের মাগুরা জেলা সংগঠক ভবতোষ বিশ্বাস জয়।

বক্তাগণ বলেন, “১৯৯৫ সালের ২৩ আগস্ট ইয়াসমিন ঢাকা থেকে বাড়ি ফেরার পথে রাতে পুলিশ কর্তৃক ধর্ষিত ও হত্যার শিকার হয়েছিল। পরেরদিন দিনাজপুরে প্রতিবাদ মিছিলে পুলিশ গুলি চালিয়ে হত্যা করে ৭ জন সংগ্রামী মানুষকে। এরপর আন্দোলন সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। সরকার ও পুলিশ প্রশাসনের কোন অপচেষ্টাই আন্দোলন নস্যাৎ করতে পারেনি। আন্দোলনের প্রেক্ষিতে ১৯৯৭ সালে বিচারে ধর্ষক ও খুনিদের ফাঁসির রায় এবং ২০০৪ সালে তা কার্যকর হয়। ইয়াসমিন ধর্ষণ ও হত্যার বিচারের দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলন ও বিচারের রায় মানুষের মনে এক প্রতিবাদী চেতনার জন্ম দেয়। এই আন্দোলন এবং হত্যার স্মরণে প্রতিবছর ২৪ আগস্ট পালিত হয় নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস।”

বক্তাগণ আরও বলেন, “ইয়াসমিন হত্যার পর কেটে গেছে ২৯ বছর। বিগত এই সময়ে দেশে একদিকে নারী নির্যাতনের সংখ্যা, ধরন ও তীব্রতা বেড়েছে আর অন্যদিকে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার সরকারি ও প্রশাসনিক উদ্যোগ কমে গেছে। দেশের সর্বত্র নারী-শিশু ধর্ষণ, খুনের ঘটনা ঘটে চলেছে, সাথে সাথে সমানতালে চলেছে বিচারহীনতার নজির। বিচারহীনতা ও ক্ষমতাকেন্দ্রিক রাজনৈতিক বলয় অপরাধ প্রবণতাকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। ধর্ষণের মামলায় ৯৭ শতাংশেরই কোন সাজা হয় নাই। ফলে অপরাধী আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। অর্থ ও ক্ষমতার বলয়ে থাকলে খুন-ধর্ষণ যেকোন অপরাধ করে পার পেয়ে যায়– এই হচ্ছে বাস্তবতা! মুনিয়া হত্যা, তনু হত্যার বিচার না হওয়া সেটাই প্রমাণ করে।”

বক্তাগণ আরও বলেন, “ভয়াবহ বন্যায় দেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চলের মানুষ চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।” উপদ্রুত অঞ্চল ঘোষণা করে জরুরি অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে পানিবন্দি মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে আনা, পর্যাপ্ত ত্রাণ সহায়তা প্রদান করে মানুষকে বাঁচানো ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানান বক্তাগণ। পাশাপাশি ভারত সরকারের পানি আগ্রাসন নীতির মাধ্যমে শুষ্ক মৌসুমে শুকিয়ে মারা ও বর্ষার সময় বন্যার পানিতে ডুবানোর বিরুদ্ধেও ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং পূর্ব সতর্কতা ছাড়া বাঁধের গেইট খুলে দেওয়ার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। একই সাথে বাংলাদেশ সরকার, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়, নদী কমিশনের সদস্যদের যথাসময়ে পদক্ষেপ না নেয়া এবং দায়িত্বহীনতায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। বক্তাগণ দেশের অভ্যন্তরে নদী খাল দখল করে যারা পানির স্বাভাবিক প্রবাহকে বন্ধ করেছে তাদের বিরুদ্ধেও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।

সমাবেশ থেকে ঘরে-বাইরে সর্বত্র নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, ধর্ষকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং বন্যা দুর্গত এলাকায় পর্যাপ্ত ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রম নিশ্চিত করার দাবি জানান হয় এবং কলকাতায় আর জে কর হাসপাতালে ডাক্তার মৌমিতা ধর্ষণ-হত্যার বিচার দাবির আন্দোলনে সংহতি জানান হয়।

 

শেয়ার করুন