ডেস্ক রিপোর্ট

১৫ ডিসেম্বর ২০২৩, ১১:৫৮ অপরাহ্ণ

স্বাধীনতার মূল চেতনা থেকে আ. লীগ সরকার দূরে সরে গেছে : জামায়াতে ইসলামী

আপডেট টাইম : ডিসেম্বর ১৫, ২০২৩ ১১:৫৮ অপরাহ্ণ

শেয়ার করুন

অধিকার ডেস্ক: স্বাধীনতার মূল যে চেতনা ছিল বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার তা থেকে অনেক দূরে সরে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর ও সাবেক সংসদ সদস্য ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের।

তিনি বলেন, পাকিস্তান আমলে দেশের জনগণ যে সকল অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়ে স্বাধীনতা সংগ্রাম করেছিল আজ আওয়ামী সরকারের আমলেও জনগণ সেই অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

শুক্রবার (১৫ ডিসেম্বর) মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াত কর্তৃক আয়োজিত ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, পাকিস্তান হানাদার বাহিনী স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় যে কাজ করেছিল বর্তমান সরকার জনগণের বিরুদ্ধে তাই করেছে। এদেশের মানুষের স্বাধীনতাকে হরণ করে তারা স্বাধীনতা বিরোধী শক্তিতে পরিণত হয়েছে।

তিনি বলেন, স্বাধীনতার চেতনাকে ভূলুণ্ঠিত করে শিক্ষা, নৈতিকতা, গণতন্ত্র, ভোটের অধিকার, নির্বাচন ব্যবস্থা, বাক-স্বাধীনতা, সুশাসন সব ধ্বংস করে দিয়েছে। দমন নিপীড়নে বিরোধী দলের নেতাকর্মীরা আজ ঘর ছাড়া। দেশের জনগণের ৮০ শতাংশ ভোটের প্রতিনিধিত্ব করে যে সকল দল তাদেরকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বাইরে রেখে একতরফা নির্বাচন করা জাতির সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা ও প্রহসনের শামিল। দেশের সত্যিকার বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো শেখ হাসিনার নিয়ন্ত্রণে কোনো নির্বাচনে যাবে না বলে আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে।

আদালতকে অপব্যবহার করে ফরমায়েশি রায় দিয়ে, বিরোধী মতের উপর জুলুম-নির্যাতন করে সরকার যদি মনে করে ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের মত নির্বাচনের মাধ্যমে নিজেদের শাসন চালিয়ে যাবে তবে, তবে তারা বোকার স্বর্গে বাস করছে। জনগণ এটা কোনোভাবেই বাস্তবায়ন করতে দেবে না। আওয়ামী লীগ সরকার আর ক্ষমতার টিকে থাকতে পারবে না।

তিনি আরও বলেন, জনগণের কাছে এটা দিবালোকের মতো পরিষ্কার যে, ২০১৪ সাল ও ২০১৮ সালের ভোটে যারা নির্বাচিত হয়েছে, তারা ক্ষমতাকে কুক্ষিগত রাখতে আর কোনো সময়েই সুষ্ঠু নির্বাচন দেবে না। সুতরাং আগামী ৭ জানুয়ারির প্রহসনের নির্বাচন প্রতিহত করা পুরো দেশবাসীর নৈতিক দায়িত্ব।

কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক সংসদ সদস্য এ এইচ এম হামিদুর রহমান আজাদ বলেন, সরকারের কাছে জনগণ নিরাপদ নয়। মানবতা, দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব আজ চরম হুমকির মুখে। আওয়ামী সরকার যখনই এ দেশের ক্ষমতায় আসে তখনই বাংলাদেশ অর্থনৈতিক ভেঙে পড়ে, চুরি-ব্যাংক লুটসহ সকল অন্যায় বেড়ে যায়, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে জনগণ দিশেহারা হয়ে পড়ে, সীমান্তে হত্যা বেড়ে যায়, দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় চরম বিপর্যয় ঘটে। কালচারাল আগ্রাসন পুরো জাতিকে গ্রাস করে নেয়। আমাদের পূর্বপুরুষদের চেষ্টায় এদেশ ব্রিটিশ কলোনি থেকে মুক্ত হয়েছে আর আওয়ামী লীগ সরকার এদেশকে আবারো আরেকটি দেশের কলোনি বানিয়েছে। দেশকে রক্ষার জন্য, মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আরেকটি স্বাধীনতার সংগ্রাম অনিবার্য হয়ে পড়েছে।

কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম বলেন, আজকে ধনী আরও বিত্তশালী হচ্ছে আর গরিব আরও অসহায় হয়ে পড়ছে। আওয়ামী লীগের কারো কারো সম্পদ সত্তর, আশি, একশতগুণ পর্যন্ত বেড়ে যাচ্ছে। অপরদিকে দেশের সাধারণ মানুষ দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে দুবেলা দুমুঠো খাবার জোগাতে হিমশিম খাচ্ছে।

সভাপতির বক্তব্যে কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমীর মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, আজকে স্বাধীনতার ৫২ বছর পরও রাজনৈতিক শোষণ থেকে, অর্থনৈতিক শোষণ থেকে আমরা মুক্তি পাইনি। নির্বাচন ব্যবস্থা ও গণতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিক রূপ লাভ করেনি।

তিনি বলেন, মিথ্যা মামলায় বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের সাজা দেওয়া হচ্ছে। জনগণ এই অবস্থা থেকে মুক্তি চায়। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে এই সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি মুহা. দেলাওয়ার হোসেনের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের নায়েবে আমীর আবদুস সবুর ফকির ও অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি ড. আবদুল মান্নান।

শেয়ার করুন