ডেস্ক রিপোর্ট

১০ ডিসেম্বর ২০২৩, ১০:০৬ অপরাহ্ণ

দেশে গণতন্ত্র-আইনের শাসন না থাকলে মানবাধিকার থাকে না: নুর

আপডেট টাইম : ডিসেম্বর ১০, ২০২৩ ১০:০৬ অপরাহ্ণ

শেয়ার করুন

অধিকার ডেস্ক: গুম-খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যা, মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলায় ভিন্নমতের মানুষকে গণগ্রেপ্তারের প্রতিবাদে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে র‍্যালি ও সমাবেশ করেছে গণঅধিকার পরিষদ।

রোববার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে ১টা পর্যন্ত রাজধানীর বিজয়নগর পানির ট্যাংকির সামনে সমাবেশ শেষে মিছিল বের করে পল্টন মোড়, প্রেস ক্লাব, হাইকোর্ট মোড়ের কদম ফোয়ারা, দৈনিক বাংলা, ফকিরাপুল, বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের সামনের সড়ক ও নাইটিংগেল মোড় ঘুরে পানির ট্যাংকির মোড়ে এসে শেষ হয়।

মিছিল পূর্ব সমাবেশে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেন, ‘‘দেশে গণতন্ত্র-আইনের শাসন না থাকলে মানবাধিকার থাকে না। দেশে মানবাধিকার নাই, তাই মানবাধিকার দিবসে আজকে আমাদেরকে রাস্তায় নামতে হয়েছে। ১৯৭১ সালে আমরা একটা স্বাধীন ভূখণ্ড পেলেও স্বাধীনতার মূল উদ্দেশ্য- রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক মুক্তি অর্জন করতে পারিনি। এ দেশের নির্বাচনে কারা সরকার গঠন করবে, কারা বিরোধী দল হবে, কারা এমপি হবে সেটা ঠিক করে দিচ্ছে পাশের দেশ। আওয়ামী লীগ ভারতীয় এজেন্ডা বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশটাকে ধ্বংস করছে। সরকার দেশের নিজস্ব কাঁচামালের পাট, চিনি, চামড়া শিল্প ধ্বংস করেছে। এখন ভারতীয় ষড়যন্ত্রে রপ্তানি খাতের ‘সোনার ডিম পাড়া হাঁস’ গার্মেন্টসকেও ধ্বংসের দিকে নিচ্ছে। বিভিন্ন গণমাধ্যমে নিউজ হয়েছে গার্মেন্টস শিল্পের ওপর নিষেধাজ্ঞা আসছে পারে।’’

তিনি বলেন, ‘পুলিশ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিচ্ছে, মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করে হয়রানি করছে, মোটা অংকের টাকা নিচ্ছে। গতরাতে আমাদের নারায়ণগঞ্জের এক নেতাকে না পেয়ে তার ভাইকে গ্রেপ্তার করেছিল। যাকে আটক করে সে একজন অসুস্থ মানুষ, আজকে তার অপারেশন। মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে তারপর ছাড়ছে। এর আগে হাতিরঝিল থানায় আমাদের গণনেতা উজ্জ্বলকে আটক করে, আমি ফোন দিলে ওসি বলে- ভাই আপনারা মিছিল-মিটিং করেন, ছবি তুলে, ভিডিও করে বিভিন্ন জায়গায় পাঠান। আমাদেরও কিছু করে উপরে দেখাতে হয়। এভাবে প্রত্যেক থানায় গ্রেপ্তারের টার্গেট দেওয়া হয়, মামলার টার্গেট দেওয়া হয়। পুলিশ মৃত মানুষকে দৌড়াতে দেখে, মৃত মানুষকে মামলার আসামি করে। পুলিশ যে এভাবে মিথ্যা মামলা দিচ্ছে, হয়রানি করছে সেটা পরিষ্কার। বিরোধী দল দমনে পুলিশ এখন রক্ষীবাহিনীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠায় পুলিশ আওয়ামী সরকারের গোলামি করতে গিয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে। এভাবে চলতে থাকলে র‍্যাবের মতো পুলিশের ওপরও নিষেধাজ্ঞা আসবে।’

নুর বলেন, ‘এই আন্দোলন শুধু বিএনপি, গণঅধিকার পরিষদের আন্দোলন নয়, এটা গণমানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন। সকলকে এই আন্দোলনে শরীক হতে হবে। জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আগামী ৭ জানুয়ারির প্রহসনের নির্বাচনকে প্রতিহত করতে হবে। প্রয়োজনে প্রতিটি এলাকায় গণপ্রতিরোধ কমিটি গঠন করতে হবে।’

গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খাঁন বলেন, ‘আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য জনগণ রাজপথে নেমেছে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেছিলেন, আজকে বিএনপি-জামায়াত নাশকতা করবে। কিন্তু কোথাও নাশকতা হয়নি। বরং সকালে জামায়াতের মানববন্ধনে লাঠিচার্জ ও গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সর্বত্র সরকার জামায়াত জুজু সৃষ্টি করেছে। অথচ ১৯৯৬ সালে জামায়াতকে সাথে নিয়েই আওয়ামী লীগ আন্দোলন করেছিল।’

সমাবেশে সঞ্চালনা করেন গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদের সদস্য আবু হানিফ। সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন উচ্চতর পরিষদের সদস্য শাকিল উজ্জামান, ফাতিমা তাসনিম, সরকার নুরে এরশাদ সিদ্দিকী, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান আল মামুন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান, মশিউর রহমান, ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন, মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট খালিদ হাসান, আইন সম্পাদক অ্যাডভোকেট শওকত, যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি মনজুর মোর্শেদ মামুন, ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম আদীব, পেশাজীবী অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন, শ্রমিক অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানা সম্পদ, গণঅধিকার পরিষদ মহানগর দক্ষিণের সভাপতি নাজিম উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক নুরুল করিম শাকিল, উত্তরের সভাপতি মিজানুর রহমান প্রমুখ।

শেয়ার করুন