ডেস্ক রিপোর্ট
৮ নভেম্বর ২০২৩, ১২:১১ পূর্বাহ্ণ
অধিকার ডেস্ক: গার্মেন্টস শ্রমিকদের ১২৫০০ টাকার নিম্নতম মজুরি প্রত্যাখান করে এবং ২৩০০০ হাজার টাকা মজুরি ঘোষণার দাবিতে আজ ০৭ নভেম্বর ২০২৩, বিকাল ৪টায়, জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট।
গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্টের সহ-সভাপতি খালেকুজ্জামান লিপনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক সেলিম মাহমুদ, কোষাধক্ষ্য সাইফুল ইসলাম শরিফ, রুহুল আমিন সোহাগ, আনোয়ার খান, নুরহোসেন সর্দার প্রমুখ।
বিক্ষোভ সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন আমরাজানি মজুরি বোর্ডের কাঠামোয় একজন জেলা জজ পদমর্যদার চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে সংশ্লিষ্ট শিল্প খাতের একজন করে মালিক ও শ্রমিক প্রতিনিধি ছাড়াও মালিক ও শ্রমিক পক্ষের একজন করে স্থায়ী প্রতিনিধি এবং একজন নিরপেক্ষ সদস্য থাকে। আমরা আরো জানতাম সংশ্লিষ্ট শিল্পের মালিক ও শ্রমিক প্রতিনিধিদের উত্থাপিত প্রস্তাব নিয়ে দরকষাকষির মাধ্যমে শ্রমিকদের মজুরি নির্ধারীত হয়। কিন্তু গার্মেন্টস শ্রমিকদের মজুরি নির্ধারণে মজুরি বোর্ড কোনো দরকষাকষির সংস্থা নয় বরং গার্মেন্টস মালিকদের নির্দেশ রাস্ট্রীয় সীল দিয়ে অনুমোদনের প্রতিষ্ঠান হিসাবে নিজেদের পরিচয় তুলে ধরেছে।
নেতৃবৃন্দ, মজুরি বোর্ডের ১২৫০০ টাকার খসড়া মজুরি প্রস্তাব প্রত্যাখান করে বলেন, এই মজুরি বোর্ড নির্ধারীত ৬ মাস সময়ের মধ্যে মালিক পক্ষ মজুরির কোনো প্রস্তাব উত্থাপন না করেই কাটিয়ে দিলেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো শক্ত ব্যবস্থা নেইনি। সময়ক্ষেপন করে রাজনৈতিক উত্তেজনার সময়ে ১০৪০০ টাকার তামাশার মজুরি প্রস্তাব করে শ্রমিকদেরকে উত্তেজিত করে রাস্তায় নামিয়ে তাদের বুকে গুলি চালিয়ে রক্ত ঝরিয়েছে, শ্রমিক হত্যা করেছে। শ্রমিকদের আন্দোলনের চাপে মালিকরা মজুরির প্রস্তাব বৃদ্ধি করবে বলে ঘোষণা দেওয়ার সময় বলেছিল তারা আরো অনেকদুর পর্যন্ত পর্যন্ত যাবে। আমরা সংবাদ মাধ্যমে দেখেছি মজুরি বোর্ডের আজকের সভায় মালিক পক্ষ মাত্র ১২৫০০ টাকার মজুরি প্রস্তাব করেছিল। মালিক পক্ষের এই প্রস্তাবকেই শ্রম মন্ত্রনালয় থেকে মজুরি বোর্ডের চুড়ান্ত প্রস্তাব হিসাবে ঘোষণা করা হয়। এখান থেকে প্রমাণ হয় মজুরি বোর্ডের যারা সদস্য ছিলেন তারা গার্মেন্টস শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষায় কোনো ভুমিকা পালন না করে গার্মেন্টস মালিকদের রাবার স্ট্যাম্প হিসাবে কাজ করেছেন।
নেতৃবৃন্দ বলেন, আমরা আগেই বলেছিলাম গার্মেন্টস মালিকরা রাজনৈতিক অস্থিরতার সুযোগ নিয়ে শ্রমিক আন্দোলন কে দমন করে আধুনিক দাস ব্যবস্থা চালু রাখতে চায়। গার্মেন্টস শ্রমিকদের জন্য ঘোষিত নতুন মজুরি আমাদের সেই আশংকাকেই সত্য প্রমাণিত করেছে। ২০১৮ সালের ঘোষিত মজুরি ছিল তখনকার ৯৬ ডলারের সমান আর আজকের
ঘোষিত মজুরি ১১২.৬ ডলারের সমান। অর্থাৎ গার্মেন্টস মালিকরা বা মজুরি বোর্ড ৫০শতাংশের বেশি মজুরি বৃদ্ধির কথা বললেও প্রকৃতপক্ষে মজুরি বাড়ানো হয়েছে মাত্র ১৫ শতাংশ। অথচ ২০১৮ সালের তুলণায় মাথাপিছু আয় বেড়েছে প্রায় ৪৫ শতাংশ আর আগামী পাঁচ বছরের মুল্যস্ফীতির চাপে শ্রমিকদের প্রকৃত মজুরি প্রতিমুহুর্তে কমতে থাকবে অর্থাৎ সামাজিক বৈষম্য কমানো নয় আরো বাড়ানোর ক্ষেত্র তৈরি করা হলো। ফলে স্থিতিশিল শিল্প সম্পর্ক, এসডিজির লক্ষ্য অর্জন কিংবা দেশে শিল্পের বিকাশের জন্য শ্রম শক্তির স্বভাবিক সরবরাহ নিশ্চিত করতে অবশ্য ঘোষিত মজুরি প্রত্যাহার করে ২৩ হাজর টাকা ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা করতে হবে। অযৌক্তিক এই মজুরি প্রস্তাবনার জন্য উদ্ভুত যেকোনো অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতির দায় মালিকদের বহন করতে হবে বলে নেতৃবৃন্দ হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করেন।
নেতৃবৃন্দ, ঘোষিত মজুরি প্রত্যাখান, দমন নিপিড়ন বন্ধ এবং ২৩ হাজার টাকা ন্যূনতম মজুরি ঘোষণার দাবিতে ১০ নভেম্বর বিক্ষোভ কর্মসূচী পালনের ঘোষণা দেন।