ডেস্ক রিপোর্ট
২৪ আগস্ট ২০২৩, ১২:০৪ পূর্বাহ্ণ
অধিকার ডেস্ক: জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ ছিল যুদ্ধে যাওয়ার মূল নির্দেশ ও অনুপ্রেরণা বলে জানিয়েছেন ঢাকা-৬ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী ফিরোজ রশিদ। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু যখন ৭ মার্চের ভাষণ দিয়েছেন তখন আমরা নিশ্চিত হয়ে গেছি যে, ঘরে আর থাকার সময় নেই, যুদ্ধে যেতে হবে।
বুধবার (২৩ আগস্ট) ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ আয়োজিত ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, বঙ্গবন্ধুর প্রতি দেশের মানুষের ভালোবাসা ও বিশ্বাস ছিল। বঙ্গবন্ধু তা উপলব্ধি করেই পাকিস্তানের বন্দিদশা থেকে বাঙালি জাতিকে মুক্ত করতে জীবন বিলিয়ে দিয়েছেন। বঙ্গবন্ধু যখন ৭ মার্চের ভাষণ দেন তখনি আমরা বুঝতে পেরেছি আমাদের মুক্তিযুদ্ধের জন্য ডাক এসে গেছে। তখন আমরা ঘরে না থেকে মুক্তিযুদ্ধে চলে গেছি। কিন্তু আমাদের কাছে অস্ত্র ছিল না। তখন আমরা খোঁজ নিয়েছি কার ঘরে লাইসেন্স করা অস্ত্র আছে, তার কাছে অনুরোধ করে বুঝিয়ে-শুনিয়ে অস্ত্র নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছি।
তিনি বলেন, ভারতের গোয়েন্দা বাহিনী থেকে একজন এসে যখন বঙ্গবন্ধুকে বলল আপনাকে হত্যা করার জন্য ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। তখন বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন বাংলাদেশের বাঙালিরা আমাকে মারবে কেন, এটা বলে তাদের কথায় তিনি পাত্তা দেননি।
ঢাকা- ৬ আসনের এমপি বলেন, বঙ্গবন্ধু দেশের মানুষকে এমন ভালোবাসতেন যে, তিনি একজন প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরও নিজ বাসায় তিনি ওই ধরনের কোনো নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখেননি।
জাসদের কঠোর সমালোচনা করে জাতীয় পার্টির এই নেতা বলেন, বাংলাদেশে যেদিন জাসদ হয়েছে, তার পরের দিন যুবলীগ প্রতিষ্ঠা করছি আমরা। এ জাসদ মুক্তিযুদ্ধ করছে। তারা আমাদের সঙ্গে যুদ্ধে করে এসে অস্ত্র ভাগ করে আলাদা হয়ে গেল। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পরে জাসদ ট্যাংকের ওপর বসে উল্লাস করছে, এটা দুঃখের বিষয়।
আমেরিকার সমালোচনা করে তিনি বলেন, স্বাধীনতার সময়ও বিদেশি ষড়যন্ত্র ছিল। বাংলাদেশ স্বাধীন দেশ, এদেশের ভালো-মন্দ দেশের জনগণ ঠিক করবে। এদেশ আমাদের, দেশের ভালো-মন্দ আমরা ঠিক করব। কীভাবে নির্বাচন হবে তা আমরা ঠিক করব। কিন্তু এখনো তারা (বিদেশি) ব্যস্ত হয়ে পড়ে, সারাদিন দৌড়াদৌড়ি করে কী করবে। এই আমেরিকাই মুক্তিযুদ্ধের সময় সপ্তম নৌবহর পাঠিয়েছিল।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন বলেন, বঙ্গবন্ধুর হত্যার পরে প্রতিশোধ নিতে মূল অভিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারিনি। আমরা কিছু ছাত্রলীগ নেতারা মিছিল নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাদের বাসায় গেলেও তারা কোনো নির্দেশনা দিতে পারেননি।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরে তার কন্যাদের বাংলাদেশে আসতে বাধা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সাহসী পিতার সাহসী কন্যা শেখ হাসিনা সকল বাঁধা অপেক্ষা করে মাতৃভূমিতে ফিরে হত্যাকারীদের বিচার করেছেন। বাবার মতোই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের মানুষকে নিয়ে ভাবেন বলেই জীবন বাজি রেখে মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে কাজ করে যাচ্ছেন। শেখ হাসিনা বাংলাদেশের মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি দেওয়ার জন্য ২১ বছর লড়াই করেছেন। বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশের মানুষের পার্লস বুঝে কাজ করতেন। শেখ হাসিনা তারই আদর্শকে ধারণ করে মানুষের পার্লস বুঝে কাজ করে যাচ্ছেন।
ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মো.সামসুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন প্রতিষ্ঠানটির গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান বীরমুক্তিযোদ্ধা কাজী ফিরোজ শরীদ। প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন।
এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) সভাপতি ডা. মো. জামাল উদ্দিন চৌধুরী ও জানাতুল বাকী। সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন ন্যাশনাল মেডিকেল ইনস্টিটিউটের পরিচালক ব্রি. জে. অব. অধ্যাপক ডা. ইফফতা আরা, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি হেদায়েতুল ইসলাম স্বপন, ন্যাশনাল মেডিকেল ইনস্টিটিউটের গভর্নিং বডির সদস্য ও মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক গাজী সারোয়ার হোসেন বাবুসহ আরও অনেকে।