ডেস্ক রিপোর্ট
২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ৪:৩৬ অপরাহ্ণ
অধিকার ডেস্ক: মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার ডা. খন্দকার গোলাম ছাব্বির আহমাদসহ পাঁচ আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।
আসামিরা হলেন, মো. হরমুজ আলী (৭৩), মো. আব্দুস সাত্তার (৬১) খন্দকার গোলাম রব্বানী (৬৩), ডা. খন্দকার গোলাম ছাব্বির আহমাদ (৬৯) ও মো. ফখরুজ্জামান (৬১)। ডা. খন্দকার গোলাম ছাব্বির আহমাদ (৬৯) ও মো. ফখরুজ্জামান (৬১) পলাতক আছেন।
সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন। বেঞ্চের অপর দুই সদস্য হলেন- বিচারপতি আবু আহমেদ জমাদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলম।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে উপস্থিত ছিলেন প্রসিকিউটর সুলতান মাহমুদ সিমন, রেজিয়া সুলতানা চমন ও ব্যারিস্টার তাপস কান্তি বল। আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী আব্দুস সোবহান তরফদার, মিজানুল ইসলাম ও গাজী এম এইচ তামিম।
উপস্থিত ছিলেন প্রসিকিউটর সৈয়দ হায়দার আলী, প্রসিকিউটর ঋষিকেশ সাহা, প্রসিকিউটর মো. মুখলেসুর রহমান বাদল, প্রসিকিউটর জাহিদ ইমাম, প্রসিকিউটর আবুল কালাম, প্রসিকিউটর সাবিনা ইয়াসমিন খান মুন্নী ও ব্যারিস্টার শেখ মোশফেকুর রহমান।
আসামিদের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের সময় অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, অপহরণ, আটক, নির্যাতন, হত্যা ও মরদেহ গুম- এই সাত ধরনের অপরাধে ছয়টি অভিযোগ আনা হয়েছিল।
গত বছরের ২৩ নভেম্বর এই মামলায় উভয় পক্ষের শুনানি শেষে রায় ঘোষণার জন্য অপেক্ষামান রাখা হয়।
আদালতে ওইদিন রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে ছিলেন প্রসিকিউটর সুলতান মাহমুদ সিমন। তিনি বলেন, এ মামলায় আসামি আটজন। এরমধ্যে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তিনজন মারা গেছেন। তারা হলেন- জাতীয় পার্টির সাবেক সংসদ সদস্য এম এ হান্নান, তার ছেলে মো. রফিক সাজ্জাদ (৬২) ও মিজানুর রহমান মিন্টু (৬৩)।
মামলার বিবরণ
২০১৫ সালের ১৯ মে ত্রিশালের শহীদ মুক্তিযোদ্ধা আবদুর রহমানের স্ত্রী রহিমা খাতুন ময়মনসিংহের ১ নম্বর আমলি আদালতে একাত্তরে হত্যা, অপহরণ, নির্যাতন, অগ্নিসংযোগের অভিযোগ এনে জাতীয় পার্টির সাবেক সংসদ সদস্য এম এ হান্নান ও তার ছেলেদের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। বিচারক মামলার এজাহারটি গ্রহণ করে সেটি ঢাকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে পাঠানোর আদেশ দেন।
ওই বছরের ১০ অক্টোবর ট্রাইব্যুনাল আসামিদের বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি করলে ওইদিনই হান্নানকে গুলশানে তার বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। একই দিন তার ছেলে রফিক সাজ্জাদকে ওই এলাকার একটি অফিস থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, ১৯৭১ সালের ২১ এপ্রিল মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে তৎকালীন শান্তি কমিটির ময়মনসিংহ শহর শাখার আহ্বায়ক ছিলেন এম এ হান্নান। তার নির্দেশে রাজাকার কমান্ডার আনিসুর রহমান মানিক ও সামসুল হক বাচ্চুসহ পাক হানাদার বাহিনী এবং তাদের দোসররা ত্রিশালের কালির বাজার ও কানিহারী এলাকায় শতাধিক গণহত্যা, কয়েক কোটি টাকার সম্পদ লুণ্ঠন, ধর্ষণ, নির্যাতন ও অগ্নিসংযোগ করেন।
২০১৬ সালের ১১ জুলাই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা আসামিদের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত প্রতিবেদন ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন শাখায় জমা দেয়।
২০১৮ সালের ৪ নভেম্বর মামলায় জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য এম এ হান্নান ও তার ছেলেসহ আটজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ট্রাইব্যুনাল। মামলার আইওসহ মোট ১৩ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়।