অধিকার ডেস্ক:: আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সরকারের কাছে অভিযোগ আছে খুলনায় বিএনপির সমাবেশে সন্ত্রাসীদের জড়ো করা হচ্ছে। সন্ত্রাসের ভয়েই পরিবহনমালিকেরা ধর্মঘট ডেকেছেন। এতে সরকারের কোনো হাত নেই। সরকার সমাবেশ করতে বাধা দিচ্ছে না।
আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর হোটেল ওয়েস্টিনে ‘দ্য মাইন্ড বিহাইন্ড দ্য মিরাকলস: শেখ হাসিনা লিডস ডেভেলপমেন্ট’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপকমিটি আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ওবায়দুল কাদের।
আগামীকাল শনিবার খুলনায় গণসমাবেশ করবে বিএনপি। তবে এর আগেই আজ শুক্রবার সকাল ছয়টা থেকে খুলনায় দুই দিনের পরিবহন ধর্মঘট শুরু হয়েছে। গণপরিবহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। বিএনপির দাবি, তাদের গণসমাবেশ বানচাল করতে ও বিপুল মানুষের উপস্থিতি ঠেকাতে ‘ষড়যন্ত্র’ করে এ ধর্মঘট ডাকা হয়েছে।
বিএনপির এমন অভিযোগ সম্পর্কে ওবায়দুল কাদেরকে প্রশ্ন করেন সাংবাদিকেরা। তখন তিনি বলেন, ‘সরকার সমাবেশে কোনো বাধা দিচ্ছে না। পরিবহন ধর্মঘট ডেকেছেন পরিবহনমালিকেরা। আমরা তো কাউকে ধর্মঘট ডাকতে বলিনি। জানমালের নিরাপত্তা নষ্ট হওয়ার বিষয়ে পরিবহনমালিকদের অতীতের ভয় রয়েছে।’
সমাবেশের আগে বিএনপি নেতা–কর্মীদের গ্রেপ্তার ও হয়রানি করা হচ্ছে—এমন অভিযোগের বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, কারও বিরুদ্ধে মাদক বা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বা খুনের মামলা থাকলে গ্রেপ্তার করা হতে পারে। এটা আইনি প্রক্রিয়া। এ সমাবেশে সন্ত্রাসীদের জড়ো করা হচ্ছে বলে সরকারের কাছে খবর আছে।
আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিএনপির সম্ভাব্য সমাবেশ সম্পর্কে ওবায়দুল কাদের বলেন, ডিসেম্বর বিজয়ের মাস। বিএনপি বিজয়ের চেতনা ধারণ করে না। মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ী দল আওয়ামী লীগ বিজয়ের মাসে রাজপথে থাকবে। চট্টগ্রামের সমাবেশে ১০ লাখ লোক আনার কথা বলেছিল বিএনপি। বাস্তবে এক লাখ লোক হয়েছে।
এর আগে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিশ্বব্যাংক এখন বলছে দারিদ্র্য বিমোচনে বাংলাদেশ একটি উদ্দীপনার নাম। দারিদ্র্য থেকে উত্তরণে, অন্ধকার থেকে আলোর পথ দেখাতে শেখ হাসিনা অগ্রগামী নেতা।
গত ২৮ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উদ্যাপিত হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উদ্যাপন উপলক্ষে এ আয়োজন বলে আয়োজকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়। এ অনুষ্ঠানে রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, তুরস্ক, ডেনমার্ক, চীন, জার্মানি, ইতালি ও পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত এবং বিভিন্ন দেশের দূতাবাসের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। তিনি বলেন, এখন সারা বিশ্বে ব্যক্তিগত ত্যাগের নিরিখে শেখ হাসিনার সঙ্গে তুলনীয় একজন নেতাও নেই। তিনি স্বজনদের হারিয়েছেন, তাঁর ওপর ১৯ বার হামলা হয়েছে। এসবই তিনি করেছেন গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর আতিউর রহমান। তিনি বলেন, বাংলাদেশের অর্জন ঈর্ষণীয়। বাংলাদেশ সত্যিকার অর্থে একটি বিস্ময়। বাংলাদেশের মানুষের উদ্যমী মানসিকতার প্রতি অকৃত্রিম শ্রদ্ধা এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন—এ দুটি বিষয়ে শেখ হাসিনা বরাবরই যোগ দিয়েছেন। বাংলাদেশের উন্নয়ন তার সুদূরপ্রসারী দৃষ্টিভঙ্গির ফল। তিনি তাঁর বাবার মতো ধর্মকে কখনো রাজনীতির সঙ্গে মেলাননি আর সব ধরনের সাম্প্রদায়িকতার ঊর্ধ্বে থেকেছেন। আতিউর রহমান বলেন, বাংলাদেশকে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে কোনো অবস্থাতেই তুলনা করা যাবে না।
অনুষ্ঠানে সভাপতি ছিলেন আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপকমিটির চেয়ারম্যান মো. জমির। স্বাগত বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ও উপকমিটির সদস্যসচিব শাম্মী আহমেদ। মঞ্চে ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, কাজী জাফর উল্যাহ ও জাহাঙ্গীর কবির নানক।