অধিকার ডেস্ক:: গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকির ওপর চট্টগ্রামে হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের শীর্ষনেতারা। মঙ্গলবার (৭ জুন) বিকালে এ হামলার ঘটনা ঘটে। এ দিন রাতে গণমাধ্যমে বিবৃতি পাঠিয়ে প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছেন বিএনপি, বামজোট, বাসদ, গণতন্ত্র মঞ্চের শরিকদলগুলোসহ অনেকে। ঘটনার প্রতিবাদে আজ বুধবার (৮ জুন) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ ডেকেছে সাত দলের গণতন্ত্র মঞ্চ।

প্রতিবাদলিপিতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘এ হামলা নারকীয় এবং ইতিহাসে কলঙ্কিত হয়ে থাকবে। সীতাকুণ্ডের অগ্নিকাণ্ডে আহতদের সহমর্মিতা জানাতে হাসপাতালে দেখতে গেলে জোনায়েদ সাকির ওপর হামলা কেবল কাপুরুষদের দ্বারাই সম্ভব। এই হামলা সভ্যতা ও মানবিক মূল্যবোধের চরম বিরোধী। সরকার সন্ত্রাসীদের লেলিয়ে দিয়ে যে দেশ চালাতে চায়, এ ঘটনা তারই প্রমাণ। এ হামলা সরকারের সব ব্যর্থতা থেকে দৃষ্টি ফেরানোর কৌশল। এই সহিংস ঘটনায় পৈশাচিকতা আরও তীব্র মাত্রায় প্রকাশ পেলো।’

বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়কারী ও ইউসিএলবি’র সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আব্দুস সাত্তার, সিপিবির সভাপতি শাহ আলম, সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা শিশু, ওয়ার্কার্স পার্টির (মার্কসবাদী) সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবীর জাহিদ, বাসদ (মার্কসবাদী) সমন্বয়ক মাসুদ রানা ও সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের সভাপতি হামিদুল বিবৃতিতে বলেছেন, ‘ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ আজ ন্যূনতম গণতন্ত্র চর্চার সুযোগ রাখছে না। সীতাকুণ্ডের ভয়াবহ দুর্ঘটনার সঙ্গে যুক্তদের আড়াল করতে দৃষ্টি অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে তারা।’

৯ সংগঠনের সমন্বয়ক ও নয়াগণতান্ত্রিক গণমোর্চার সভাপতি জাফর হোসেন, বাংলাদেশের সাম্যবাদী আন্দোলনের সমন্বয়ক শুভ্রাংশু চক্রবর্তী, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল সম্পাদক ফয়জুল হাকিম, জাতীয় গণফ্রন্ট সমন্বয়ক টিপু বিশ্বাস, গণমুক্তি ইউনিয়ন আহ্বায়ক নাসির উদ্দিন আহমেদ নাসু, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক পার্টির সাধারণ সম্পাদক সারওয়ার মোর্শেদ, জাতীয় গণতান্ত্রিক গণমঞ্চ সভাপতি মাসুদ খান, বাসদ (মাহবুব) আহ্বায়ক সন্তোষ গুপ্ত ও কমিউনিস্ট ইউনিয়ন আহ্বায়ক ইমাম গাজ্জালী এক যৌথ বিবৃতিতে এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, ‘সরকার দলীয় গুন্ডাদের দিয়ে হামলা চালিয়ে জনগণের মুখ বন্ধ করতে চাচ্ছে।’

বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ‘সীতাকুণ্ডের মর্মান্তিক ঘটনায় অগ্নিদগ্ধদের দেখতে যেয়ে এই হামলা সরকার ও সরকারি দলের নগ্ন ফ্যাসিবাদী চরিত্রেরই বহিঃপ্রকাশ। এই দায়-দায়িত্ব সরকার ও সরকারি দলকেই বহন করতে হবে।’

বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ হামলার তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

গণসংহতি আন্দোলনের রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য ফিরোজ আহমেদ ও তাসলিমা আখ্তার এক যৌথ বিবৃতিতে বলেছেন, ‘জাতীয় নেতৃবৃন্দ সরেজমিনে আহতের পরিদর্শন করে যখন বিষয়টি নিয়ে দেশবাসীর সামনে ব্যাখ্যা ও দিকনির্দেশনা হাজির করেছেন, তখনই হামলা করা হয়। এমন হামলার দৃষ্টান্ত অতীতে এনএসএফের গুন্ডাদের আছে। এই হামলা এটাই প্রমাণ করে যে, বর্তমান সরকারের পায়ের নিচে মাটি নেই। তারা এমনকি তাদের ব্যর্থতার কারণে নিহত-আহত মানুষের প্রতি নেতৃবৃন্দের সহানুভূতি প্রকাশও সহ্য করতে পারছে না।’

জোনায়েদ সাকিসহ গণতন্ত্র মঞ্চের নেতাকর্মীদের ওপর হামলার নিন্দা ও হামলাকারী ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন বাসদ (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় নির্বাহী ফোরামের সমন্বয়ক মাসুদ রানা।

চট্টগ্রামের ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম। তিনি হামলারকারীদের গ্রেফতারের দাবি জানান।

এদিকে, জোনায়েদ সাকির ওপর হামলার প্রতিবাদে ঢাকায় বিক্ষোভ করেছে গণসংহতি আন্দোলন। দলটির অভিযোগ, সরকার ভয় পেয়ে জোনায়েদ সাকির ওপর হামলা করেছে। এছাড়া বুধবার সারাদেশে দলটির পক্ষ থেকে বিক্ষোভ প্রদর্শন করা হবে বলে জানিয়েছেন নেতারা।