ডেস্ক রিপোর্ট
১০ এপ্রিল ২০২২, ২:০২ অপরাহ্ণ
বগুড়া প্রতিনিধি:: তিস্তাসহ ৫৪টি অভিন্ন আন্তর্জাতিক নদীর পানির ন্যায্য হিস্যার দাবিতে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ বগুড়া জেলা শাখার উদ্যোগে মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত।
আজ রোববার (১০ এপ্রিল ২০২২) সকাল ১১টায় সাতমাথায় সংগঠনটি মিছিল-সমাবেশ করে।
বাসদ বগুড়া জেলা আহবায়ক কমরেড এ্যাড. সাইফুল ইসলাম পল্টুর সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাসদ বগুড়া জেলা সদস্য সচিব কমরেড সাইফুজ্জামান টুটুল, সদস্য মাসুদ পারভেজ, শহিদুল ইসলাম, দিলরুবা নূরী প্রমূখ নেতৃবৃন্দ।
কমরেড এ্যাড. সাইফুল ইসলাম পল্টু, মানব দেহের শিরা-উপশিরার মতো ছড়িয়ে থাকা নদী ও পলি দিয়ে গঠিত বাংলাদেশ রাষ্ট্রটি আজ পানির অভাবে মরুকরণের হুমকির মুখে। এই অভাব প্রাকৃতিক কারণে নয়, মানুষের সৃষ্টি। চীন, নেপাল, ভুটান ও ভারত থেকে আসা নদীগুলো বাংলাদেশে প্রবেশ করে জালের মতো ছড়িয়ে গেছে। এই নদীগুলোই বাংলাদেশের প্রাণ প্রবাহ। কিন্তু আন্তর্জাতিক সমস্ত আইন ও নীতি লঙ্ঘন করে ভারত ৫৪টি নদীর উজানে বাঁধ দিয়ে একতরফা পানি প্রত্যাহার করে নেয়ার আগ্রাসী তৎপরতার ফলে পানির প্রবাহ কমে গিয়েছে। এর সাথে যুক্ত হয়েছে দেশের অভ্যন্তরে নদী দখল ও দূষণ। এক সময় দেশে ১ হাজার ২০০টি নদী ছিল। সরকারসমূহের ভ্রান্তনীতি ও দখল-দূষণের কারণে নদী মরে গিয়ে এখন ২৩০-এ নেমে এসেছে। খরা মৌসুমে বেশিরভাগ নদীতেই পানি থাকে না। একসময়ের প্রমত্তা অনেক নদীই এখন খাল-নালায় পরিণত হয়েছে।
কমরেড সাইফুজ্জামান টুটুল বলেন, আজ প্রমত্তা তিস্তার এই বেহাল দশা কেন? পদ্মা, মেঘনা, ব্রহ্মপুত্রের পরে তিস্তা চতুর্থ বৃহত্তম নদী। উত্তর সিকিমে কৈলাস হ্রদ থেকে শুরু করে হিমালয় পর্বতের বুক চিরে সাপের মতো এঁকে বেঁকে ভারতের জলপাইগুড়ি হয়ে বাংলাদেশের নীলফামারী জেলার ছাতনাই দিয়ে আমাদের দেশে প্রবেশ করেছে তিস্তা। ৩১৫ কি.মি. দীর্ঘ তিস্তা আন্তর্জাতিক নদী হওয়া সত্বেও ভারত বাংলাদেশের স্বার্থ উপেক্ষা করে একতরফা বাঁধ দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন ও ৫ লাখ ৪০ হাজার হেক্টর জমিতে সেচের জন্য পানি প্রত্যাহার করে নিচ্ছে। ফলে বাংলাদেশ পানি পাচ্ছে না। আমাদের শাসক শ্রেণির একাংশ ভারতকে বন্ধু রাষ্ট্র এবং আরেকাংশ হিন্দু রাষ্ট্র বলে ভোটের রাজনীতিতে ফায়দা তুলতে চায়। কিন্তু বাস্তবে ভারত বন্ধু বা হিন্দু রাষ্ট্র নয়, একটি সা¤্রাজ্যবাদী রাষ্ট্র। ফলে সা¤্রাজ্যবাদী চরিত্র অনুযায়ী ভারত পাশর্^বর্তী দেশের উপর রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক-সামরিক-সাংস্কৃতিক কর্তৃত্ব ও প্রভাব বিস্তার করতে চায়।
অন্যন্য নেতৃবৃন্দ বলেন, ভারতের একতরফা পানি প্রত্যাহার আর সরকারের নতজানু নীতির প্রতিবাদে তিস্তা বাঁচাতে, নদী, পানি ও প্রাণ-প্রকৃতি বাঁচাতে সকল বাম প্রগতিশীল দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক দল, পরিবেশ ও নাগরিক আন্দোলনের প্রতিনিধি এবং সর্বস্তরের দেশপ্রেমিক জনগণের প্রতি আহবান জানান আসুন ভারতের পানি আগ্রাসন নীতির বিরুদ্ধে এবং নদী দুষণ ও দখলদারদের রুখে দাঁড়াতে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তুলি।