অধিকার ডেস্ক:: ফুলতলা এম এম কলেজের শিক্ষার্থী আলিফ রোহান (২০) হত্যার বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। নিহত আলিফ ফুলতলা এম এম কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিল।

রোববার (৩ এপ্রিল) বেলা ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত ফুলতলা এমএম কলেজের সামনের খুলনা-যশোর মহাসড়কে এ মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনে খুনিদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবি জানানো হয়। শান্তিপূর্ণ এ কর্মসূচিতে কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, নিহতের পরিবার ও দুই শতাধিক গ্রামবাসী উপস্থিত ছিলেন।

এদিন অধ্যক্ষ কার্যালয়ের ওপরে টানানো খুনের সাথে জড়িত ওই কলেজ ছাত্র হাসিবুল ইসলাম শাস্তর ছবি সম্বলিত প্যানা বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা ভাঙচুর করেছে।

এদিকে কলেজের এক জরুরি সভায় খুনের সাথে জড়িত ছাত্রদের বহিস্কারসহ ৫টি প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

রোববার বেলা ১১টায় খুলনা-যশোর মহাসড়কের এম এম কলেজ গেটের সামনে মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন- কলেজ অধ্যক্ষ শেখ মিজানুর রহমান। এ সময় বক্তৃতা করেন শিক্ষাবিদ আনোয়ারুজ্জামান মোল্যা, ইউপি চেয়ারম্যান শরীফ মো. ভূঁইয়া শিপলু, শেখ আবুল বাশার, সহকারী অধ্যাপক ফিরোজা আক্তার, ড. জাকির হোসেন, প্রদ্যুৎ রুদ্র চৈতি, ফুটলাল দত্ত, সাবেক ইউপি সদস্য আলমগীর হোসেন মোল্যা প্রমুখ।

এদিকে কলেজ ছাত্র রোহান খুনের ৩দিন পর রোববার দুপুর সোয়া ১২টায় কলেজ ক্যাম্পাসে গিয়ে অধ্যক্ষের কার্যালয়ের ওপরে টানানো খুনের সাথে সরাসরি জড়িত কলেজ ছাত্রলীগের সিনিয়র সহসভাপতি মো. হাসিবুল ইসলাম শান্তর ছবি সম্বলিত প্যানা দেখে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। তারা মিছিল করে অধ্যক্ষ কার্যালয়ে খুনিদের প্রশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ এনে প্রতিবাদ করতে থাকে। এ সময় শান্তর প্যানা ভাঙচুর এবং গ্রেপ্তার ও ফাঁসির দাবি জানানো হয়।

দুপুর ১২টায় কলেজ অধ্যক্ষ কার্যালয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি সাদিয়া আফরিনের সভাপতিত্বে এক জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায়- অধ্যক্ষ শেখ মো. মিজানুর রহমান, কলেজ পরিচালনা কমিটির সদস্য শিক্ষাবিদ আনোয়ারুজ্জামান মোল্যা, বিএমএ সালাম, মো. সেলিম আহমেদ মহলদার, সহকারী অধ্যাপক ফিরোজা আক্তার, ফুটলাল দত্ত, লুৎফর রহমান, এম এম মোনায়েম হোসেন, ফুলতলা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইলিয়াস তালুকদার, উপজেলা প্রেস ক্লাব সভাপতি শামসুল আলম খোকন, প্রভাষক গাজী ইয়ামিন, সানজিদা শবনম, দিপা গোলাদার প্রমুখ।

সভায় ঘটনার দুঃখ প্রকাশ করে খুনের সাথে জড়িত কলেজে অধ্যায়নরত হাসিবুর ইসলাম শান্ত ও হাসনাত শেখকে বহিষ্কার, নিহত রোহানের নামে একটা ভবনের নামকরণ, কলেজ ক্যাম্পাসের নিরাপত্তায় সিসি ক্যামেরা স্থাপন, বহিরাগতদের অনুপ্রেবেশ রোধ এবং ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা জোরদারের প্রস্তাবনা দেওয়া হয়।

জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার দিনে-দুপুরে ফুলতলা এম এম কলেজ ক্যাম্পাসে অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্র সৈয়দ আলিফ রোহান দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে নির্মমভাবে খুন হয়। এ ঘটনায় নিহতের পিতা সৈয়দ আবু তাহের টুটুল বাদী হয়ে ৫ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৪/৫ জনকে আসামি করে ফুলতলা থানায় মামলা করেন।

পুলিশ ওই দিনই এজাহারনামীয় আসামি দীপ্ত সাহাকে আটক করে এবং শনিবার সে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়। পরে তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়।