ডেস্ক রিপোর্ট

২৪ আগস্ট ২০২১, ৯:৩০ অপরাহ্ণ

নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবসে মহিলা ফোরামের স্মারকলিপি পেশ

আপডেট টাইম : আগস্ট ২৪, ২০২১ ৯:৩০ অপরাহ্ণ

শেয়ার করুন

অধিকার ডেস্ক:: সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে আজ ২৪ আগস্ট নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে মিছিল সমাবেশ ও স্মারকলিপি পেশ কর্মসূচী অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন মহিলা ফোরামের সংগঠক ও ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শিপ্রা মন্ডল।

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরামের সংগঠক জয়শ্রী রায়, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট ঢাকা নগর শাখার সভাপতি মুক্তা বাড়ৈ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগঠক লাবণী বন্যা।

সমাবেশ পরিচালনা করেন সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রুখশানা আফরোজ আশা।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, ১৯৯৫ সালের এই দিনে গৃহকর্মী ইয়াসমিন ঢাকা থেকে বাড়ি ফেরার পথে দিনাজপুরের দশমাইলে পুলিশের কর্মকর্তাদের দ্বারা ধর্ষণ এবং হত্যার শিকার হন। এই ঘটনায় দিনাজপুরসহ সারাদেশে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে, দিনাজপুরে পুলিশের গুলিতে নিহত হন ৭ জন ভাই। ৭ জন অকুতোভয় ভাইয়ের জীবনের বিনিময়ে ও সারাদেশের মানুষের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ইয়াসমিন হত্যার বিচার কার্যকর হতে দেখেছিল বাংলাদেশের মানুষ। নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে নারী পুরুষের মিলিত সংগ্রামের-ই প্রতিচ্ছবি; লড়াইয়ের প্রেরণা। কিন্তু আজ ২০২১ সালে আমরা যখন ২৬ তম নারী নির্যাতন দিবস পালন করছি তখন বাংলাদেশে নারীদের নিরাপত্তা কতটুকু নিশ্চিত হয়েছে? করোনা দুর্যোগের দেড় বছরে সারাদেশ বিপর্যস্ত। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি বিপর্যস্ত নারীরা। এই সময়কালে নারী শিশু নির্যাতন ধর্ষণ ও বাল্যবিবাহ বেড়েছে ভয়াবহভাবে। নারীদের কাজ হারানোর হার অত্যন্ত বেশি। নারীদের চাকরি বা কাজ হারানোর হার অত্যন্ত বেশি। পারিবারিক নির্যাতন বেড়েছে কয়েকগুণ।

বক্তারা আরো বলেন, দেশে দৈনিক গড়ে ১৭ টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে। এটা হলো যেসকল ঘটনায় মামলা হয়েছে তার পরিসংখ্যান। এর বাইরেও অসংখ্য ঘটনা ঘটছে। তারা লোক লজ্জার ভয়ে মামলা করতে যায় না। ২০১৯ সালে ধর্ষণের ঘটনা ছিল ৫ হাজার ৮৭২ টি। করোনা মহামারির মধ্যে গত ১৮ মাসে যশোরের কেশবপুর উপজেলায় তিন হাজার বাল্যবিবাহের ঘটনা ঘটেছে। অভিভাবকের অসচেতনতা, আর্থিক অনটন, বিদ্যালয় বন্ধ থাকার কারণে শিক্ষকদের মনিটরিং না থাকা, সরকার প্রশাসন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের দায়িত্বে অবহেলায় বাল্যবিবাহের সংখ্যা উত্তরোত্তর বেড়ে চলেছে।

বক্তারা বলেন, সরকার যখন করোনা মোকাবিলাসহ সর্বক্ষেত্রে চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে, সর্বক্ষেত্রে দুর্নীতি, দুঃশাসনে মানুষ যখন ক্ষুব্ধ হয়ে উঠছে তখন তাকে আড়াল করার জন্য নন ইস্যুকে সামনে এনে জনগণের দৃষ্টিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করছে। সরকারের ব্যর্থতা ঢাকতেই নায়িকা পরীমণি ও অন্যান্য মডেলসহ নারীদের চরিত্র হনন, সম্ভ্রমহানি ও নানা কল্পকাহিনী ছড়ানো হচ্ছে। নাগরিকের ব্যক্তিগত স্বাধীনতা, ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষা করা সাংবিধানিকভাবে রাষ্ট্রের দায়িত্ব।

সমাবেশে ৪ টি দাবি উত্থাপন করা হয় :
১. নারী শিশু ধর্ষণ নির্যাতনের সুষ্ঠু ও ন্যায় বিচার নিশ্চিত করতে হবে
২. বাল্যবিবাহ বন্ধে সরকার প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের সজরদারি ও সচেতনতা বাড়াতে হবে
৩. ক্যাসিনো মাদক ব্যবসায়ী ও পর্ণোগ্রাফির পৃষ্ঠপোষক মাফিয়া গডফাদার ও সিন্ডিকেটের হোতাদের গ্রেফতার ও বিচার করতে হবে
৪. অপসংস্কৃতি অশ্লীলতার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ ও সুস্থ্য সংস্কৃতির বিকাশে সরকারি উদ্যোগ বাড়াতে হবে।

শেয়ার করুন