ডেস্ক রিপোর্ট

৬ ডিসেম্বর ২০২৩, ৬:৪৫ অপরাহ্ণ

হরতাল-অবরোধ, গত দুই সপ্তাহে বেড়েছে ককটেলের ব্যবহার

আপডেট টাইম : ডিসেম্বর ৬, ২০২৩ ৬:৪৫ অপরাহ্ণ

শেয়ার করুন

অধিকার ডেস্ক: হরতাল-অবরোধের প্রথমদিকে ককটেলের ব্যবহার কম থাকলেও গত দুই সপ্তাহে বেড়েছে এর ব্যবহার। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) বলছে, গত ২৯ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া হরতাল-অবরোধে যে নাশকতা কার্যক্রম চালানোর চেষ্টা চলছে, তার বড় একটি অংশ সংঘটিত করতে দেওয়া হয়নি। তবুও কিছু ঘটনা ঘটেছে।

গত ৩০ নভেম্বর রিটার্নিং অফিসার কার্যালয়ে ককটেল বিস্ফোরণের হোতাসহ চারজনকে গ্রেপ্তারের পর একথা জানিয়েছেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) ড. খ. মহিদ উদ্দিন। মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) দিনগত রাতে মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া ও ঢাকার আশেপাশের এলাকা থেকে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তাররা হলেন- আশিকুর রহমান পান্না, পল্টন থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক শফিকুল ইসলাম, বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক সুমন হোসেন রনি ও বিল্লাল হোসেন।

বুধবার (৬ ডিসেম্বর) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ড. খ. মহিদ উদ্দিন বলেন, গত ৩০ নভেম্বর বিভাগীয় কমিশনার ও ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকার নির্বাচনী আসনগুলোর রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ের পাশে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।

সেদিন ছিল মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন। এদিন দুপুর ৩টার একটু পর রিটার্নিং কর্মকর্তার অফিসের পাশে ২-৩টি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।

ঘটনার পর ডিএমপির কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এনবিআর অফিসের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় সন্দেহাতীতভাবে সঠিক ব্যক্তিকে শনাক্ত করতে আমরা কাজ করি। এরই ধারাবাহিকতায় আশিকুর রহমান পান্না ও পল্টন থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক শফিকুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়।

ডিএমপির এ কর্মকর্তা বলেন, গ্রেপ্তাররা ভয়ংকর তথ্য দিয়েছে। রিটার্নিং অফিসার কার্যালয় ছাড়াও এ দুইজন আরও ৮টি ঘটনা ঘটিয়েছেন।

এছাড়া, রমনার বিভিন্ন এলাকায় ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় ১৩ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক সুমন হোসেন রনি ও বিল্লাল হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা ১২টি স্থানে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় দায়ী।

গ্রেপ্তার চারজন মোট ২১টি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটিয়েছে দাবি করে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মহিদ বলেন, তাদের বিরুদ্ধে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় বেশ কিছু মামলা রয়েছে। আরও কোনো ঘটনায় জড়িত কি না এবং তাদের পেছনে কারা রয়েছে তাদেরকেও আমরা চিহ্নিত করার চেষ্টা করবো।

ড. খ. মহিদ উদ্দিন বলেন, ২৯ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া হরতাল-অবরোধে যে নাশকতা কার্যক্রম চালানোর চেষ্টা হচ্ছে, এর বড় একটি অংশ আমরা এক্সিকিউট করতে দেইনি। তারপরেও কিছু ঘটনা ঘটেছে।

বিভিন্ন ঘটনার সময় আমরা হাতেনাতে ৩৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছি। তদন্তে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় যাদের নাম আসছে তাদেরকে গ্রেপ্তার করছি। যাতে কোন নিরীহ ব্যক্তি ভুলের শিকার না হয়, সেজন্য নিশ্চিত না হয়ে কাউকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছেনা।

তিনি আরও বলেন, কম হলেও আমরা কোয়ালিটি অ্যারেস্ট করতে পেরেছি। তাৎক্ষণিক গ্রেপ্তার করতে না পারলেও তদন্তে কারও নাম আসলে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। আমরা যেকোনোভাবে মহানগরবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর।

তিনি বলেন, হরতাল-অবরোধের প্রথমদিকে ককটেলের ব্যবহার কম ছিল। কিন্তু গত ২ সপ্তাহ ধরে ককটেলের ব্যবহার বাড়ছিল। যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তারা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ককটেলের বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটিয়েছে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যারা হরতাল-অবরোধ আহ্বান করে তাদের উদ্দেশ্য সর্বসাধারণকে ভীতসন্ত্রস্ত করা। এজন্য তারা এ ধরনের কাজ করছে। তারা গ্রেপ্তারের ভয়ে এসব করার জন্য লোক ভাড়া নেয়, আবার খাবার-টাকার বিনিময়ে কাউকে ভাড়া করে এসব ঘটনা ঘটায়। এছাড়া, দলে একটা অবস্থান করে দেওয়া হবে এ ধরনের আশ্বাসে তাদেরকে দিয়ে নাশকতা করানো হচ্ছে।

‘গ্রেপ্তার দুজনের দলীয় পরিচয় পেয়েছি, বাকি দুজনও বিএনপির কর্মী। তবে পদ আছে কি না এখনও নিশ্চিত না’ যোগ করেন তিনি।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ছদ্মবেশে যাত্রীবেশে যদি কোনো বাসে আগুন দেয় সেটি প্রতিরোধ করা কষ্টসাধ্য ব্যাপার। কোনো একটি জায়গায় আগুন দেওয়া সেকেন্ডের ব্যাপার। তারপরেও হাতেনাতে তদন্তে অনেককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কিন্তু তারা পরিস্থিতির ভয়াবহ রূপ দেওয়ার চেষ্টা করলেও তা পারে নি।

সাইবার জগৎ, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অসংখ্য মানুষের বিচরণ। আমাদের সাইবার পেট্রোলিং চলছে। কেউ যদি সাইবার স্পেসে নাশকতার পরিকল্পনা করে, তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।

শেয়ার করুন