ডেস্ক রিপোর্ট

২৩ এপ্রিল ২০২২, ৮:২১ অপরাহ্ণ

রোগীর দুই স্বজনকে পিটিয়ে আটকে রাখলেন হাসপাতালের স্টাফরা

আপডেট টাইম : এপ্রিল ২৩, ২০২২ ৮:২১ অপরাহ্ণ

শেয়ার করুন

অধিকার ডেস্ক:: বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নবজাতককে দেখতে চাওয়ায় দুই স্বজনকে মারধর করে আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছে দায়িত্বরত আনসার সদস্য ও স্টাফদের বিরুদ্ধে। ইউনিসেফ বাংলাদেশের প্রকল্পে কর্মরত মেহেদী হাসান, আনসার সদস্য অভিষেক মজুমদার, কালাম মুন্সীসহ ৬-৭ জন মিলে এ হামলা চালান।

যদিও তাদের দাবি, রোগীর স্বজনরা তাদের মারধর করেছেন। এ কারণে রোগীর স্বজনদের আটকে রেখেছেন।

শনিবার (২৩ এপ্রিল) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নবজাতক ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে।

হামলার শিকার রোগীর স্বজন আশরাফুজ্জামান মুন্না বলেন, আমার ভায়রার নবজাতকের নাভিতে সমস্যা হওয়ায় স্বরূপকাঠি থেকে বরিশালে রেফার্ড করা হয়। বিকেল ৩টার দিকে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নবজাতক ওয়ার্ডে শিশুটিকে ভর্তি করা হয়। আমি ও আমার শ্যালক রাসেল সাড়ে ৪টার দিকে নবজাতক ওয়ার্ডের সামনে এসে দাঁড়াই। আমি ওয়ার্ডের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা লোকের কাছে ভেতরে যাওয়ার অনুমতি চাইলে তিনি চিৎকার-চেঁচামেচি করে বাইরে বের করে দেন। আমি স্বীকারও করেছি, ভাই ভুল হয়েছে হয়তো আমি হাসপাতালের নিয়ম জানি না। কিন্তু সেই গার্ড আমার কোনো কথা না শুনে তর্কাতর্কির একপর্যায়ে আমাকে মারধর শুরু করেন। আমরা কোনো দোষ করিনি, তারপরও মাফ চেয়েছি। কিন্তু কে শোনে কার কথা? মারধর করল।

মারধরের শিকার রাসেল হাওলাদার বলেন, আমার ভাগনি অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। আমার দুলাভাই তাকে দেখতে ভেতরে যাওয়ার জন্য অনুমতি চাইলে তর্কাতর্কির একপর্যায়ে হাসপাতালের স্টাফ মেহেদী ও কয়েকজন আনসার সদস্য মারধর শুরু করেন। আমি ঠেকাতে গেলে স্টাফ মেহেদী ও আনসার সদস্যরা আমাকেও মারধর করে আটকে রাখেন। শুধু মারধর না, হামলাকারীরা বলেছেন আমাদের রোগীকে চিকিৎসা দেবে না। এ ঘটনায় আমরা আতঙ্কে আছি। তারা ভর্তির কাগজ নিয়ে আটকে রেখেছে।

প্রত্যক্ষদর্শী বৃদ্ধ তফসের আলী বলেন, দুজনে কথা বলছিল। এর মধ্যে হাসপাতালের স্টাফ ও আনসার সদস্যরা মিলে দুইজনকে মারধর করেছে। তাদের আটকে রেখেছে।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরেক শিশুর বাবা রফিকুল ইসলাম বলেন, ১৭ এপ্রিল আমার সন্তানকে এখানে এনে ভর্তি করিয়েছি। ওইদিন ওয়ার্ডে ঢুকিয়ে দেওয়ার পর আর সন্তানকে দেখতে পারিনি। আমি আজকেও হাসপাতালের স্টাফদের পায়ে ধরেছি যে, আমি একটু আমার সন্তানকে দেখতে চাই। তারা আমাকে ঘাড় ধরে বের করে দিয়েছে। স্টাফরা বলেন- ভেতরে একজন ঢুকতে পারবে। তাই বলে আমি বাবা হয়েও একনজর দেখতে পারব না।

রফিকুল ইসলাম আরও বলেন, আজকে দুইজনকে মারধর করে আটকে রেখেছে স্টাফ ও আনসাররা। আমি তখন প্রতিবাদ করায় আমাকেও লাঞ্ছিত করেছে। আমাকে বলেছে আমার সন্তানের চিকিৎসা দেবে না।

ইউনিসেফ প্রকল্পে হাসপাতালে কর্মরত অভিযুক্ত মেহেদী হাসান অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, নবজাতক ওয়ার্ডের গেটের কাছে আমি দায়িত্ব পালন করছিলাম। তখন দুইজনে এসে আমার ওপর ও ওয়ার্ডের ক্লিনারের ওপর হামলা চালায়। তারা হাসপাতালের স্টাফের গায়ে হাত তোলায় তাদের আটকে রাখা হয়েছে।

অভিযুক্ত আনসার সদস্য অভিষেক মুজমদার বলেন, হাসপাতালের স্টাফরা অভিযোগ দিয়েছেন তাদের ওপর হামলা হয়েছে। এ কারণে রাসেল ও মুন্না নামে দুজনকে আটকে রাখা হয়েছে। তাদের পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হবে। তারা এখান থেকে তাদের রোগী নিয়ে যাবেন, অন্যথায় তাদের রোগীকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হবে না।

হাসপাতালের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) মনিরুজ্জামান শাহীন জানান, ঘটনাটি পুরোপুরি তিনি জানেন না। খবর নিয়ে দেখবেন।

শেয়ার করুন