ডেস্ক রিপোর্ট

২১ মে ২০২৩, ১০:৫৩ অপরাহ্ণ

পরিষেবা বিল বাতিলের দাবিতে হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের মিছিল

আপডেট টাইম : মে ২১, ২০২৩ ১০:৫৩ অপরাহ্ণ

শেয়ার করুন

অধিকার ডেস্ক: “অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা বিল-২০২৩” বাতিল হোটেল সেক্টরে নতুন মজুরি বোর্ড গঠন, অবাধ ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার, শ্রম আইন বাস্থবায়নের দাবিতে ২১মে বিকেল ৫ টায় সিলেট জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের (রেজি নং চট্ট-১৯৩৩) মিছিল সমাবেশ অনুষ্টিত হয়।

মিছিলটি সুরমা পয়েন্টে হতে শুরু করে নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে কোর্ট পয়েন্টে এসে জেলা কমিটির সভাপতি ছাদেক মিয়া’র সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মো. আনছার আলীর পরিচালনায় সমাবেশ অনুষ্টিত হয়। অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ সিলেট জেলা কমিটির যুগ্ন সম্পাদক রমজান আলী পটু, সিলেট জেলা স’মিল শ্রমিক ইউনিয়ন (রেজিঃ নং চট্রঃ ৭৭২) এর সাধারন সম্পাদক রুহুল আমিন।

বক্তব্য রাখেন, সিলেট জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়ন দক্ষিণ সুরমা উপজেলা কমিটির সভাপতি মো.মনির হোসেন, শাহপরান থানা কমিটির সহ-সভাপতি জালাল মিয়া, ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক রিপন আহমদ, জেলা কোষাধ্যক্ষ মুহিদুল ইসলাম, আম্বরখানা আঞ্চলিক কমিটির সভাপতি রাশেদ আহমদ ভূইয়া, জেলা কমিটির দপ্তর সম্পাদক বদরুল আজাদ, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ইমান আলী, তালতলা আঞ্চলিক কমিটির আহবায়ক শাহাবুদ্দিন আহমদ, চন্ডিপুল আঞ্চলিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক সুনু মিয়া সাগর, বন্দর বাজার আঞ্চলিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক ইমাম উদ্দিন প্রমুখ।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, বাজারে জিনিসপত্রের দাম প্রতি ঘন্টায় ঘন্টায় বৃদ্ধি পেলেও হোটেল শ্রমিকদের বেতন বছরের পর বছর একই অবস্থায় থাকে। একজন মানুষের বেঁচে থাকার জন্য নি¤œতম যে সুযোগ সুবিধাদি প্রয়োজন তা হোটেল শ্রমিকরা পায় না। বাংলাদেশের শ্রম আইনে শ্রমিকদের জন্য যে সকল অধিকার নিশ্চিত করা কথা বলা হয়েছে তা বাস্তবে ‘কাগুজে বাঘ’ এর ন্যায়। হোটেল সেক্টরে কর্মরত শ্রমিকদের রেস্টুরেন্টে অবিক্রিত খাবারগুলো খাওয়ার জন্য দেওয়া হয়। শ্রমিকদের ভালো মন্দ দেখার জন্য সরকার “কলকারখানা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শক” নামে দপ্তর তৈরী করলেও কোনোদিন কোনো সরকারি কর্মকর্তা/কর্মচারী শ্রমিকদের খোঁজ খবর নেননি। শ্রমআইন অনুযায়ী প্রতিবছর শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধি করার কথা থাকলে মালিকরা তা করেন না। শ্রমিকরা মালিকদের এ বিষয়ে অবগত করলে তারা বিভিন্নভাবে নির্যাতনের শিকার হন এমনকি চাকরিচ্যুত হন কিন্তু কলকারখানা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শক তাতে কার্যকর কোনো ভূমিকা গ্রহন করেন না। বক্তারা বাজার দরের সাথে সংহতি রেখে ন্যূনতম মূল মজুরি ঘোষনা করে বিভাগীয় শহর, জেলা ও উপজেলা শহরে যথাক্রমে মূল মজুরির ৬০%, ৫৫% ও ৫০% বাড়িভাড়া , ১৫০০ টাকা যাতায়াত ভাড়া এবং ১৫০০ টাকা চিকিৎসা খরচ প্রদান করা। প্রতি বছর মূল মজুরির সাথে ১৫% বার্ষিক ইনক্রিমেন্টসহ বাজার দরের সাথে মজুরির সমন্বয় ও স্বাস্থ্যসম্মত কাজের পরিবেশ নিশ্চিত করা। নিয়োগপত্র , পরিচয়পত্র, সার্ভিস বই এবং সাপ্তাহিক ছুটি, নৈমেত্তিক ছুটি, অসুস্থতা জনিত ছুটি, অর্জিত ছুটি, উৎসব ছুটিসহ শ্রম আইনে বর্ণিত সমস্ত ছুটি মজুরিসহ প্রদান করা। দৈনিক ৮ ঘন্টা কাজ, অতিরিক্ত কাজের দ্বিগুন মজুরি , চাকরিচ্যুত কারনে ৪ (চার) মাসের নোটিশ পে অথবা নোটিশের পরির্বতে ৪(চার) মাসের মজুরি প্রদান, বছরে ২ টি উৎসব বোনাস প্রদান এবং শ্রমিক স্বার্থ বিরোধী সকল শ্রম আইন ও অধ্যাদেশ বাতিল করে, গণতান্ত্রিক শ্রম আইন প্রনয়ণ করা, সভা, সমাবেশ, ধর্মঘট এবং অবাধ ট্রেড ইউনিয়নের অধিকার নিশ্চিত করা , শ্রমঘন এলাকায় প্রয়োজনীয় শ্রম আদালত গঠন করে ৯০ দিনের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি করা। শ্রমিকদের জন্য আর্মিরেটে রেশনিং ব্যবস্থ্া চালু করা, মালিক ও সরকারের উদ্যোগে শ্রমিকদের জন্য কোয়াটার তৈরি করে স্বাস্থ্যকর থাকার ব্যবস্থা ও বিনা বেতনে সন্তানদের বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষা ও চিকিৎসা ব্যবস্থা চালু করার দাবি জানান।

বক্তারা আরো বলেন ; বর্তমান সরকার শ্রমিক স্বার্থবিরোধী “অত্যাবশ্যকিয় পরিষেবা বিল-২০২৩” নামে যে বিল সংসদে উত্থাপন করেছে তা বাতিলের দাবি জানান। অন্যতায় শ্রমিকরা ধর্মঘটের মাধ্যমেই তার ধর্মঘটের অধিকার আদায় করবে।

শেয়ার করুন