ডেস্ক রিপোর্ট

২২ জানুয়ারি ২০২৩, ১২:৫৪ পূর্বাহ্ণ

দেশে দেশে লুটেরা ও বেগমপাড়া বিরোধী সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান

আপডেট টাইম : জানুয়ারি ২২, ২০২৩ ১২:৫৪ পূর্বাহ্ণ

শেয়ার করুন

অধিকার ডেস্ক: বেগমপাড়া ও লুটেরা বিরোধী আন্দোলনের তৃতীয় বার্ষিকী উপলক্ষে ‘লুটেরা বিরোধী মঞ্চ, কানাডা’র উদ্যোগে টরন্টোয় ২০ জানুয়ারি ২০২৩, শুক্রবার, টরন্টো সময়: রাত ৯টায় এবং ২১ জানুয়ারি ২০২৩, শনিবার, বাংলাদেশ সময়: সকাল ৮টায় এক উন্মুক্ত ওয়েবিনার অনুষ্ঠিত হয়।

এই ওয়েবিনারের বিষয় ছিল, “বাংলাদেশের রিজার্ভ সংকট, অর্থপাচার – দায় এবং করনীয়।”

এতে অতিথি আলোচক হিসেবে বাংলাদেশ থেকে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক, লেখক-গবেষক ও রাজনীতিক এম এম আকাশ ও উন্নয়ন অধ্যায়ন বিভাগের অধ্যাপক, লেখক ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান উন্নয়ন অন্বেষণের চেয়ারপার্সন রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন, কানাডা’র ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক, লেখক ও এক্টিভিস্ট ড. মঞ্জুরে খোদা (টরিক)। ওয়েবিনার শুরুতে ড. মঞ্জুরে খোদা কিনোট উত্থাপন করেন। তার ভিত্তিতে অতিথিরা তাঁদের বক্তব্য পেশ করেন।

এম এম আকাশ বলেন, বাংলাদেশের দুর্নীতি ও অর্থপাচারের জন্য চতুর্ভুজ ক্ষমতার কেন্দ্র দায়ী। আইন, শাসন ও বিচার বিভাগের অসৎ অংশের সাথে যুক্ত হয়েছে অসৎ ব্যবসায়িক গোষ্ঠী। এই চতুর্ভুজই দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের জন্য দায়ী। আর্থিক খাতের বড় বড় দুর্নীতি, কেলেঙ্কারী সরকার-প্রশাসনের অসৎ অংশের সহযোগিতা ছাড়া সম্ভব নয়। তবে এ অবস্থার পরিবর্তন করতে হলে শুধু সরকার পরিবর্তন নয় এই ব্যবস্থারও পরিবর্তন করতে হবে। এই প্রশ্নে বাংলাদেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর অঙ্গীকারের ঘাটতি আছে। তিনি কানাডায় লুটেরা ও বেগমপাড়া বিরোধী আন্দোলনের প্রশংসা করেন এবং দুর্নীতি বিরোধী নানা ইস্যুতে জনমত গড়ে তোলার পরামর্শ প্রদান করেন।

রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি আগে অস্থিরতার মধ্যে ছিল সেটা চাপের মধ্যে আছে। তবে বাংলাদেশের বর্তমান রিজার্ভ সংকেটর জন্য সরকার যেভাবে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ ও করোনাকে যেভাবে দায়ী করছে, সংকট শুধু সেখানে নয়। সংকটের জন্য আর্থিক খাতের অব্যবস্থাপনা ও বিশৃংখলা বহুলাংশে দায়ী।বর্তমানে দেশের অর্থনীতি সংকটের মধ্যে থাকলেও ভবিষ্যতে বাংলাদেশের অর্থনীতি ভাল হবার উজ্জল সম্ভবনা আছে। তবে সে অবস্থার জন্য রাজনৈতিক শক্তির বোধোদয় ও ব্যবস্থাপনার পরিবর্তন দরকার। তিনি বলেন, প্রবাসীদের বেগমপাড়া বিরোধী সংগ্রামের “বেগম পাড়া’ শব্দটি অর্থনৈতিক গবেষণার একটি শব্দ হিসেবে যুক্ত হয়ে গেছে।

ওয়েবিনারে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ও আলোচনায় অংশ নেন, লুটেরা বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আহমেদ হোসেন, বাকসু’র সাবেক ভিপি ফায়েজুল করিম, মাহবুব চৌধুরী রনি, ইঞ্জিনিয়ার নওশের আলি,উদীচী কানাডা’র সভাপতি সুমন সাঈয়েদ, ইঞ্জিনিয়ার রেজাউর রহমান, ফারজানা চৌধুরী বিন্দু, রেজা অনিরুদ্ধ, মৈত্রেয়ী দেবী, শৈকত রুশদী ও সুমন জাফর।এছাড়া কানাডা প্রবাসী বিভিন্ন পেশাজীবী, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিনিধিসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিগর্বরা উপস্থিত ছিলেন। তাদের মধ্যে থেকে আলোচনায় অংশগ্রহন করেন, নজরুল ইসলাম মিন্টু, আব্দুল হালিম মিয়া, জাকির হোসেন বাচ্চু, মোঃ অবুল বাসার, রীনা রহমান, হাশমত চৌধুরী (জুঁই), রুবিনা শ্যামা, সুরভি সাঈদ, ওয়াহিদা রহমান, রীনা রহমান, মোঃ ওবায়দুল হক প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, পূর্বে বেগমপাড়া বলতে শুধু কানাডাকে ইংগিত করা হতো, কানাডার বেগমপাড়াকে বুঝানো হতো কিন্তু এখন প্রমানিত হয়েছে বেগমপাড়া শুধু কানাডাতেই নয়। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের লুটেরা ও দুর্নীতিবাজ আমলা, ব্যবসায়ী, রাজনীতিকরা তাদের অবৈধভাবে পাচারকৃত অর্থে বেগমপাড়া গড়ে তুলেছেন। সম্প্রতি ব্রিটেন, আমেরিকা, দুবাই, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া নিয়ে দেশ-বিদেশে এ সংক্রান্ত অনেক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

কানাডাই প্রথম দেশ যেখানে ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে বেগমপাড়া নিয়ে ব্যাপক সামাজিক আন্দোলন গড়ে ওঠে। কানাডার লুটেরা বিরোধী সেই সামাজিক আন্দোলন দেশে-বিদেশে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে, আলোড়ন তুলেছে। কানাডার প্রবাসীরা মাতৃভূমির প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে জাতীয় স্বার্থে বাংলাদেশের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ধ্বংসকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে যাচ্ছে। তারা বলছে, কানাডাকে বাংলাদেশের দুর্নীতিবাজ লুটেরা অর্থপাচারকারী আমলা-ব্যবসায়ী ও রাজনীতিকদের অভয়ারণ্য হতে দেয়া যাবে না। ওয়েবিনার থেকে ইংল্যান্ড, আমেরিকা, দুবাই, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়াসহ অন্যান্য দেশে আশ্রয় নেয়া লুটেরা ও বেগমপাড়ার বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানানো হয়।

শেয়ার করুন