ডেস্ক রিপোর্ট

৩০ জানুয়ারি ২০২২, ১০:৪২ অপরাহ্ণ

আগামী অর্থবছরে মাথাপিছু আয় দাঁড়াবে ৩০৮৯ ডলার: অর্থমন্ত্রী

আপডেট টাইম : জানুয়ারি ৩০, ২০২২ ১০:৪২ অপরাহ্ণ

শেয়ার করুন

অধিকার ডেস্ক:: আগামী ২০২২–২৩ অর্থবছরে দেশের মাথাপিছু আয় ৩ হাজার ৮৯ মার্কিন ডলারে এবং মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ৫ শতাংশে উন্নীত হবে বলে আশা প্রকাশ করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। রোববার ভার্চ্যুয়াল প্ল্যাটফর্মে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের কাছে এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘আগামী অর্থবছরে আমাদের মাথাপিছু আয় ৩ হাজার ৮৯ মার্কিন ডলার হবে। সে বছর জিডিপির প্রবৃদ্ধি হবে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। এটা আমার মোটামুটি হিসাব।’

এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, চলতি অর্থবছরে জিডিপির আকার হবে ৪৫৫ বিলিয়ন ডলার। এই জিডিপিকে জনসংখ্যা দিয়ে ভাগ করলে মাথাপিছু আয় যা হয়, সেটাই হবে। সম্প্রতি অর্থমন্ত্রী জাতীয় সংসদে জানিয়েছেন, চলতি অর্থবছর শেষে দেশের মানুষের গড় মাথাপিছু আয় দাড়াবে ২ হাজার ৭৮৫ মার্কিন ডলার। ২০২২-২৩ অর্থবছর শেষে মাথাপিছু আয় ৩ হাজার ৮৯ ডলারে পৌছাবে।

অর্থ পাচার ঠেকাতে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদেশে বিনিয়োগের সুযোগ দেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, বিদেশে বিনিয়োগের সুযোগ দেওয়া না হলে হুন্ডির মাধ্যমে বিভিন্ন দেশে অর্থ পাচার হতে পারে। অন্যদিকে দেশ স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল পর্যায়ে রুপান্তিত হচ্ছে। ফলে বৈশ্বিক সুবিধা নিতে এ ধরনের অনুমোদন দেওয়ার সময় হয়েছে।

সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ দেশের রপ্তানিকারনকদের বিদেশে বিনিয়োগের সুযোগ রেখে ‘মূলধনী হিসাব লেনদেন (বিদেশে ইক্যুইটি বিনিয়োগ) বিধিমালা-২০২২’ জারি করেছে। বিধিমালায় একজন রপ্তানিকারক তার শেষ পাঁচ বছরের গড় রপ্তানি আয়ের ২০ শতাংশ বা সর্বশেষ নিরিক্ষীত নিট সম্পদের ২৫ শতাংশ বিদেশে বিনিয়োগ করতে পারবে। তবে এজন্য তার রিটেনশন কোটা অ্যাকাউন্টে পর্যাপ্ত স্থিতি থাকতে হবে। এছাড়া আরও কিছু শর্ত রয়েছে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, বিদেশে বিনিয়োগ করা অন্যায় কিছু নয়। যদি অনুমোদন দেওয়া না হয়, তাহলে হুন্ডির মাধ্যমে বিভিন্ন দেশে অর্থ চলে যেতে পারে। এজন্য আনুষ্ঠানিক অনুমোদনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে ঢালাওভাবে সুযোগ দেওয়া হয়নি। যারা রপ্তানি করেন, যাদের রিটেনশন কোটায় অর্থ পর্যাপ্ত রয়েছে, তারা এ সুযোগ পাবেন। মুস্তফা কামাল আরও বলেন, এটি একটা ভাল উদ্যোগ। আমাদের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বেড়েছে। দেশের ব্যবসায়ীরা বর্তমানে আধুনিক ও উদ্ভাবনী চিন্তা করছেন। দেশ স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হচ্ছে। এখন যদি এ ধরনের অনুমোদন দেওয়া না হয়, তাহলে পিছিয়ে পড়তে হবে।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল সম্প্রতি বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি কমে যাবে বলে প্রক্ষেপন করেছে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কেমন হতে পারে এর জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, সরকারের প্রাক্কলন চলতি অর্থবছরে ৭ দশমিক ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হবে। এর আগে আইএমএফ বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৯ শতাংশ প্রক্ষেপন করে। এখন তারা বলছে ৬ দশমিক ৬ শতাংশ হতে পারে। আইএমএফ সব সময় রক্ষণশীল। তিনি মনে করেন সরকারের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে। কারণ শুধু সরকারি ব্যয় নয়, সাধারণ মানুষ যত আয় ব্যয় করে তার সবকিছুই জিডিপিতে অন্তর্ভূক্ত হয়। ফলে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হওয়ার কারণ নেই।

এছাড়া রোববার অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত কমিটিতে তিনটি প্রস্তাবে নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এগুলো হলো – জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের জন্য ২০টি মাইক্রোবাস সরকারি প্রতিষ্ঠান প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ থেকে কেনা, ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার (এনটিএমসি) আধুনিক জিও লোকেশন সিস্টেম কেনা, এবং বিবিয়ানা-৩ প্রকল্পের যন্ত্রাংশ কেনা। প্রত্যেক কেনাকাটা সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে হবে। এছাড়া ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে ১৬টি প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে। এর মধ্যে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাতটি, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের তিনটি, কৃষি মন্ত্রণালয়ের তিনটি, শিল্প মন্ত্রণালয়ের একটি, জননিরাপত্তা বিভাগের একটি এবং স্থানীয় সরকার বিভাগের একটি প্রস্তাব ছিল। ১৬টি প্রস্তাবে মোট অর্থের পরিমাণ এক হাজার ৩৮৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ব্যয় হবে ৪৪৯ কোটি টাকা এবং দেশ থেকে ও বৈদেশিক ঋণ ৯৩৮ কোটি টাকা।

শেয়ার করুন