ডেস্ক রিপোর্ট
১১ আগস্ট ২০২৩, ৯:১২ অপরাহ্ণ
অধিকার ডেস্ক: পাঁচ দিন বন্ধ থাকার পর অবশেষে বান্দরবান সদরের সঙ্গে সারাদেশের সড়ক যোগাযোগ স্বাভাবিক হয়েছে। তবে রুমা ও থানচি উপজেলার বিভিন্ন জায়গার সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় জেলা সদরের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ এখনো বন্ধ রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট) সকাল থেকে বান্দরবান সদরের সঙ্গে সারাদেশের সড়ক যোগাযোগ স্বাভাবিক হয়।
এ ব্যাপারে বান্দরবান জেলা বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ঝুন্টু দাশ বলেন, টানা বর্ষণে বান্দরবান কেরানীহাট সড়ক পুরোপুরি ডুবে গিয়েছিল। সে কারণে সারাদেশের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ ছিল।
এদিকে, প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বান্দরবানের নিম্নাঞ্চল থেকে পানি নেমে যাওয়ায় ১৯১টি আশ্রয়কেন্দ্র থেকে নিজ বাড়িতে ফিরছেন বন্যা ও পাহাড় ধসে ক্ষতিগ্রস্তরা। ত্রাণ সহায়তা দিচ্ছে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন। জেলা সদরে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করছে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর।
অন্যদিকে, বান্দরবানে বন্যায় ও পাহাড় ধসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১০ জনে দাঁড়িয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।
পাহাড় ধসে মারা যাওয়া নিহতরা হলেন- বান্দরবান সদরের টংকাবতী ইউনিয়নের মুসলিম সিকদার পাড়ার মো. ইউনুস (৪৭), ভুইট্টাপাড়ার তরচ্যাং (৩২), সদর ইউনিয়নের দাঁতভাঙা পাড়ার ছায়ারানি তঞ্চঙ্গ্যা (৪৫), বোধানর পাড়ার সন্ধ্যাবালা শীল (৫২), একই পাড়ার বর্ষা শীল বুলু (১৭), লামা উপজেলার ফাঁসিয়া খালী ইউনিয়নের কুমারী বাজার পাড়ার করিমা আক্তার (৩৬) ।
আর পানিতে ডুবে মারা যান লামা উপজেলার রুপসীপাড়ার বাসন্দিা মংবাসিং মার্মা (২৮), আলীকদম উপজেলার জামতলীর মো. মুছা (২২) এবং নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঠাকুর পাড়ার ফংচা মার্মা (৬৫)।
জেলা প্রশাসনের দেওয়া তথ্য মতে, বান্দরবানের বিভিন্ন এলাকায় মোট ৬০০টি পরিবার পানিবন্দি ছিল। আর পাহাড়ধসে প্রায় ৩ হাজার ৫৭৮টি ঘর আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ পর্যন্ত ২ হাজার ৪০ জন আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছে।
বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন বলেন, আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থানরতদের মধ্যে রান্না করা ও শুকনো খাবার বিতরণ করা হচ্ছে। তাদের মধ্যে পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ও খাবার পানিও বিতরণ করা হচ্ছে। এছাড়াও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের মাধ্যমে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা হচ্ছে।
এদিকে আজও (বৃহস্পতিবার) সকাল থেকে বান্দরবানে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টিপাত হচ্ছে। গত ৬ আগস্ট থেকে ভারী বর্ষণে বান্দরবানের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়। ফলে পানিবন্দি অবস্থায় থেকে মানবেতর জীবনযাপন করে হাজারো মানুষ। ডুবে যায় বান্দরবানের সড়ক, বন্ধ হয়ে যায় সড়ক যোগাযোগ।
জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, সদর উপজেলা কার্যালয়, ফায়ার সার্ভিস, জেলা ও দায়রা জজ আদালত, চিফ জুডিশিয়াল কার্যালয়, মেম্বার পাড়া, আর্মি পাড়া, হাফেজ ঘোনা, ইসলামপুর, কালাঘাটা ও বালাঘাটাসহ শহরের প্রায় ৮০শতাংশ বাড়িঘরে পানি ঢুকে পড়ে। এছাড়া বিদ্যুৎ সরবরাহ, সড়ক যোগাযোগ, মোবাইল নেটওয়ার্ক ও ইন্টারনেট সেবা বন্ধ হয়ে যায়। সেই সঙ্গে সারাদেশের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে জেলাটি।
এদিকে আজ দুপুরে রেডক্রিসেন্টের পক্ষ থেকে সাইক্লোন সেন্টারে ২০০ পরিবারের মধ্যে শুষ্ক খাবার বিতরণ করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং।
সূত্র : বাসস