ডেস্ক রিপোর্ট
২২ জুন ২০২৪, ১০:৩১ অপরাহ্ণ
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি: সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর সীমান্তে টাস্কফোর্সের অভিযানে ভারত থেকে চোরাচালানের মাধ্যমে নিয়ে আসা প্রায় ১৫ লাখ টাকার অধিক মুল্যের চিনি জব্দ করা হয়।
ওই অভিযানে সরকারি কাজে বাঁধা দেয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে! এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে প্রচারিত হলে বাঁধাদানকারী চেয়ারম্যান চিনি চোরাচালানের সাথে জড়িত রয়েছেন কি না এমন প্রশ্নও তুলেছেন নেটিজেনরা।
শনিবার সন্ধায় বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মফিজুর রহমান ভারতীয় চোরাচালানের চিনি জব্দের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি আরো বলেন, উপজেলার সলুকাবাদ ইউনিয়নের উত্তর কাপনা সীমান্ত এলাকার গুচ্ছ গ্রামের একটি পরিত্যক্ত বাড়ির গুদামে টাক্সফোর্সের অভিযান পরিচালানা করা হয় গেল ২০ জুন বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে বেলা ০৩টা অবধি আমার নেতৃত্বেই।
অভিযানে গুচ্ছ গ্রামের ওই গুদাম থেকে ভারত থেকে চোরাচালানের মাধ্যমে নিয়ে আসা প্রায় ১২ হাজার ৫৫০ কেজি (২৫১) বস্তা চিনি জব্দ করা হয়। যার বাজার মূর্য প্রায় ১৫ লাখ ৬ হাজার টাকা।
অভিযানে উপজেলা নির্বাহী অফিসার, বিশ্বম্ভরপুর থানা পুলিশ এবং সুনামগঞ্জ-২৮ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়ন বাংলাদেশ (বিজিবি)’ ডলুরা ও চিনাকান্দি বিওপি’র বিজিবি সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে ওই দিন টাস্কফোর্সের অভিযান চলাকালে সরকারি কাজে বাঁধা দান করে জনসম্মুখে ইউএনও’র সাথে অসাদাচরণ, তর্কাতর্কিতে জড়িয়ে পড়েন উপজেলার সলুকাবাদ ইউপি চেয়ারম্যান নুরে আলম সিদ্দিকী তপন। নেটিজেনরা প্রশ্ন তুলেছেন ওই ইউপি চেয়ারম্যান ভারতীয় চোরাচালানের সাথে সম্পৃক্ত রয়েছেন কি না? এমনকি সরকারি কাজে বাঁধা প্রদান করে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও)’র সাথে জনসম্মুখে দৃষ্টতা দেখানোর কারনে কেনই বা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে শনিবার সন্ধা অবধি কোন রকম আইন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
শনিবার সন্ধায় বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার সলুকাবাদ ইউপি চেয়ারম্যান নুরে আলম সিদ্দিকী তপনের নিকট তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনা সকল অভিযোগ অসত্য, মিথ্যা ও বানোয়াট। তিনি পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, সীমান্তের চিনি চোরাচালানের মূল হোতা পাশের ধনপুর ইইপি চেয়ারম্যান মিলন মিয়া ওরফে চিনি খান, তারই ইউনিয়নের মাছিমপুর ও চিনাকান্দি বিজিবির বিওপির এলাকা দিয়ে চিনি চোরাচালান হয়। আমার ইউনিয়নে অভিযান হয় অতচ আমাকে সহযোগিতার জন্য জানানো হয়নি, আমাকে এলাকার লোকজন বার বার ফোন দিয়ে ওই দিন অভিযান স্থলে নিয়ে গেছে। তিনি নিজেকে দুই বারের নৌকার মনোনীত বিজয়ী চেয়ারম্যান দাবি করে বলেন, আমি আদৌ চিনি চোরাচালানের সাথে জড়িত নই, ওই দিন ইউএনও মহোদয়ের অফিসে মাষ্টার রোলে চাকুরি করে তার সাথে কিছুটা কথা কাটাকাটি করেছি তার আচরণে।
উপজেলার ধনপুর ইউপি চেয়ারম্যান মিলন মিয়ার নিকট সলুকাবাদ ইউপি চেয়ারম্যানের দেয়া বক্তব্যের প্রেক্ষিতে জানতে চাইলে তিনিও পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, আমি কোন ধরণের চিনি চোরাচালঅনের সাথে জড়িত না বরং ওই দিনের অভিযানে জব্দকৃত চোরাচালানের চিনির মালিক সলুকাবাদ ইউপি চেয়ারম্যান নুরে আলম সিদ্দিকী তপন, তার চালান জব্দ হয়েছে বলেই তিনি ক্ষেপেছেন আমার উপর, তিনি অভিযানে সরকারি কাজে বাধা প্রদান করেন,এমনকি ইউএনও মহোদয়ের সাথে ও অভিযানে থাকা আইনশৃংখলা বাহিনীর সাথেও তর্কাতর্কি করেন।
শনিবার সন্ধায় বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মফিজুর রহমান নিকট বলেন, জব্দকৃত চিনি বিজিবির নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে এখন বিজিবিই পরবর্তীতে আইনগত ব্যবস্থা নিবে।