ডেস্ক রিপোর্ট
১৫ ডিসেম্বর ২০২৩, ৯:৫৫ অপরাহ্ণ
অধিকার ডেস্ক: ভাগ-বাটোয়ারার নির্বাচনের আগে সরকার জঙ্গি নাটক মঞ্চস্থের পরিকল্পনা করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এই নাটক করে গণতান্ত্রিক বিশ্বকে বিভ্রান্ত করার প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে যেমনটা করা হয়েছিল, তেমন করে এবারও একই পরিকল্পনা করছে।’
আজ শুক্রবার এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। রিজভী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ এবং এই দলের অঙ্গ সংগঠনের সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার না করে, তাদেরকে আইনের হাতে সোপর্দ না করে পার্শ্ববর্তী দেশের নির্দেশনায় জঙ্গি নাটক মঞ্চস্থ করে সাধারণ জনগণের মৌলিক অধিকার- ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়ার প্রাণপণ চেষ্টায় মরিয়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। শুধু সরকারকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখতে আলেম ওলেমাদের বহির্বিশ্বে জঙ্গি হিসেবে উপস্থাপনের অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।’
রিজভী বলেন, ‘একদল উচ্চ শিক্ষিত, তথাকথিত আত্মা ও ব্যক্তিত্ব বিক্রি করা বুদ্ধিজীবী ব্যস্ত আছেন নির্বাচনে নৌকা জিতবে কত আসনে সেই হিসাব নিয়ে। প্রশাসন ব্যস্ত পাতানো নির্বাচনের কৌশল নিয়ে। মাফিয়া চক্রের ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট ব্যস্ত নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বাড়ানোর অপকৌশল নিয়ে। আর জনগণ লড়াই করছে জীবন বাঁচানোর যুদ্ধে। এর মধ্যে ধেয়ে আসছে প্রলংকরী বিপর্যয়। বেপরোয়া ও নজিরবিহীন আওয়ামী লুটপাটে ধ্বংস হয়ে গেছে বাংলাদেশের অর্থনীতি। দেশের ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভ ৯ বিলিয়ন ডলারে নিচে।’
রিজভী বলেন, ‘দেশের রিজার্ভ ক্রমেই কমে আসছে। এখন তলানিতে। এই অবস্থায় কার্যত দেউলিয়াত্ব ঘোষণার অপেক্ষা মাত্র। সারাদেশ ধাবিত হচ্ছে নিশ্চিত ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতির দিকে। লুটপাট ও দুর্নীতি করে ব্যাংকিং সেক্টর ফোকলা করে দিয়েছে আওয়ামী লুটেরা গোষ্ঠী। টাকার ঘাটতির কারণে দেশের শরিয়াহভিত্তিক পাঁচ ব্যাংকের আর্থিক লেনদেন সেবা বন্ধের উপক্রম হয়েছে। একটি রাষ্ট্রীয় সংস্থার সহযোগিতায় শরিয়াহভিত্তিক লাভজনক ব্যাংকগুলোর মালিক, চেয়ারম্যান, পরিচালকদের চোখ বেঁধে তুলে নিয়ে দখলের ইতিহাস রীতিমত রোমহর্ষক।’
তিনি বলেন, ‘বর্তমানে অসহনীয় মূল্যস্ফীতি, নজিরবিহীন ডলার সংকট, ডলারের বিনিময়ে টাকার ক্রমাগত অবমূল্যায়ন, ব্যাংকিং ও আর্থিক অব্যবস্থাপনা, সর্বগ্রাসী দুর্নীতি, বিদেশে অর্থপাচার, সুশাসনের অভাব, সামাজিক-রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক আয় বৈষম্য এবং সর্বপরি গণতন্ত্রহীনতা ও বর্তমান অর্থনৈতিক নৈরাজ্যে দেশ ও জনগণের মরণদশা। অর্থপাচার করে বিদেশে গাড়ি-বাড়ি ও সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছে। সিঙ্গাপুরসহ দেশে দেশে শ্রেষ্ঠ ধনীর তালিকাভুক্ত হচ্ছে। দেশে-বিদেশে বিলাসী জীবনযাপন করছে। আর অন্যদিকে গরিব আরও গরিব হচ্ছে। মানুষ সঞ্চয় ভেঙে খাচ্ছে। অর্থনীতি আজ মহাসংকটে নিমজ্জিত। রাষ্ট্র অকার্যকর হয়ে পড়েছে।’
জনগণকে নির্বাচন বর্জনের আহ্বান জানিয়ে রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘‘রাষ্ট্রীয় অর্থের বিনিময়ে খরিদ করা ‘কিংস পার্টি’, ভূঁইফোড়, তৃণভোজী, ডামি ও খুদকুঁড়ো পার্টির কথিত নির্বাচনী নাটক মঞ্চস্থ করার তামাশায় কেউ কোনো প্রক্রিয়ায় অংশ নিবেন না। ভোটকেন্দ্রে যাবেন না। ভোট দিবেন না। বিএনপি বা অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের নির্বাচনের সঙ্গে কোনোভাবে সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’