ডেস্ক রিপোর্ট
২৬ অক্টোবর ২০২৩, ১১:৪৬ অপরাহ্ণ
জলি তালুকদার:
দেশের শ্রমবাজারে নারী শ্রমিকের অংশগ্রহণ প্রতিদিন বেড়ে চলেছে। প্রধান রপ্তানি খাত পোশাকশিল্পে নারী শ্রমিকদের ভূমিকা সর্বজনবিদিত। চা, কৃষিতে নারী শ্রমিকদের অংশগ্রহণ চোখে পড়ার মতো। এ ছাড়া ট্যানারি, পাটকল, ইটভাটা, চাতালসহ বহু শিল্প ও অসংগঠিত খাতে নারী শ্রমিকরা দক্ষতার সঙ্গে কাজ করছেন। সম্প্রতি স্বয়ংক্রিয় ও উচ্চ প্রযুক্তি যুক্ত হওয়ায় সাময়িকভাবে সামান্য কমলেও পোশাকশিল্পে নারী শ্রমিকের সংখ্যা অনেক বেশি।
পোশাকশিল্প বিশালাকার হয়ে ওঠার পেছনে রয়েছে নারী শ্রমিকদের সাহসী অবদান এবং তাদের ওপর উঠতি পুঁজিপতিদের তীব্র শোষণের ইতিহাস। শ্রমবাজারে নারীর ব্যাপক অংশগ্রহণের কৃতিত্ব দাবি করতে গিয়ে অনেকেই, বিশেষ করে গার্মেন্ট মালিকরা এমন ভাব করেন যে তাদের হাতে কোনো ‘জাদুকরী চেরাগ’ আছে, যার ব্যবহারে পুরুষ শ্রমিকরা সব বিতাড়িত হচ্ছেন আর চেরাগের দৌলতে নারী শ্রমিকদের ব্যাপক কর্মসংস্থান হচ্ছে। বিষয়টি কার্ল মার্ক্স যেভাবে ব্যাখ্যা করেছেন, ‘যখন মেশিনারি পেশি শক্তিকে অপ্রয়োজনীয় করে তোলে তখন তুলনামূলকভাবে কম পেশি শক্তিসম্পন্ন যারা, তাদের কর্মসংস্থানের বিষয়টি সহজ হয়ে ওঠে। সুতরাং মেশিনারি ব্যবহারকারী পুঁজিপতিদের প্রথম নজর পড়ে নারী ও শিশুর শ্রমের ওপর। শ্রম ও শ্রমিকের সেই প্রবল বিকল্পটি সঙ্গে সঙ্গে রূপান্তরিত হয়ে যায় নারী-পুরুষ নির্বিশেষে শ্রমিক পরিবারের প্রত্যেক সদস্যকে পুঁজির প্রত্যক্ষ কর্তৃত্বের অধীনে ভর্তি করে নিয়ে মজুরি শ্রমিকদের সংখ্যা বৃদ্ধি করার একটা উপায়ে।’ পুঁজিবাদী রাষ্ট্র ব্যবস্থায় কোনো মহৎ উদ্দেশ্যে নয়; বরং নারীকে ঘর থেকে বাইরে আনার অন্যতম কারণ হচ্ছে সস্তায় খাটিয়ে অধিক মুনাফা অর্জন। পোশাকশিল্পের মালিকরা এর ব্যতিক্রম নন। তাদের উৎপাদন প্রক্রিয়াকে অব্যাহত রাখার জন্য কিছুটা নারী স্বাধীনতা তারা মানতেও বাধ্য হচ্ছেন। এই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে সামন্ত ব্যবস্থায় নারীর অধস্তন অবস্থান ও তাঁর সম্পর্কে যে দৃষ্টিভঙ্গি ছিল তার কিছুটা পরিবর্তন হয়েছে।
গ্রাম ও শহরতলির দরিদ্র পরিবারের নারীরা ঘরের বন্দিদশা থেকে নিজেদের মুক্ত করে ব্যাপক হারে কলকারখানা ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাজে নিয়োজিত হতে পেরেছেন। এর মধ্য দিয়ে ঘরের বন্দিদশা থেকে কিছুটা রেহাই পেলেও মজুরি দাসত্বের শৃঙ্খলে বাধা পড়েছেন শ্রমিক। আমাদের নারী শ্রমিকরা পরিবার বা স্বামীর অর্থনৈতিক আধিপত্য থেকে কিছুটা মুক্তি পেলেও মালিকদের শোষণের হিংস্র থাবা থেকে রক্ষা পাননি। অবশ্য আমাদের দেশে নারীদের অর্জিত আয় কীভাবে খরচ হবে, অনেক সময় তা নিয়ন্ত্রণ করেন নারী শ্রমিকের স্বামী অথবা পরিবারের কর্তাব্যক্তি। এমনকি তাঁর সময় কীভাবে ব্যয় হবে তাও নির্ধারণ হয় কর্মক্ষেত্র বা কারখানায় মালিক আর ঘরে পরিবারের কর্তা দ্বারা। পুঁজিবাদী ব্যবস্থায় ঘরে-বাইরে নারীর ততটুকু স্বাধীনতা রয়েছে যতটুকু কর্মক্ষেত্রে কারখানার মালিক আর ঘরে কর্তাব্যক্তিটির ইচ্ছে। এ ক্ষেত্রে নারী শ্রমিকরা দ্বিবিধ শোষণের শিকার।
এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে একেবারে প্রাত্যহিক জীবনে একজন নারী শ্রমিকের অভিজ্ঞতা খুব করুণ। একজন পোশাক শ্রমিককে যে ধরনের পরিবেশ ও ঘরে বসবাস করতে হয়, তা অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর এবং ছোট একটি ঘরে অনেককে গাদাগাদি করে থাকতে হয়। অন্যদিকে বস্তি এলাকায় বাড়ি ভাড়া বর্গফুটে হিসাব করলে রাজধানীর অনেক বিলাসবহুল অঞ্চলের তুলনায় বেশি হয়ে থাকে। সবচেয়ে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে থেকে, বাজারের পচা জিনিসটি খেয়ে কোনো রকমে বেঁচে আছেন আমাদের সবচেয়ে বেশি রপ্তানি আয় করা পোশাকশিল্পের শ্রমিকরা। বর্তমানে মূল্যস্ফীতি ও মুদ্রাস্ফীতির কারণে কোনো খাতের শ্রমিকের পক্ষেই সপ্তাহে অন্তত এক দিন ডিম বা মাছ খাওয়াও সম্ভব হচ্ছে না। এই মুহূর্তে মজুরি বৃদ্ধি ও বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে কোনো শ্রমিকের পক্ষে টিকে থাকাও সম্ভব নয়।
পোশাক কারখানার একজন নারী শ্রমিকের প্রতিদিনের রুটিন আসলে কেমন? প্রতিদিন ভোর ৫টায় ঘুম থেকে উঠে বাথরুম ও রান্নার জন্য সিরিয়াল দিতে হয়। নিজের ও পরিবারের সকালের নাশতা তৈরি শেষ করে সকাল ৮টার মধ্যে তাঁকে কারখানায় ঢুকতে হয়। রাতে ৮টা বা ১০টায় যখন কারখানা ছুটি হয়, তখন বাসায় ফিরে তাঁকে আবারও বাথরুম ও রান্নার জন্য সিরিয়াল দিয়ে রাতের খাবার প্রস্তুত ও গ্রহণ করতে রাত গভীর হয়ে যায়। ফলে একজন নারী শ্রমিক ঘুমের জন্যও ন্যূনতম সময় পান না। একজন মানুষকে সুস্থ-স্বাভাবিক জীবনযাপন বা চিন্তা করার জন্য যে সময় বা অবসর প্রয়োজন, তা আমাদের দেশের শ্রমিকরা একেবারেই পান না; যেখানে উন্নত বিশ্বে শ্রমিকরা সপ্তাহে পাঁচ দিন কাজ করছেন। ১৮৮৬ সাল অর্থাৎ ১৩৭ বছর আগে যে সংগ্রামের মধ্য দিয়ে মহান মে দিবস প্রচলিত হয়েছে, সেই সংগ্রামের মূল দাবির মধ্যে আট ঘণ্টা কাজের দাবি অন্যতম। আট ঘণ্টা কাজের দাবিতে শ্রমিকের লড়াই-সংগ্রামের দীর্ঘ ইতিহাস আছে। আমাদের দেশের শ্রমিকদের পক্ষে আট ঘণ্টা কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করা রীতিমতো দুরূহ ব্যাপার। উল্টো বাজারদরের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ মজুরি না পাওয়ায় শ্রমিকরা অতিরিক্ত কাজ করতে বাধ্য হন। অতিরিক্ত পরিশ্রম করার পরেও আজ তারা সংসার চালাতে পারছেন না। আন্তর্জাতিক বাজারে রপ্তানির ভিত্তিতে আমাদের দেশের পোশাকশিল্পের অবস্থান এক বা দুই নম্বরে থাকলেও পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে কম মজুরি পান এ দেশের শ্রমিকরা।
উল্লেখ্য, অতিরিক্ত পরিশ্রম ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে কাজ করতে গিয়ে নারীরা সন্তানধারণের ক্ষমতা হারানোসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন এবং কম বয়সে জীবনীশক্তি হারিয়ে ফেলছেন। বেশির ভাগ সময় অর্থের অভাব ও নিরাপত্তাজনিত কারণে শ্রমিকরা তাদের ছোট সন্তানকে নিজেদের সঙ্গে রেখে লালনপালন করতে পারেন না। গ্রামে আত্মীয়স্বজনের কাছে রেখে আদরের সন্তানকে বড় করতে হয়। এ ক্ষেত্রে সন্তান জন্মদান থেকে লালনপালন বেশির ভাগ সময় পুরো দায়িত্ব নারী শ্রমিককেই পালন করতে হয়। নারী শ্রমিকরা এখনও সর্বত্র মাতৃত্বকালীন ছুটি ও ছুটিকালীন বেতন ঠিকমতো পান না। নারী শ্রমিকরা মাতৃত্বকালীন ছুটি পান মাত্র চার মাস। সরকারি ও কোনো কোনো বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে নারীরা ছয় মাসের মাতৃত্বকালীন ছুটি পেয়ে থাকেন। এই বিষয়টি সব খাতের নারী শ্রমিকদের ক্ষেত্রে সমানভাবে প্রযোজ্য। নারী শ্রমিকদের সবেতন মাতৃত্বকালীন ছুটি ছয় মাস করা প্রয়োজন। অথচ এই বিষয়ে বর্তমান শ্রম আইনে যা আছে সেটুকু আদায় করতে প্রায়ই নারী শ্রমিককে আইনি লড়াইয়ে নামতে হয়।
নারী শ্রমিকদের যে ভয়ংকর বিষয়টি প্রায়ই মোকাবিলা করতে হয়, তা হচ্ছে যৌন হয়রানি। বিশেষ করে কারখানার ভেতরে প্রায়ই যৌন হয়রানি ও বুলিংয়ের শিকার হতে হয় নারী শ্রমিককে। এ ছাড়া কারখানা বা কর্মক্ষেত্রে যাওয়া-আসার পথে, গণপরিবহনে হরহামেশা যৌন নিপীড়ন ও হয়রানির শিকার হতে হয়। মূলত নারী শ্রমিকরা অধিকাংশ সময় নিজেদের রক্ষা করার জন্য এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। এসব ক্ষেত্রে রাষ্ট্র বা কারখানা কর্তৃপক্ষের ওপর যথেষ্ট চাপ প্রয়োগ করতে না পারলে কোনো ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করে না তারা। হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী যৌন নিপীড়নবিরোধী নীতিমালা কার্যকর করার পদক্ষেপ কারখানা কর্তৃপক্ষ গ্রহণ করছে না বললেই চলে। একই পরিস্থিতি অন্যান্য অপ্রাতিষ্ঠানিক বা ছোট আয়তনের কর্মক্ষেত্রের নারী শ্রমিকদেরও মোকাবিলা করতে হয়।
এটা স্পষ্ট যে পুঁজিবাদী রাষ্ট্র ব্যবস্থা পুরুষতান্ত্রিক। যে রাষ্ট্র ব্যবস্থায় নারী একই সঙ্গে দুই ধরনের শোষণের শিকার– শ্রেণি শোষণ ও পুরুষতান্ত্রিক ব্যবস্থার শোষণ। আমাদের মা-বোনদের অধিকাংশ সময় ঘরের একঘেয়ে ক্লান্তিকর সাংসারিক কাজ শেষ করে অফিস-আদালত কিংবা কারখানায় যেতে হয়। যে ‘ঘরের কাজ’-এর কোনো ধরনের সামাজিক ও অর্থনৈতিক স্বীকৃতি নেই। এভাবে ঘরে-বাইরে পুঁজিবাদী ও শোষণমূলক পুরুষতান্ত্রিক ব্যবস্থার চক্রে আমরা ঘুরপাক খাচ্ছি। নারীদের একদিকে শ্রমিক হিসেবে কারখানায় তীব্র শোষণের বিরুদ্ধে, অন্যদিকে কর্মক্ষেত্র, পরিবার ও সমাজে পুরুষতন্ত্রের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হচ্ছে।
বিদ্যমান ব্যবস্থার বৈপ্লবিক পরিবর্তনের জন্য শক্তিশালী নারীমুক্তি আন্দোলন আজ অনিবার্য হয়ে উঠেছে। আমাদের দেশের নারীমুক্তি আন্দোলন ইতিহাসের নানা কালপর্বে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখলেও আজ তা সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এখন কেউ কেউ কথিত ‘নারী উন্নয়নের’ ধারণা প্রচার করছেন, নারীমুক্তি আন্দোলনকে রাজনীতি থেকে বিচ্ছিন্ন করার পাঁয়তারা করছেন। আরেক দল বিদ্যমান ব্যবস্থা টিকিয়ে রেখে নারীকে স্বাধীনতা দিতে চান। তারা খুঁজতে চান না বিদ্যমান রাষ্ট্র ব্যবস্থায় ধর্ষণ, যৌন নিপীড়ন কেন বেড়েছে, কেন পরিবার সমাজ ও রাষ্ট্রে নারীর অধস্তন অবস্থার গুণগত পরিবর্তন হচ্ছে না! উত্তরাধিকার প্রশ্নে সম্পত্তিতে নারীর সমানাধিকার কেন নেই? প্রশ্নগুলো নিঃসন্দেহে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করতে হবে এবং নারীমুক্তির বিষয়টি একটি রাজনৈতিক আন্দোলন।
পুঁজিবাদের জন্মলগ্ন থেকে নারী অধিকারের প্রশ্নে নানা পথে নারী আন্দোলন অগ্রসর হচ্ছে। আজকের সাম্রাজ্যবাদী দুনিয়ায় সর্বত্র কর্তৃত্ব করছে করপোরেট পুঁজি। এই করপোরেট পুঁজি নারী-পুরুষ নির্বিশেষে যেমন তীব্র শোষণ চালাচ্ছে, অন্যদিকে নারীকে পরিণত করেছে ভোগের সামগ্রীতে। সারা দুনিয়ায় তার বাজার বিস্তৃত করতে গিয়ে নারীর প্রতি আজ যে সামাজিক মনস্তত্ত্ব সৃষ্টি করেছে, নারীকে প্রতি মুহূর্তে তা মোকাবিলা করতে হচ্ছে। সাম্রাজ্যবাদ ও তাদের দেশীয় সহযোগীদের ছত্রছায়ায় উগ্র ধর্মীয় গোষ্ঠীর আক্রমণের প্রধান লক্ষ্য নারী।
আমরা দেখেছি হেফাজতে ইসলামের এক নেতা নারী শ্রমিকদের কারখানায় না যাওয়ার ফতোয়া দিয়েছিলেন। ২০১১ সালে ‘নারী উন্নয়ন নীতিমালায়’ সম্পত্তির সমানাধিকারের বিষয়ে কিছু না থাকা সত্ত্বেও ধর্মীয় নেতাদের আস্ফালনকে আশ্রয় ও প্রশ্রয় দেওয়া হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর পরিবর্তে শাসক দলগুলো পৃষ্ঠপোষকতা করে চলেছে। উচ্চবিত্ত ও মধ্যবিত্ত নারীদের একটা অংশ তাঁর শ্রেণি অবস্থান থেকে, অর্থাৎ পুঁজিবাদী ব্যবস্থা কিংবা করপোরেট পুঁজির বিরুদ্ধে নয়; বরং নিজেদের কিছু সামাজিক অসুবিধার জন্যই পুরুষতন্ত্রের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলে থাকেন। নারীমুক্তির সংগ্রামকে কখনও কখনও তারা সস্তা কতগুলো স্লোগান কিংবা কথিত উন্নয়নের ধারণার মধ্যে আবদ্ধ রাখতে চান। শ্রম শোষণ, পুঁজিবাদী ব্যবস্থা কিংবা সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান দেখা যায় না।
নারীমুক্তি আন্দোলন শক্তিশালী করতে হলে আজ তার শত্রু-মিত্র সঠিকভাবে চিহ্নিত হওয়া জরুরি। আমাদের পোশাকশিল্পসহ অন্যান্য খাতের নারী শ্রমিকদের লড়াই পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রে ইতিবাচক পরিবর্তনের সূচনা করেছে। পুঁজিবাদ শুধু মুনাফার লোভে যে নারীকে ঘর থেকে বের করেছে, সেই নারী আজ পুঁজিবাদী পুরুষতন্ত্রের কুৎসিত চেহারা উন্মোচন করে তার বিরুদ্ধে সংগ্রামকে আরও তীব্রতর করছেন। নারীমুক্তির লড়াই শুধু অর্থনৈতিক দাবি কিংবা কারখানায় যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে সংগ্রামে সীমাবদ্ধ রাখলে চলবে না। আঘাত করতে হবে সমগ্র পুরুষতান্ত্রিক পুঁজিবাদী ব্যবস্থাকেই।
আজ নারীমুক্তির আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী মধ্যবিত্ত নারীদের অগ্রসর অংশকে নিজের শ্রেণি সুবিধার বাইরে এসে শ্রমিক নারীর লড়াইয়ে যুক্ত হতে হবে। সেই আন্দোলন ও সংগঠনের ভেতরে প্রচ্ছন্ন পুরুষতান্ত্রিক চেতনার বিরুদ্ধেও সচেতন সংগ্রাম চালাতে হবে। তবেই নারীমুক্তির পথে অগ্রসর হওয়া সম্ভব।
লেখক: শ্রমিকনেতা ও সিপিবির কেন্দ্রীয়নেতা।