ডেস্ক রিপোর্ট
২০ জানুয়ারি ২০২৪, ৯:৫৫ অপরাহ্ণ
অধিকার ডেস্ক: ২০ জানুয়ারি শহীদ আসাদ দিবস। ১৯৬৯-এর গণ-অভ্যুত্থানের অগ্রনায়ক শহীদ আসাদের ৫৬-তম মৃত্যুবার্ষিকী পালন করে জাতীয় ছাত্রদল ও শাবিপ্রবি শাখা। পাকিস্তানি স্বৈরশাসক আইয়ুব খান সরকারের বিরুদ্ধে এ দেশের ছাত্রসমাজের ১১দফা কর্মসূচীর মিছিলে নেতৃত্ব দিতে গিয়ে পুলিশের গুলিতে জীবন দেন ছাত্রনেতা আমানুল্লাহ মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান।
জাতীয় ছাত্রদল সিলেট জেলা কমিটি ও শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার যৌথ উদ্যেগে আলোচনাসভায় জেলা কমিটির আহবায়ক শুভ আজাদ শান্ত’র সভাপতিত্বে ও শাবিপ্রবি শাখার সাধারণ সম্পাদক তুখোর আরেং এর পরিচালনায় সন্ধ্যা ৫টায় সুরমা মার্কেটস্থ এনডিএফ কার্যালয়ে অনুষ্টিত হয়।
সভায় অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট সিলেট জেলা কমিটির যুগ্ন সম্পাদক মো. ছাদেক মিয়া। সভার শুরুতে শহীদ আসাদের জীবনীর উপর প্রবন্ধ পাঠ করেন, জাতীয় ছাত্রদল শাবিপ্রবি শাখার সদস্য জহুরুল।
অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, জাতীয় ছাত্রদল শাবিপ্রবি শাখার সহ-সভাপতি মো. মিলন, ওয়াসিম মুহাম্মদ শামস্, জুয়েল চাকমা, সাংগঠনিক সম্পাদক তুখোড় আড়েং, সহ-সাধারণ সম্পাদক শুভ্রদেব হাজং, জেলা কমিটির সদস্য, সৃজন চন্দ্র, আকাশ আহমদ (বিজয়), সোনিয়া আক্তার, সিলেট জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আনছার আলীসহ প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, শহীদ আসাদ একটি প্রেরণা, একটি সংগ্রাম আর আদর্শের নাম। আসাদের পথ, জাতীয় মুক্তি, স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার শপথ। উনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থান ছিল শ্রমজীবী মানুষের শোষণ বঞ্চনার চির অবসানের আকাক্ষায় প্রত্যয়ী জনগনের দীর্ঘ লড়াই সংগ্রামের পরিণতির জাগানিয়া অভ্যুত্থান। সা¤্রাজ্যবাদী শক্তিকে প্রতিহত করতে গিয়ে শহীদ হয়েছেন আসাদ। অথচ আজ আন্তঃসা¤্রাজ্যবাদী দ্বন্ধে সা¤্রাজ্যবাদী বিশ্বযুদ্ধ পরিকল্পনায় বাংলাদেশকে যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত করার ষড়যন্ত্র ও অপতৎপরতা চলছে। সা¤্রাজ্যবাদী দালালদের স্বৈরাচারী রাষ্ট্রযন্ত্র তার উলঙ্গ বহ্নিপ্রকাশ ঘটছে যার বিপরীতে আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে শহীদ আসাদের সংগ্রামী প্রেরণার মধ্য দিয়ে জাতীয় মুক্তি, স্বাধীনতা ও গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের পাশাপাশি ছাত্র আন্দোলনকে সমাজ পরিবর্তনের আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত করা। চলমান বিশ্ব ¯œায়ুযুদ্ধের সময় সরকার এবং বিরোধী দলগুলোর পাল্টাপাল্টি অবস্থানের মধ্য দিয়ে শেষ হয় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। চীন-রাশিয়া-ভারতসহ বেশ কিছু দেশ সরকারকে শুভেচ্ছা পাঠায়। যার বিপরীতে অবস্থান নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। সা¤্রাজ্যবাদী শক্তিগুলো তাদের সবচেয়ে উপযোগী দালাল শক্তিকে ক্ষমতায় আনতে চায়। যার ফলশ্রæতিতে আমরা দেখতে পাই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে জনগণের মতামতকে উপেক্ষা ও বিদেশীদের হস্তক্ষেপ। রুশ-ইউক্রেন, ফিলিস্তিনে-ইসরায়েলী আগ্রাসনের প্রভাব বিশ্বব্যাপী পড়ছে। প্যালেস্টাইনে আগ্রাসন-দখলদারিত্ব ধারাবাহিক হত্যাকান্ডের জন্য দায়ী মার্কিনের নেতৃত্বে পাশ্চাত্য এবং তাদের স্বার্থরক্ষাকারী ইসরাইলের বিরুদ্ধে এদেশ সহ সারাবিশে^র সা¤্রাজ্যবাদ বিরোধী শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।
বক্তারা আরোও বলেন, দেশের প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থার মাধ্যমে জনগোষ্ঠীর কোন উন্নয়ন বা মজ্ঞল কামনা সম্ভব নয়। ব্রিটিশদের এই কেরানি তৈরির শিক্ষাব্যবস্থার অবসান ঘটিয়ে আধুনিক বিজ্ঞান ভিত্তিক গণমুখী শিক্ষাব্যবস্থার লড়াই সংগ্রামকে শক্তিশালী করা এবং তাতে অংশগ্রহণ করা সকলের প্রয়োজন। আজকের ছাত্র সমাজের দায়িত্ব হচ্ছে গণতান্ত্রিক ও বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে জনগণের উপর ক্রিয়াশীল সকল সা¤্রাজ্যবাদী, সামন্তবাদী ও আমলা-দালাল পুজিঁর শাসন-শোষণ উচ্ছেদের মধ্য দিয়ে গণতান্ত্রিক সমাজ-সরকার-সংবিধান প্রতিষ্ঠার আন্দোলন-সংগ্রামের সাথে আসাদের আদর্শকে ধারণ করে সকল সা¤্রাজ্যবাদী শক্তির বিরুদ্ধে সকল সচেতন ছাত্র-ছাত্রীদের এগিয়ে আসার আহবান জানান।