ডেস্ক রিপোর্ট
১২ নভেম্বর ২০২৩, ৭:৩৮ অপরাহ্ণ
অধিকার ডেস্ক: বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন সিলেটের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় লিডিং ইউনিভার্সিটির স্থাপত্য বিভাগের দুই শিক্ষককে পুনর্বহালের আদেশ দিয়েছে। সেই সাথে ট্রাস্টিবোর্ড থেকে ভারতীয় নাগরিকসহ দুজনকে ২ মাসের মধ্যে বাদ দিয়ে নতুন করে বোর্ড গঠনেরও নির্দেশনা দিয়েছে।
ইউজিসির পরিচালক মো. ওমর ফারুক স্বাক্ষরিত (স্মারক নম্বর: ৩৭.01.0000.13181.048.20.1541) ১২ নভেম্বর ২০২৩ তারিখের চিঠিতে এসব নির্দেশনা প্রদান করা হয়।
নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়, সাম্প্রতিক সময়ে লিডিং ইউনিভার্সিটি’র বিভিন্ন অনিয়ম এবং বিশ্ববদ্যিালয়টির উপাচার্য এবং বিওটির চেয়ারম্যান এর পরস্পরের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগসমূহ তদন্তে গঠিত কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী, লিডিং ইউনিভার্সিটি’র আর্কিটেকচার বিভাগের অধ্যাপক সৈয়দা জারিনা হোসেইন এবং সহযোগী অধ্যাপক স্থপতি রাজন দাস এর বহিষ্কারাদেশ null and void ঘোষণাপূর্বক সকল সুযোগসুবিধাসহ তথাকথিত বহিস্কারাদেশ সাক্ষরের তারিখ হতে স্বপদে পূর্নবহাল করার নির্দেশ প্রদান করা হয়। সেইসাথে, বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১০ এর কোন এখতিয়ারবলে তাদের চাকুরিচ্যুত করা হয়েছে তার কারনদর্শানো সহ ব্যাখ্য তিন কার্য দিবসের মধ্যে কমিশনে প্রেরণ করারও আদেশ দিয়েছে কমিশন।
ভারতীয় নাগরিক সাদিকা জান্নাত চৌধুরী ও নাবালক সাইদ আজমাইন আবদুল হাই-কে বিশ্ববিদ্যালয়টির বোর্ড অব ট্রাস্টিজ থেকে বাদ দিয়ে আগামী দুই মাসের মধ্যে জয়েন্ট স্টক কোম্পানী থেকে নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা ও আগামী তিন মাসের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়টির অনিরীক্ষিত অর্থ বছর-এর নিরীক্ষা করার জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হয়। সেই সাথে ইউনিভার্সিটি’র উপাচার্য অধ্যাপক কাজী আজিজুল মওলা-কে চুক্তি অনুযায়ী বেতনভাতাসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধাদি প্রদানের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা প্রদান করা হয়।
ইউজিসির পরিচালক ওমর ফারুক স্বাক্ষরিত চিঠিতে সকল বিভাগে আগামী ৩ মাসের মধ্যে যোগ্যতাসম্পন্ন প্রয়োজনীয়সংখ্যক শিক্ষক নিয়োগ এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১০ এর ৩৩(৩) ধারা মোতাবেক খণ্ডকালীন শিক্ষক সংখ্যা নিশ্চিত করার জন্যও প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য্য কাজী আজিজুল মাওলা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবৈধ ট্রাস্টি বোর্ড, ১৭ বছর ধরে সরকারের স্থায়ী অনুমোদন না থাকা এবং লিডিং ইউনিভার্সিটিতে ট্রেজারার বনমালী ভৌমিকের সীমাহীন দুর্নীতি নিয়ে লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগে ইউনিভার্সিটির ৬৮টি লেনদেনে অনিয়মের বিষয়ে জানতে রেজিস্ট্রার বরাবরে কমিশনের দেওয়া চিঠিসহ ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য সাদিকা জান্নাত চৌধুরী (পাসপোর্ট নং K 3920850) ভারতের নাগরিকের বিষয়টি উল্লেখ করেন। অন্যদিকে, জালিয়াতি মামলায় ১৪ বছরের সাজাপ্রাপ্ত ট্রাস্টিবোর্ডের চেয়ারম্যান রাগিব আলীও উপাচার্য্যের বিরুদ্ধে ইউজিসিতে অভিযোগ দেন।
অভিযোগের বিষয়ে সরেজমিন তদন্ত করতে ড. কাজী আবু তাহেরের নেতৃত্বে ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি ইউজিসির তদন্ত কমিটি গত ২৭ জুলাই ক্যাম্পাস পরিদর্শন করেন। এসময় তারা বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান রাগীব আলী, ট্রেজারার বনমালী ভৌমিক ও উপচার্য ড. কাজী আজিজুল মাওলার সাথে পৃথক পৃথক বৈঠক করেন। এর মধ্যে গত অক্টোবরে উপাচার্যের যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানকালে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য হিসেবে ট্রেজারার বনমালী ভৌমিক বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ সিন্ডিকেট মিটিং পরিচালনাসহ বিভিন্ন বিতর্কিত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন যা তার প্রাপ্ত দায়িত্বের এখতিয়ার বহির্ভুত ও বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় আইনের পরিপন্থী।