ডেস্ক রিপোর্ট

১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১০:২৪ অপরাহ্ণ

মাহসা আমিনির মৃত্যুর এক বছর, ফের বিক্ষোভের আশঙ্কা

আপডেট টাইম : সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২৩ ১০:২৪ অপরাহ্ণ

শেয়ার করুন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:: ইরানের নীতিপুলিশের হেফাজতে মাহসা আমিনি নামে এক তরুণীর মৃত্যু হয়। এরপর সরকারবিরোধী তীব্র বিক্ষোভ শুরু হয় ইরানে। এই ঘটনার এক বছর উপলক্ষে জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানালেন, বার্লিন ইরানের পাশে আছে। ইরানের জনগণ একা নয়।

জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবক মাহসা আমিনির প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীর প্রাক্কালে ইরানের জনগণের সঙ্গে বার্লিনের সংহতি প্রকাশের অঙ্গীকার করেছেন।

২২ বছর বয়সি এই কুর্দি নারীকে ইরানের নীতিপুলিশ আটককরে। হিজাব ভুলভাবে পরার অভিযোগ আনা হয় তার বিরুদ্ধে। ২০২২ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর পুলিশি হেফাজতে তার মৃত্যু হয়। এরপর ইরান সরকারের বিরুদ্ধে বছরের পর বছর ধরে জমে থাকা ক্ষোভ চরম আকার নেয়। ‘নারী, জীবন, স্বাধীনতা’ এই তিনটি শব্দই বারবার শোনা গেছে সেইসময় ইরানের প্রতিবাদী জনগণের স্লোগানে। নিরাপত্তা বাহিনী সহিংসত দমন-পীড়ন চালায় প্রতিবাদকারীদের ওপর।

বেয়ারবক বলেন, ইরানের বিক্ষোভ খবরের শিরোনাম থেকে অদৃশ্য হয়ে গেলেও, আমরা ইরানের জনগণকে একা ফেলে রাখবো না। ব্রাসেলস, নিউইয়র্ক ও জেনেভাতে ইরানের জনগণের ভাগ্য নির্ধারণের বিষয়টিকে এজেন্ডায় রাখবো।

জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ইইউ ইরানি কর্মকর্তাদের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ও জাতিসংঘ মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায় নথিভুক্ত করছে যাতে দোষীদের বিচারের আওতায় আনা যায়।

অধিকার গোষ্ঠীগুলোর মতে, ইরানে বিক্ষোভকারীদের ওপর দমন-পীড়নে ৫০০ জনেরও বেশি সাধারণ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। হাজার হাজার মানুষকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

ইইউ শুক্রবার তার নিষেধাজ্ঞার কালো তালিকায় রেভোলিউশনারি গার্ডের একজন কমান্ডারসহ চার ইরানি কর্মকর্তাকে যুক্ত করেছে। দমন-পীড়নে ভূমিকা রাখার অভিযোগে এরইমধ্যে প্রায় ১৭০টি ইরানি কোম্পানি ও সংস্থার ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা ও সম্পদ জব্দ করে ইইউ।

চারটি সংশোধনাগার, রেভোলিউশনারি গার্ডের সঙ্গে যুক্ত একটি সংবাদ সংস্থা ও ইন্টারনেটের ওপর নজরদারি করা সুপ্রিম কাউন্সিল অব সাইবারস্পেসকেও কালো তালিকায় রাখা হয়।

এক বিবৃতিতে ইইউ সদস্য দেশগুলো বলেছে, ইরানের নারী ও পুরুষদের মৌলিক অধিকারের প্রতি তাদের দৃঢ় সমর্থন পুনর্নিশ্চিত করছে।

ব্রিটেন, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়াও শুক্রবার ইরানি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নতুন নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা করেছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, এই পদক্ষেপের লক্ষ্য হলো ইরানের সবচেয়ে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের কয়েকটা শাস্তি দেওয়া।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নিষেধাজ্ঞাগুলো ইরানের দমন-পীড়নের সঙ্গে যুক্ত দুই ডজনেরও বেশি ব্যক্তি ও সংস্থাকে লক্ষ্য করে দেওয়া হয়েছে।

বাইডেন একটি বিবৃতিতে বলেন, ইরানের জনগণ একাই নিজেরা দেশের ভাগ্য নির্ধারণ করবে। তবে যুক্তরাষ্ট্র তাদের পাশে দাঁড়াতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

অন্যদিকে, ইরানকে অস্থিতিশীল করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলকে দায়ী করেছে তেহরান।

বেয়ারবক বলেন, ইরানের গুরুতর ও ক্রমাগত আইন লঙ্ঘনের প্রত্যক্ষ পরিণতি এই নিষেধাজ্ঞা। জার্মানির শীর্ষ কূটনীতিক যদিও বলেছেন যে, কূটনৈতিক সমাধানের জন্য উন্মুক্ত জার্মানি।

এদিকে আমিনির মৃত্যুবার্ষিকীতে নতুন করে অস্থিরতা তৈরি হতে পারে বলে নিরাপত্তা বাহিনী প্রস্তুতি নিচ্ছে ইরানে।

অধিকারকর্মীরা বলেছেন, কুর্দিস্তানের পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশে আমিনির নিজ শহরে কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

নরওয়ের মানবাধিকার গোষ্ঠী হেনগাওয়ের একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বেশ কয়েকটি কুর্দি শহর সাম্প্রতিক দিনগুলোতে আতঙ্কে রয়েছে। পরিস্থিতি যুদ্ধ ঘোষণার মতো বলে মনে হচ্ছে।

সূত্র: ডয়েচে ভেলে

শেয়ার করুন