ডেস্ক রিপোর্ট

২৯ জুলাই ২০২৩, ১:৫৬ অপরাহ্ণ

মাতুয়াইল, ধোলাইখাল ও উত্তরায় পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষ

আপডেট টাইম : জুলাই ২৯, ২০২৩ ১:৫৬ অপরাহ্ণ

শেয়ার করুন

অধিকার ডেস্ক: ঢাকার ধোলাইখাল, উত্তরা ও মাতুয়াইলে পুলিশ ও বিএনপি নেতা-কর্মীদের মধ্যে ধাওয়া, পাল্টা ধাওয়া এবং সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বেলা ১টায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত মাতুয়াইলে সংঘর্ষ চলছিল।

পুলিশ বিএনপির নেতা-কর্মীদের অবস্থান কর্মসূচি থেকে সরিয়ে দিতে চাইলে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে কয়েক জন আহত হয়েছেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। আহতের মধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় রয়েছেন।

সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশমুখে আজ বেলা ১১টা থেকে পাঁচ ঘণ্টার ‘অবস্থান’ কর্মসূচি পালন করছে বিএনপি। বিকেল ৪টা পর্যন্ত এই কর্মসূচি চলার কথা।

প্রতিটি জায়গায় প্রথম আলোর প্রতিবেদক ও ফটো সাংবাদিকেরা রয়েছেন। তাঁরা জানিয়েছেন, গাবতলী, উত্তরা, নয়াবাজার ও শনির আখড়া এলাকায় এই অবস্থান কর্মসূচির আগে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী ও পুলিশ সেখানে অবস্থান নেয়। বেলা ১১টার পর থেকে বিএনপির নেতা-কর্মীরা জড়ো হতে থাকেন।

ধোলাইখালে সংঘর্ষ
পুরান ঢাকার ধোলাইখালে বেলা ১১টার পরে কয়েকশ বিএনপির নেতা-কর্মী লাঠিতে জাতীয় পতাকা বেঁধে সড়কের একপাশে অবস্থান নেন। তাঁরা সরকারবিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছিলেন।

বিএনপির এই কর্মসূচি পালনের কথা ছিল পুরান ঢাকার নয়াবাজারে। তবে সেখানে আজ সকাল থেকে অবস্থান নেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। পাশাপাশি বিপুলসংখ্যক পুলিশ সদস্যও সেখানে মোতায়েন করা হয়।

বিএনপির নেতা-কর্মীরা নয়াবাজার থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে ধোলাইখাল এলাকায় অবস্থান নেন। সেখানেই পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

সরেজমিনে দেখা যায়, ধোলাইখালে সকাল সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশ বিএনপির নেতা-কর্মীদের ধাওয়া দিয়ে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। প্রথমে পুলিশের ধাওয়ায় বিএনপির নেতা-কর্মীরা পিছিয়ে যায়। পরে বিএনপির নেতা-কর্মীরা সংঘটিত হয়ে পুলিশকে ধাওয়া দেয়।

ঘটনাস্থলে ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, ঢাকা বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালামসহ নেতারা ছিলেন। তাঁরা নেতা-কর্মীদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেছিলেন। তবে তা সম্ভব হয়নি।

ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় আহত হন। পুলিশ তাঁকে একটি দোকানের ভেতরে নিয়ে যায়। পরে তাঁকে একটি পুলিশ ভ্যানে করে সরিয়ে নেওয়া হয়।

সর্বশেষ বেলা সাড়ে ১২টার দিকে ধোলাইখালে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সরিয়ে দেয় পুলিশ।

উত্তরায় সংঘর্ষ
বিএনপি নেতাকর্মীদের উপর কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে পুলিশ। উত্তরা, ঢাকা
বিএনপি নেতাকর্মীদের উপর কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে পুলিশ। উত্তরা, ঢাকাছবি: তানভীর আহাম্মেদ
ঢাকার উত্তরায়ও পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল ১১টার কিছু পরে বিএনপির কিছু নেতা-কর্মী উত্তরার বিএনএস সেন্টারের কাছে জড়ো হয়। তাদের পুলিশ সরে যাওয়ার জন্য বলে। কিছুক্ষণ পরে বিএনপির আরও নেতা-কর্মী সেখানে যান।

একপর্যায়ে তাঁরা রাস্তার মাঝখানে অবস্থান নিয়ে বক্তব্য দেওয়া শুরু করেন। তখন তিনটি বিস্ফোরণের শব্দ হয়। তারপর পুলিশ কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে এবং ধাওয়া দিয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে।

বিএনপির নেতা-কর্মীরা পিছু হটে উত্তরার ৭ নম্বর সেক্টরের বিভিন্ন গলিতে অবস্থান নেন। সেখান থেকে তাঁরা পুলিশের দিকে ইটপাটকেল ছোড়া শুরু করেন। কিছুক্ষণ পর আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা গিয়ে বিএনপি নেতা-কর্মীদের ধাওয়া দেয়।

বেলা ১টায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত পরিস্থিতি শান্ত। পুলিশ বিএনএস সেন্টারের সামনে অবস্থান করছিল।

পুলিশ দাবি করেছে, যে তিনটি বিস্ফোরণের শব্দ হয়েছে সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ার কারণে। এদিকে যমুনা টেলিভিশনের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক শরীফুল ইসলাম খান ঘটনাস্থলে আহত হন। একটি স্প্রিন্টার তাঁর গাঁয়ে আঘাত করে।

যুগান্তরের স্টাফ রিপোর্টার তারিকুল ইসলাম বলেছেন, ভিডিও করার কারণে পুলিশ তাঁর মুঠোফোন নিয়ে গেছে।

মাতুয়াইলে কাঁদানে গ্যাস
সকালে ১১টার পরে মাতুয়াইল মাতৃ সদন হাসপাতালের সামনের সড়কে বিএনপির কয়েকশ নেতা-কর্মী লাঠিসোঁটা নিয়ে অবস্থান নেন ৷ পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট ছুড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে ৷ জলকামান থেকে পানি ছুড়তেও দেখা গেছে। দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া চলছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, বেলা পৌনে ১টায় পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ চলছিল। সেখানে একটি বাসে আগুন দেওয়া হয়েছে।

শেয়ার করুন