ডেস্ক রিপোর্ট

১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:৪৫ অপরাহ্ণ

মহান শিক্ষা দিবসে মাগুরায় ছাত্র ফ্রন্টের সমাবেশ

আপডেট টাইম : সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২৪ ১১:৪৫ অপরাহ্ণ

শেয়ার করুন

অধিকার ডেস্ক: ১৭ সেপ্টেম্বর মহান শিক্ষা দিবস উপলক্ষে সর্বজনীন, বৈষম্যহীন, বিজ্ঞানভিত্তিক, গণতান্ত্রিক শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করা, শিক্ষার মান বাড়ানো, ব্যয় কমানো, শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ বন্ধ করাসহ বিভিন্ন দাবিতে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট মাগুরা জেলা শাখার উদ্যোগে আজ ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ সকাল ১১টায় চৌরঙ্গী মোড়ে মাগুরা জেলা প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট মাগুরা জেলা শাখার সংগঠক নূর আলম শোভনের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন নাজির আহমদ ডিগ্রি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ কাজী নজরুল ইসলাম ফিরোজ, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ মাগুরা জেলা শাখার আহ্বায়ক প্রকৌশলী শম্পা বসু, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য লাবনী সুলতানা, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট মাগুরা জেলা শাখার সাবেক আহ্বায়ক ভবতোষ বিশ্বাস জয় । সভা পরিচালনা করেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট মাগুরা জেলা শাখার সংগঠক রকিব মিয়া।

বক্তাগণ বলেন,”আজ ১৭ সেপ্টেম্বর, মহান শিক্ষা দিবস।১৯৬২ সালে তৎকলীন পাকিস্তানি সামরিক জান্তা আইয়ুব সরকার সেসময়কার শিক্ষা সচিব এসএম শরিফের নেতৃত্বে একটি শিক্ষা কমিশন গঠন করে। এই শরিফ কমিশন এক চরম বৈষম্যমূলক শিক্ষানীতি প্রণয়ন করেছিল। ‘টাকা যার শিক্ষা তার’ এ মূলমন্ত্রকে ধারণ করে শিক্ষাকে পণ্যে পরিণত করার প্রস্তাব তুলে ধরেছিল এই শিক্ষা কমিশন। শরীফ কমিশনের রিপোর্টে শিক্ষাকে ব্যয়বহুল, বাণিজ্যিক ও সাম্প্রদায়িক মোড়কে হাজির করা হয়েছিল। মাধ্যমিক স্তরে ৬০ ভাগ ছাত্রবেতন থেকে আদায়, উচ্চ শিক্ষার বেতন বৃদ্ধি, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বায়ত্তশাসন খর্ব করে পূর্ণ সরকারি নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা, ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ, বাংলা ভাষাকে উর্দু বা আরবি করণের জন্য আলাদা কমিশন গঠনের প্রস্তাবনা ছিল এই শিক্ষা কমিশনের। এই গণবিরোধী, বৈষম্যমূলক শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে তৎকলীন ছাত্রসমাজ ১৯৬২ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর হরতাল আহ্বান করে। এর সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে পেশাজীবী, শ্রমিক, কৃষকসহ সর্বস্তরের মানুষ। ১৭ সেপ্টেম্বর সকাল ৯টায় বের হয় ছাত্র-জনতার বিরাট মিছিল। মিছিলটি যখন হাইকোর্ট পার হয়ে আবদুল গণি রোডে প্রবেশ করে তখন অতর্কিতভাবে পুলিশ গুলিবর্ষণ শুরু করে। শহীদ হন ছাত্র বাবুল, বাস কন্টাক্টর গোলাম মোস্তফা, গৃহভৃত্য ওয়াজিউল্লাহ, শ্রমিক সুন্দর আলীসহ নাম না জানা আরও অনেকে। ছাত্র জনতার সম্মিলিত প্রতিরোধে আইয়ুব সামরিক জান্তার সরকার এ শিক্ষানীতি বাস্তবায়ন থেকে পিছু হটে। এরপর থেকে ১৭ সেপ্টেম্বর শিক্ষা দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে ।”

বক্তাগণ আরও বলেন, “আজ যখন আমরা ৬২তম শিক্ষা দিবস পালন করছি, তখন কতটুকু অর্জিত হয়েছে শিক্ষা দিবসের চেতনা? যে “টাকা যার শিক্ষা তার” নীতির বিরুদ্ধে ছিল এই আন্দোলন আজও তো দেশের শিক্ষানীতি তাই। বরং শিক্ষাক্ষেত্রে বৈষম্য আরও বেড়েছে । টাকা থাকলে ভালো শিক্ষা পাওয়া যায়, টাকা না থাকলে শিক্ষা পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। শিশু শ্রম, বাল্যবিবাহ বেড়েছে ভয়াবহভাবে।

দারিদ্র্যের কারণে শিক্ষাক্ষেত্র থেকে ঝরে পরছে অনেক শিক্ষার্থী। আমরা শিক্ষাক্ষেত্রে সকল ধরনের বৈষম্যের অবসান চাই।”

সভা থেকে নিম্নলিখিত দাবি জানান হয় …

# সর্বজনীন, বৈষম্যহীন, বিজ্ঞানভিত্তিক, গণতান্ত্রিক শিক্ষা ব্যবস্থা চালু কর

# শিক্ষার মান বাড়াও, ব্যয় কমাও। শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ বন্ধ কর

# মাগুরায় হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজে নিয়মিত ক্লাস, শিক্ষক সংকট নিরসন, লাইব্রেরি-ল্যাবরেটরির মান উন্নয়নসহ শিক্ষার মান সার্বিকভাবে উন্নয়ন করে ধাপে ধাপে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর কর

# শিক্ষা শেষে উপযুক্ত কর্মসংস্থান নিশ্চিত কর। মাগুরা টেক্সটাইল মিল চালু কর। মাগুরা জেলায় কৃষিভিত্তিক শিল্প কারখানা নির্মাণ কর

শেয়ার করুন