ডেস্ক রিপোর্ট
৩০ জুলাই ২০২৪, ৭:৩২ অপরাহ্ণ
অধিকার ডেস্ক: কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সহিংসতার জেরে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক হয়ে আসলেও নিরাপত্তার কারণে ট্রেন বন্ধ রয়েছে। তবে বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) থেকে স্বল্প দূরত্বে ট্রেন চলাচল করবে বলে জানিয়েছে রেলওয়ে।
মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বুধবার (৩১ জুলাই) থেকে সরকারি অফিস স্বাভাবিক সময়সূচিতে চলবে। এদিকে বাংলাদেশ রেলওয়ে জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) থেকে কারফিউ শিথিলের সময়ে স্বল্প দূরত্বে ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে আন্তঃনগর ট্রেন চলাচলের বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।
মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) দুপুরে রেল ভবনের সভাকক্ষে এক বৈঠকে বাংলাদেশ রেলওয়ের ট্রেন চলানোর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। রেলমন্ত্রী জিল্লুল হাকিমের সভাপতিত্বে এ বৈঠকে রেলপথ সচিব, রেলওয়ে মহাপরিচালকসহ রেলের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা, পুলিশ ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
সূত্রমতে, বৃহস্পতিবার থেকে কারফিউ শিথিল থাকার সময়ে স্বল্প দূরত্বের যাত্রীবাহী মেইল, লোকাল ও কমিউটার ট্রেন চলাচল শুরু করবে। দুই-তিন দিন পর আন্তঃনগর ট্রেন চালুরও পরিকল্পনা রয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রেলের মহাপরিচালক সরদার সাহাদাত আলী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, মেইল, লোকাল ও কমিউটার ট্রেন চলানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পরে আন্তঃনগর ট্রেন চালুর সিদ্ধান্ত আসবে।
রেলপথ মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা ইফতেকার আলম রাজন বলেন, কারফিউ শিথিল থাকা অবস্থায় বৃহস্পতিবার থেকে স্বল্প দূরত্বে ট্রেন চলাচল শুরু হবে। তবে আন্তঃনগর ট্রেন চলাচলের বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।
এর আগে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সহিংসতার জেরে গত ১৮ জুলাই থেকে যাত্রী ও মালবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এরপর সরকারি নির্দেশনায় অনির্দিষ্টকালের জন্য সারা দেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ ঘোষণা করে রেল কর্তৃপক্ষ।
গত ২৪ জুলাই রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব হুমায়ুন কবীর জানিয়েছিলেন, কারফিউ শিথিলের সময় স্বল্প দূরত্বে চলাচলকারী কিছু যাত্রীবাহী ট্রেন ২৫ জুলাই থেকে চলাচল করবে। পরে সেই সিদ্ধান্ত বাতিল করার কথা জানায় রেলওয়ে।
রেলওয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ, ঢাকা-গাজীপুর এবং ঢাকা-টাঙ্গাইল রুটের কমিউটার ট্রেনগুলো বেশি চালানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে ট্রেনগুলো তিন থেকে চারবার ট্রিপ করবে। এর মধ্যে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে কমিউটার ট্রেন স্বাভাবিক সময়ে ২০ বারের বেশি যাতায়াত করলেও বৃহস্পতিবার চার-পাঁচবার আসা-যাওয়া করতে পারে।
রেলের পশ্চিমাঞ্চলের (রাজশাহী, রংপুর ও খুলনা বিভাগ) কয়েকটি রুটের মধ্যে রাজশাহী থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ এবং লালমনিরহাট থেকে বুড়িমারী পর্যন্ত কমিউটার ট্রেন চলাচল করবে। ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে রাজবাড়ী পর্যন্ত কমিউটার ট্রেন চালুর পরিকল্পনা রয়েছে। রাজশাহী থেকে রাজবাড়ী ও ফরিদপুরের পথেও লোকাল ট্রেন চলানো হতে পারে। চট্টগ্রাম থেকে দোহাজারি পথেও ট্রেন চালানোর পরিকল্পনা আছে।
এ ছাড়া দূরবর্তী যাত্রার মধ্যে ঢাকা থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মধ্যে চলাচল করবে তিতাস কমিউটার ট্রেন। স্বাভাবিক সময়ে তিতাস ট্রেন দিনে চারবার আসা-যাওয়া করে। বৃহস্পতিবার একবার আসা-যাওয়া করতে পারে।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, তেলবাহী ট্রেন গত মঙ্গলবার থেকেই চলাচল করছে। মালবাহী কিছু ট্রেন গত বৃহস্পতিবার চলাচল করেছে। ভারত থেকে পাথরবাহী দুটি ট্রেনও চলাচল করছে। বিদ্যুৎকেন্দ্রের জ্বালানি সরবরাহের তেলবাহী ট্রেনও চলছে।