ডেস্ক রিপোর্ট
২৬ আগস্ট ২০২৩, ১০:১৬ অপরাহ্ণ
অধিকার ডেস্ক: ২৬ আগষ্ট ফুলবাড়ি দিবস উপলক্ষে-বাম গণতান্ত্রিক জোট বগুড়া জেলা শাখার উদ্যোগে সকাল:১১:৩০টায় সাতমাথায় মানববন্ধন-সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বাম গণতান্ত্রিক জোট বগুড়া জেলা শাখার সমন্বয়ক, সিপিবি জেলা সভাপতি জিন্নাতুল ইসলাম জিন্না। সমাবেশ সঞ্চালনা করেন বাসদ জেলা সদস্যসচিব অ্যাড.দিলরুবা নূরী, সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সিপিবি জেলা সাধারণ সম্পাদক আমিনূল ফরিদ, বাসদ বগুড়া জেলার সদস্য সাইফুজ্জামান টুটুল, সিপিবি জেলা সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য সন্তোষ পাল, বাসদ জেলা সদস্য মাসুদ পারভেজ প্রমূখ নেতৃবৃন্দ।
কমরেড জিন্নাতুল ইসলাম জিন্না বলেন, ‘উন্মুক্ত না, বিদেশী না, রপ্তানী না’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে দিনাজপুরের ফুলবাড়িতে যে আন্দোলন গড়ে উঠেছিল, সেই আন্দোলনের একটি গণতান্ত্রিক কর্মসূচীতে আচমকা পিছন থেকে পুলিশ গুলি চালায়। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছাত্র তরিকুলসহ সালেকিন, আলামিন নিহত হয়। বাবুল নামে একজন পঙ্গু হয়। শত শত মানুষ আহত হয়। ২৬ আগস্টের এই ঘটনার পর আন্দোলনের এক পর্যায়ে ৩০ আগস্ট তৎকালীন চার দলীয় সরকার আন্দোলন কারীদের সাথে ৬ দফা চুক্তি করে। তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনাও ফুলবাড়িতে গিয়ে প্রতিশ্রুতি দেয় তারা ক্ষমতায় গেলে এই ৬ দফা বাস্তবায়ন করবে। কিন্ত চুক্তির কিছু দফা বাস্তবায়ন হলেও চারদলীয় সরকার পরবর্তীতে আওয়ামী সরকার এত বছর ধরে ক্ষমতা থাকালেও প্রতিশ্রুতি অনুয়ায়ী এশিয়া এনার্জিকে দেশ থেকে বিতারণ করা তো দুরের কথা বরং জি.সি.এম নামে এই কোম্পানীকে প্রবেশ করানোর চক্রান্ত এখনো অব্যাহত রেখেছে।”
সমাবেশে অ্যাড. দিলরুবা নূরী বলেন, ‘প্রাণ-প্রকৃতি, জীব-বৈচিত্র, জনস্বাস্থ্য গুরুত্ব না দিলে মহা বিপর্যয় যে দেখা যায় তার প্রমাণ আমরা কোভিটের সময় খুব ভাল ভাবেই পেয়েছি। উন্নয়নের নামে কতিপয় মানুষের মুনাফার নির্মম শিকার আজ দেশবাসী। বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষ আজ নিরাপত্তাহীনতায়। কাজ হারিয়ে, খাদ্য, চিকিৎসা-শিক্ষা সংকটে মানুষ মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে। কোথায় গিয়ে, কবে থামবে এ যাত্রা তা বলা মুশকিল। এত কিছুর পরেও থেমে নেই সম্পদ লুন্ঠন ও দূর্নীতির। উন্নয়নের নামে জাতীয় সম্পদ, সম্ভাবনা ও সক্ষমতাকে ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচাতে হবে। ফুলবাড়ীর সংগ্রাম এ দাবি আদায়ে সৃষ্টি করেছিল গণঅভ্যুত্থান। লড়াই জারি আছে দীর্ঘ সময়। সকল ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে দাবি আদায়ের এ সংগ্রাম আরও জোড়ালো করতে হবে।’
অন্যান্য নেতৃবৃন্দ সমাবেশে দাবি তোলেন, এশিয়া এনার্জি (জিসিএম) কে দেশ থেকে বহিষ্কার, খুনি কোম্পানী ও দালালদের বিচারসহ রক্তে লেখা ফুলবাড়ী চুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়ন করা, ফুলবাড়ী নেতৃবৃন্দের নামে দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের, চীন-ভারত-দেশি কোম্পানীর মাধ্যমে ফুলবাড়ী বড়পুকুরিয়ার উত্তরাংশে উন্মুক্ত কয়লা খনির ষড়যন্ত্র বন্ধ করা, রামপাল-রূপপুর প্রাণ প্রকৃতি বিনাশী স্বাস্থ্যঝুঁকিপূর্ণ প্রকল্প বাতিল করে উত্তরবঙ্গসহ সারাদেশে সুলভে সার্বক্ষণিক গ্যাস ও বিদ্যুৎ নিশ্চিত করতে জাতীয় কমিটি প্রস্তাবিত মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের জোর দাবি জানান।
ফুলবাড়ির ৬ দফা দাবি:
১.এশিয়া এনার্জিকে ফুলবাড়িসহ দেশ থেকে বিতারিত করতে হবে।
২. ফুলবাড়িসহ দেশের কোথাও উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা উত্তোলন করা যাবে না।
৩. নিহতদের প্রত্যেক পরিবারকে দুই লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
৪. আহতসহ ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
৫. এশিয়া এনার্জির দালালদের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে।
৬. আন্দোলনকারীদের নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।