ডেস্ক রিপোর্ট
৯ নভেম্বর ২০২৩, ১১:৫৪ অপরাহ্ণ
অধিকার ডেস্ক: তৈরি পোশাক শ্রমিকদের নুন্যতম মজুরি নিয়ে তামাশা চলছে বলে অভিযোগ করেছেন জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের।
তিনি বলেন, বর্তমান বাজার ব্যবস্থায় প্রস্তাবিত ন্যূনতম মজুরি ১২ হাজার ৫০০ টাকা কিছুই না।
বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) গণমাধ্যমে এক বিবৃতিতে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান বলেন, গত মাসে সর্বনিম্ন মজুরি ৮ হাজার থেকে বাড়িয়ে ২৩ হাজার করার দাবিতে প্রবল আন্দোলন শুরু করের তৈরি পোশাক শিল্পের শ্রমিকরা। কয়েক দফা বৈঠকের পর শ্রমিকরা ২০ হাজার ৩৯৩ টাকা সর্বনিম্ন মজুরি দাবি করেন। কিন্তু মালিক পক্ষ ১০ হাজার ৪০০ টাকা দেওয়ার প্রস্তাব দেয়।
জিএম কাদের বলেন, পরবর্তীতে সরকারের সহায়তায় শ্রমিকদের সর্বনিম্ন মজুরি ১২ হাজার ৫০০ দেওয়ার প্রস্তাব দেয় মালিক পক্ষ। এই প্রস্তাব না মেনে আবারও আন্দোলনে নেমেছেন তৈরি পোশাক শিল্পের শ্রমিকরা। রপ্তানি শিল্পের শ্রমিকদের জীবন ও জীবিকা নিয়ে নির্দয় আচরণ চলছে। যে শ্রমিকরা বৈদেশিক মুদ্রা আয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন, তারাই সবচেয়ে বেশি মানবেতর জীবন যাপন করছেন। দেশের সমৃদ্ধিতে অবদান রাখা শ্রমিকদের সঙ্গে অমানবিক বৈষম্য চলছে।
সরকারের উদ্দেশ্যে জিএম কাদের বলেন, শ্রমিকদের বেতন বাড়িয়ে দিন অথবা নিত্যপণ্যের দাম কমান। শুরু থেকেই তৈরি পোশাক শিল্প শ্রমিকদের খুবই সামান্য বেতন দেওয়া হতো। আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৩ সালে তাদের বেতন নির্ধারণ করা হয় ৫ হাজার ৩০০ টাকা। অথচ ওই সময় শ্রমিকরা সর্বনিম্ন ১৬ হাজার টাকা বেতনের দাবিতে আন্দোলন করছিলেন। ২০১৮ সালের প্রবল শ্রমিক আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে পুনরায় শ্রমিকদের সর্বনিম্ন বেতন নির্ধারণ করা হয় ৮ হাজার টাকা। দফায় দফায় নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধিতে ১২ হাজার ৫০০ টাকায় একটি পরিবারের খাবার খরচই অসম্ভব। এমন বাস্তবতায় তারা বাসা ভাড়া, চিকিৎসা, পোশাক ও শিশুদের লেখাপড়া চালাবে কীভাবে?
জিএম কাদের বলেন, গবেষণা সংস্থা সিপিডির সর্বশেষ গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, বাংলাদেশে ৪ সদস্যের একটি পরিবারে শুধু মাসিক খাবার খরচ ২২ হাজার ৪২১ টাকা। এই গবেষণার পরেও কয়েকদফা দাম বেড়েছে নিত্যপণ্যের।
তৈরি পোশাক শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির আন্দোলনে সমর্থন জানিয়ে তিনি বলেন, অভিযোগ আছে পোশাক শ্রমিকদের আন্দোলন দমন করতে মাত্রাতিরিক্তি বল প্রয়োগ করা হচ্ছে। এতে অনেক হতাহতের খবর পাওয়া যাচ্ছে। পোশাক শ্রমিকদের আন্দোলন দমন করতে শক্তি প্রয়োগ সভ্য সমাজে অগ্রহণযোগ্য।
আন্দোলনরত শ্রমিক আঞ্জুয়ারা খাতুনের মৃত্যুতে ক্ষোভ ও দুঃখ প্রকাশ করে জিএম কাদের বলেন, আহত শ্রমিকদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে। একই সঙ্গে তৈরি পোশাক শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির দাবি মেনে নিতেও সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।