ডেস্ক রিপোর্ট
১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১০:৫১ অপরাহ্ণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : পাকিস্তানে জোট সরকার গঠন নিয়ে এখনো চূড়ান্ত সমঝোতায় পৌঁছাতে পারেনি কোনো দল। তবে জোট গঠনের তৎপরতায় এগিয়ে রয়েছে পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) ও পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি)। দফায় দফায় আলোচনায় বসছে তারা। জোট সরকার গঠনের পর প্রধানমন্ত্রিত্ব ভাগাভাগির চিন্তাভাবনা করছে দুই দল।
গত বৃহস্পতিবার পাকিস্তানে জাতীয় ও চার প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচন হয়। ২৬৬ আসনের মধ্যে ২৬৫ আসনের ভোট হয়। একটিতে ফল ঘোষণা স্থগিত হয়েছে। পাকিস্তান নির্বাচন কমিশনের (ইসিপি) ঘোষিত ফলাফলে পিটিআই সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা সর্বোচ্চ ৯২টি আসনে জয়ী হন। ৭৫ আসন পেয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে নওয়াজ শরিফের পিএমএল–এন। এরপরই ৫৪ আসন পেয়ে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারির পিপিপি। বাকি আসনগুলো অন্যান্য দল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন। জাতীয় পরিষদে সরকার গঠন করতে ১৩৪ আসনের প্রয়োজন হয়।
ভোটে প্রয়োজনীয় আসন না পাওয়ায় সরকার গঠনে অন্যান্য দলের দ্বারে দ্বারে যেতে হচ্ছে নওয়াজের দলকে। এরই মধ্যে পিপিপির সঙ্গে কয়েক দফা আলোচনায় বসেছেন তাঁর ছোট ভাই শাহবাজ শরিফ। জাতীয় পরিষদে ১৭ আসন পাওয়া মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্ট–পাকিস্তানের (এমকিউএম–পি) সঙ্গেও পিএমএল–এনের প্রাথমিক সমঝোতা হয়েছে। এ ছাড়া পিটিআই সমর্থিত এক স্বতন্ত্র প্রাথীসহ ছয়জন স্বতন্ত্র প্রার্থীও নওয়াজের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন।
এরই মধ্যে গতকাল রোববার রাতে লাহোরে পিপিপি প্রধান বিলাওয়ালের বাড়িতে যান শাহবাজ শরিফ। সেখানে দুই দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের মধ্যে আলোচনা হয়। বৈঠকের পর দুই দলই বিবৃতিতে জানায়, তারা রাজনৈতিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে একমত হয়েছে।
সরকারের পাঁচ বছরের মেয়াদে পিএমএল–এন তিন বছর ও পিপিপি দুই বছর—এভাবে দুই ভাগে প্রধানমন্ত্রিত্ব ভাগাভাগির সম্ভাব্যতা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। রোববারের বৈঠকে পাঞ্জাব ও বেলুচিস্তান প্রদেশেও জোট সরকার গঠনে সম্মত হয়েছে তারা।
জোট গঠনের পরই নিজ দল থেকে প্রধানমন্ত্রী কে হবেন, তা ঠিক করা হবে বলে জানিয়েছেন পিএমএল–এন নেতা আতা তারার। তবে বিলাওয়ালকে এরই মধ্যে পিপিপি থেকে প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত করা হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে পিপিপির নেতা ফয়সাল করিম কুন্দি আজ সোমবার বলেছেন, ‘বিলাওয়ালকে যদি প্রধানমন্ত্রী বানানো না হয়, তাহলে জাতীয় পরিষদে পিপিপির বিরোধী পক্ষে বসা উচিত হবে।’
পাকিস্তানের নির্বাচনে অনিয়ম ও ফলাফলে কারচুপির অভিযোগে দেশজুড়ে বিক্ষোভ করছে পিটিআইসহ বিভিন্ন দলের সমর্থকেরা। আজও ইসলামাবাদ, লাহোর, করাচি, রাওয়ালপিন্ডি, পেশোয়ারসহ বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ হয়েছে। লাহোরে পিটিআই কার্যালয়ের বাইরে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। রাওয়ালপিন্ডিতে পিটিআইয়ের ৬২ নেতা-কর্মীকে আটক করা হয়েছে। বেলুচিস্তান প্রদেশেও বিক্ষোভ সমাবেশের খবর পাওয়া গেছে।
ইতিমধ্যে পাকিস্তানের বেশ কয়েকটি আসনে নির্বাচনের ফলাফলকে চ্যালেঞ্জ করে আদালতে মামলা করা হয়েছে। তবে কত আসনে এমন মামলা হয়েছে, সে সম্পর্কে পাকিস্তানের গণমাধ্যমে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানানো হয়নি।