ডেস্ক রিপোর্ট
২০ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:২৪ পূর্বাহ্ণ
অধিকার ডেস্ক: রাজধানীর তেজগাঁও এলাকায় মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুন লাগানোর ঘটনায় সরকারের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, নেত্রকোণার মোহনগঞ্জ থেকে আসার সময় তেজগাঁও এলাকায় ট্রেনে আগুন লাগানো হয়েছে। একই ট্রেনে কয়েকদিন আগে স্লিপার খুলে ফেলা হয়েছিল। সেখানে একজন মারা গিয়েছিল। ট্রেনের নিরাপত্তা কোথায়? কেন আজ চারজন মানুষ পুড়ে মারা গেল? এটার সাথে রাষ্ট্রক্ষমতার নিশ্চিত সম্পর্ক আছে।
মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) বিকেলে এক ভার্চুয়াল ব্রিফিংয়ে এ অভিযোগ করেন তিনি।
তদন্ত ছাড়াই ট্রেন পোড়ানোর ঘটনায় আন্দোলনকারীদের দোষারোপ করায় ডিএমপি কমিশনারের বক্তব্যের সমালোচনা করেন রিজভী। তিনি বলেন, ‘পুলিশ কমিশনার বলেছেন— এটার সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সম্পৃক্ততা আছে। সরকার সব জায়গায় ক্রীতদাস বসিয়ে রেখেছে। তারা তো একই কথা বলবেই। শেখ হাসিনার সুরে কথা বলছেন। আপনি তো এখনো তদন্ত শুরুই করেননি, তার আগে বলে দিলেন। অনেকগুলো সিম্পটম থেকে বোঝা যায়, এটার সাথে সরকারের সংশ্লিষ্টতা আছে, এটা আমরা মনে করি এবং জনগণ মনে করে।’
তিনি আরও বলেন, ‘একই ট্রেন বারবার আক্রান্ত হচ্ছে আর সরকারের কোনো পদক্ষেপ নেই। অবলীলায় এতগুলো প্রাণ ঝরে গেল। এগুলো থেকে কি মনে হয় না, এই ঘটনার সাথে সরকারের সম্পৃক্ততা আছে। কমিশনার সাহেব আপনি তদন্ত না করেই বলে দিলেন অবরোধ-হরতালকারীরা এ কাজ করেছে। এই অবরোধ হরতালকারীদের উপর দোষ চাপানোর জন্যই এটা একটা পরিকল্পনা। সরকার এখন জঙ্গি নাশকতার আশঙ্কা করবে, এটা আমরা প্রতিদিনই বলে আসছি এবং সেটা আজ বাস্তবে প্রতিপালিত হচ্ছে রেলের ঘটনা নিয়ে।’
রিজভী বলেন, ‘এক গণবিরোধী ও মানবতাবিরোধী সরকার রাষ্ট্র ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে আছে। তারা জনগণের দাবি আকাঙ্ক্ষা কর্ণপাত করেন না। তারা যে জোড় করে ক্ষমতা ধরে আছে এটা তারা মানতে চায় না বলেই জনগণের উপর ক্ষমতার অপব্যবহার করছে। আবারো সরকার একতরফা নির্বাচন করতে চাচ্ছে। অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য দেশ-বিদেশ থেকে অনেকে আহ্বান জানিয়েছেন এবং অনুরোধ জানিয়েছেন। কিন্তু অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা আওয়ামী লীগ নেতারা প্রধানমন্ত্রীসহ মুখ দিয়ে একবারও বের করে না। উন্নয়নের কথা বলে, পদ্মা সেতুর কথা বলে, কথার ফুলঝুরি ঝরে। কিন্তু অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা বলে না। ’
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব বলেন, ‘রাষ্ট্র চালাতে গেলে কিছু আইন আছে। সেই আইন অনুযায়ী রাষ্ট্র চালাতে হয়। কিন্তু এটা তিনি (শেখ হাসিনা) কখনোই গুরুত্ব দেন না। দীর্ঘ দেড় দশক ধরে এটাকে তিনি কখনো পাত্তা দিচ্ছেন না। মধ্যযুগীয় রাজা-বাদশারা যতটুকু আইন মানতেন, শেখ হাসিনা সেই অন্ধকার যুগ অতিক্রম করে আরো গভীর নিবিড় অন্ধকারের মধ্যে চলে গেছে। তার অত্যন্ত ক্ষমতার দরকার। তিনি নিজেই বলেছে আমার আরও ক্ষমতা দরকার।’
তিনি আরও বলেন, ‘ক্ষমতা দরকার বলেই তিনি সরকারি সব প্রতিষ্ঠান ভেঙে চুরমার করে ফেলেছেন। নির্বাচন কমিশন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, বিচার বিভাগ, জনপ্রশাসন সবাই তার কৃতদাস। এই বিপন্ন সময় এ দেশের জনগণ এর আগে দেখেছে কি না আমার জানা নেই।’
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব বলেন, ‘গণমাধ্যমে এসেছে— যারা নৌকায় ভোট দেবে না তাদেরকে এলাকায় থাকতে দেওয়া হবে না। কী অনাচাররের মধ্য দিয়ে দেশ চলছে! শেখ হাসিনার মনোবাসনা পূরণ করার জন্য তিনি সবাইকে লেলিয়ে দিয়েছেন। এই মানবতা হরণকারী কারা আমরা জানি না। এই মানবতার শত্রু কারা? নাশকতাকারী কারা?’
তিনি বলেন, ‘ডাক্তাররা যেন স্ট্যান্ডবাই থাকে’ এমন একটা পরিপত্র দেখলাম পুলিশের পক্ষ থেকে হেলথের ডিজিকে দেওয়া হয়েছে। এটা কেন, কীসের জন্য? এটাতে সাধারণ জনগণের মনে সন্দেহ জাগছে।