ডেস্ক রিপোর্ট
১৪ আগস্ট ২০২৩, ৩:৩২ অপরাহ্ণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইরানে একটি মাজারে বন্দুক হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে একজন নিহত হয়েছেন। হামলায় আহত হয়েছেন আরও আটজন। রোববার (১৩ আগস্ট) দক্ষিণ ইরানের শিরাজ শহরের একটি মাজারে ওই হামলা ও হতাহতের ঘটনা ঘটে।
ইরানের সংবাদমাধ্যমে অবশ্য এই হামলাকে সন্ত্রাসী হামলা হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। সোমবার (১৪ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরানের শিরাজ শহরের একটি মাজারে ‘সন্ত্রাসী’ হামলায় একজন নিহত ও আটজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে বলে রোববার পশ্চিম এশিয়ার এই দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে।
দেশটির সরকারি বার্তাসংস্থা আইআরএনএ জানিয়েছে, হামলার সময় একজন বন্দুকধারী শাহ চেরাগ মাজারে প্রবেশের চেষ্টা করে এবং দর্শনার্থীদের ওপর গুলি চালায়।
এর আগে গত বছরের অক্টোবরে শাহ চেরাগের মাজার এলাকায় আরেকটি হামলার ঘটনা ঘটে। জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) চালানো সেই হামলায় ১৩ জন নিহত হয়েছিলেন। অবশ্য কোনও গোষ্ঠী তাৎক্ষণিকভাবে সর্বশেষ হামলার দায় স্বীকার করেনি।
বিবিসি বলছে, হামলার ঘটনার পর ইরানের রাষ্ট্রীয় মিডিয়া প্রাথমিকভাবে বলেছিল, দুই হামলাকারী এই আক্রমণ চালিয়েছে এবং তাতে চারজন নিহত হয়েছেন। কিন্তু পরে তথ্য সংশোধন করে জানানো হয়, একজন আক্রমণকারী এই হামলা চালান এবং এতে একজন মারা গেছেন ও আটজন আহত হয়েছেন।
ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ডস কর্পসের আঞ্চলিক কমান্ডার ইয়াদুল্লাহ বোয়ালি রাষ্ট্রীয় টিভিকে বলেছেন, ‘এক সন্ত্রাসী মাজারের গেটে প্রবেশ করে এবং রাইফেল দিয়ে গুলি চালায়’।
এদিকে আধা-সরকারি বার্তাসংস্থা ফারস বলেছে, অভিযুক্ত ওই বন্দুকধারী বাব আল-মাহদি দরজা দিয়ে মাজারে ঢোকার চেষ্টা করে এবং সেখানে দায়িত্বপালনরত নিরাপত্তা বাহিনীর কাছ থেকে ‘প্রতিরোধের’ মুখোমুখি হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা ফারসকে বলেছেন, নিরাপত্তা বাহিনীর মুখোমুখি হওয়ার পর একজন বন্দুকধারী নির্বিচারে গুলি করতে শুরু করেন।
তাসনিম নামে ইরানের আরেকটি আধা-সরকারি সংবাদসংস্থা জানিয়েছে, হামলায় অন্তত সাতজন আহত হয়েছেন এবং এলাকার দোকানপাট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। রাষ্ট্রীয় টিভি জানিয়েছে, মাজার এলাকাটি নিরাপত্তা বাহিনী ঘেরাও করে রেখেছে।
শিরাজ শহরের এই মাজারটি ইরানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তীর্থস্থানগুলোর মধ্যে একটি এবং তাসনিম থেকে পাওয়া ছবিগুলোতে ওই মাজারের প্রবেশদ্বারের পাশে থাকা জানালাগুলোতে বুলেটের ছিদ্র দেখা যাচ্ছে।
বিবিসি বলছে, ইরানের শিরাজ শহরের এই মাজারটিতে সপ্তম শিয়া ইমাম মুসা আল-কাদিমের দুই ছেলের সমাধি রয়েছে। তারা অষ্টম ইমাম আলী আল-রিদার ভাইও।
এদিকে গত অক্টোবরে হামলা চালাতে সহায়তা করার অভিযোগে ইরান গত মাসে দুই ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ড দেয়। হামলার প্রধান অভিযুক্ত হিসেবে হামেদ বাদাখশান নামে একজন আফগান নাগরিককে চিহ্নিত করা হয়েছিল, যদিও তিনি হামলার সময় ঘটনাস্থলেই নিহত হন।
এছাড়া অন্য তিন আসামিকে ২৫ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, ইরানের শিরাজ শহর হলো তীর্থযাত্রা ও পর্যটনের জন্য একটি জনপ্রিয় গন্তব্য। এর আগে ২০০৮ সালের এপ্রিল মাসে এই ধরনের হামলা হয়েছিল। সেসময় একটি মসজিদে পেতে রাখা বোমায় ১৪ জন নিহত হয়েছিলেন।