ডেস্ক রিপোর্ট

১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২:৪৪ অপরাহ্ণ

আশুলিয়ার শিল্পাঞ্চলে পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক, এখনো বন্ধ ২০ কারখানা

আপডেট টাইম : সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২৪ ২:৪৪ অপরাহ্ণ

শেয়ার করুন

অধিকার ডেস্ক: ঢাকার সাভারের আশুলিয়ার শিল্পাঞ্চলের সার্বিক পরিস্থিতি আজ রোববার অনেকটাই স্বাভাবিক। তবে শ্রমিক বিক্ষোভ ও ভাঙচুরের জেরে আজ ২০টি শিল্পকারখানা বন্ধ ও ছুটি আছে বলে জানিয়েছে আশুলিয়ার শিল্পাঞ্চল পুলিশ-১।

শিল্প পুলিশ জানায়, আজ সকালে নির্ধারিত সময়ে কাজে যোগ দিয়েছেন বিভিন্ন শিল্পকারখানার শ্রমিকেরা। তাঁরা শান্তিপূর্ণভাবে কাজ করছেন। তবে আজও শ্রম আইন অনুযায়ী ১৮টি কারখানা বন্ধ আছে এবং সাধারণ ছুটি আছে ২টি কারখানায়। এর মধ্যে ওষুধ ও চামড়াজাত পণ্য প্রস্তুতসহ বিভিন্ন ধরনের কারখানা আছে। তবে অধিকাংশই তৈরি পোশাক কারখানা।

চলমান শ্রমিক অসন্তোষ নিরসনের পরিপ্রেক্ষিতে শ্রম–সংক্রান্ত অভিযোগ পর্যবেক্ষণ ও পর্যালোচনা কমিটির সদস্যরা আজ তৈরি পোশাক কারখানা পরিদর্শন করছেন। সকালে আশুলিয়ার কাঠগড়া, জিরাবো, নরসিংহপুর, জামগড়া এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বিভিন্ন কারখানার সামনে সেনাবাহিনী, বিজিবি ও পুলিশ সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন। সড়কে টহল দিচ্ছেন সেনাবাহিনী, বিজিবি ও র‍্যাব সদস্যরা।

সকাল সাড়ে ৮টার দিকে জিরাবো এলাকায় মাসকট গ্রুপের কারখানার সামনের ফটকে শ্রমিকদের অবস্থান করতে দেখা যায়। পাশেই অবস্থান নিয়েছেন শিল্প পুলিশ, বিজিবি ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কারখানার এক নারী শ্রমিক বলেন, ‘৭ তারিখে বেতন দেওয়ার জন্য কারখানার সবাই ম্যানেজমেন্টকে বলি। কর্তৃপক্ষ জানায়, ৩-৪ দিন দেরি হবে। এরপর ঠিকই পরদিন বেতন দিয়ে কারখানা বন্ধ করে দিছে। কারখানায় কেউ ভাঙচুর তো করে নাই, কোনো গ্যাঞ্জামও হয় নাই, তাইলে বন্ধ কইরা কেন রাখছে। আমরা চাই কারখানা খুলে দেওয়া হোক।’

এদিকে শিল্পকারখানার উদ্ভূত সংকট নিরসনে কিছু কারখানার মালিক পক্ষের আন্তরিকতার অভাব আছে বলে মনে করছেন শ্রমিক নেতারা। বাংলাদেশ গার্মেন্টস ও সোয়েটার শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের আইনবিষয়ক সম্পাদক খায়রুল মামুন প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল বিজিএমইএ উদ্ভূত পরিস্থিতি নিরসনের বিষয়ে সভা করে। ওই সভায় সব কারখানা খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তের পাশাপাশি কোনো কারখানায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হলে মালিক চাইলে শ্রম আইন অনুযায়ী শুধু সেই কারখানা বন্ধ রাখতে পারবে। তবে তাঁরা জেনেছেন, কয়েকটি কারখানা এখনো বন্ধ আছে। সমস্যা সমাধানে কারখানা খুলে শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। উভয় পক্ষ সমঝোতায় পৌঁছাতে না পারলে সমাধান সম্ভব নয়।

আশুলিয়ার শিল্পাঞ্চল পুলিশ-১–এর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সারোয়ার আলম প্রথম আলোকে বলেন, বেশ কিছু শিল্পকারখানায় অভ্যন্তরীণ সমস্যা ও মালিকপক্ষের সঙ্গে শ্রমিকদের বনিবনা না হওয়ায় আজ শ্রম আইন অনুযায়ী ১৮টি কারখানা বন্ধ রয়েছে। এ ছাড়া ২টি কারখানায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। বন্ধ কারখানাগুলোর অধিকাংশ তৈরি পোশাক কারখানা।

চলমান শ্রমিক অসন্তোষের পরিপ্রেক্ষিতে শ্রম–সংক্রান্ত অভিযোগ পর্যবেক্ষণ ও পর্যালোচনা কমিটির সদস্যরা আজ বেলা ১১টার দিকে আশুলিয়ার অনন্ত গ্রুপের কারখানা পরিদর্শন করেন। তাঁরা কারখানাটির কর্মকর্তাদের সঙ্গে সামগ্রিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।

পরিদর্শনকালে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এবং শ্রম–সংক্রান্ত অভিযোগ পর্যবেক্ষণ ও পর্যালোচনা কমিটির আহ্বায়ক সবুর হোসেন বলেন, গত বুধবার ১১ সদস্যবিশিষ্ট এই কমিটি গঠন করা হয়। ওই সভার সিদ্ধান্ত অনুসারে শিল্পাঞ্চলের উদ্ভূত পরিস্থিতি নিরসনের লক্ষ্যে আশুলিয়ায় এসেছেন। কারখানার মালিক, শ্রমিকসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের দাবি, আপত্তি, অভিযোগ তাঁরা জানতে চান। এসব জানানোর জন্য হট লাইন ১৬৩৫৭ নম্বর চালু করা হয়েছে। সেই সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ, ই-মেইল আইডি ও ডাকযোগেও অভিযোগ পাঠানো যাবে।

আজ দুপুর ১২টার দিকে বিজিএমইএ-এর পক্ষ থেকে জানানো হয়, আশুলিয়ায় মোট ২৭২টি কারখানার মধ্যে বন্ধ আছ ৬টি কারখানা। সবেতন ছুটি আছে ৪টি কারখানায়। কারখানা খোলা রাখার পর কাজ বন্ধ আছে ৬টিতে। গত আগস্ট মাসের বেতন পরিশোধ করেছে ২৫৮টি কারখানা কর্তৃপক্ষ। বেতন পরিশোধ করেনি ১৪টি কারখানা কর্তৃপক্ষ।

শেয়ার করুন