ডেস্ক রিপোর্ট

৪ আগস্ট ২০২৪, ৪:৫৮ অপরাহ্ণ

অসহযোগ আন্দোলনের প্রথম দিনে সারাদেশে সংঘর্ষে নিহত ২৩

আপডেট টাইম : আগস্ট ৪, ২০২৪ ৪:৫৮ অপরাহ্ণ

শেয়ার করুন

অধিকার ডেস্ক: কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম ‘বৈষমবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ ঘোষিত অসহযোগ আন্দোলনের প্রথমদিন রোববার (৪ আগস্ট) দুপুর পর্যন্ত ২৩ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে সিলেটে দুজন, ভোলায় একজন, কিশোরগঞ্জে তিনজন, ফেনীতে পাঁচজন, পাবনায় তিনজন, বগুড়ায় দুজন, বরিশালে একজন, কুমিল্লায় একজন, রংপুরে দুজন, মাগুরায় একজন ও মুন্সিগঞ্জের দুজন রয়েছেন।

সিলেট
সিলেটের গোলাপগঞ্জে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। দুপুর ১টার দিকে গোলাপগঞ্জ পৌর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

গোলাপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সুদর্শন সেন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

নিহতরা হলেন উপজেলার ধারাবাহর গ্রামের মকবুল আলীর ছেলে ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ঠিকাদার (খাবার সরবরাহকারী) তাজ উদ্দিন (৪৩) ও শিলঘাটের বাসিন্দা সানি আহমদ (১৮)।

ভোলা
ভোলায় সহিংসতার ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে জসিম উদ্দিন (৪৫) নামের এক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। তিনি ভোলা পৌর নবীপুর এলাকার আবু তাহেরের ছেলে ও ভোলার শহরের নতুন বাজার এলাকায় ছাতা ব্যবসায়ী।

নিহতের ভাই মো. সবুজ জানান, তার ভাই জসিম উদ্দিন ভোলার শহরের নতুন বাজার এলাকায় রাস্তার পাশে বসে ছাতা বিক্রি ও মেরামত করতেন। আজ দুপুরের দিকে তিনি গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান।

ভোলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) রিপন কুমার সরকার জানান, তিনি লোকমুখে শুনেছেন একজন মারা গেছে।

কিশোরগঞ্জ
কিশোরগঞ্জে ত্রিমুখী সংঘর্ষে তিনজন নিহত হয়েছেন। শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেলে একজন ও সদর হাসপাতালে দুজনের মরদেহ রয়েছে।

শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. হেলাল উদ্দিন ও সদর হাসপাতালের পরিচালক ডা. আকরাম উল্লাহ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

ফেনী
ফেনীতে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের অসহযোগ কর্মসূচি চলাকালে সংঘর্ষে পাঁচজন নিহত হয়েছেন। তাৎক্ষণিকভাবে তাদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি। সংঘর্ষে আহত হয়েছেন অনেকে।

ফেনী জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে পাঁচজনের মরদেহ রয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন হাসপাতালের আরএমও ডা. আসিফ ইকবাল। তবে তাদের নাম- পরিচয় জানা যায়নি।

রংপুর
রংপুরে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগ-যুবলীগ নেতাকর্মীদের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষে দুজন নিহত হয়েছেন। দুপুরে নগরীর সিটি বাজারের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত দুজনের মধ্যে একজন স্বেচ্ছাসেবক লীগের কর্মী খরশু মিয়া। অপরজনের নাম এখনো জানা যায়নি।

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সর্দার রুমের দায়িত্বে থাকা মিজানুর রহমান জানান, দুপুরে দুজনের মরদেহ নিয়ে আসা হয়েছে। তাদের পরিচয় জানা যায়নি।

মুন্সিগঞ্জ
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে মুন্সিগঞ্জ জেলা শহরের সুপার মার্কেট এলাকা। রোববার সকালে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে দুজন নিহত হয়েছেন। তাৎক্ষণিকভাবে নিহতদের পরিচয় জানা যায়নি।

মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আবু হেনা জামাল জানান, রোববার বেলা ১১টার দিকে গুলিবিদ্ধ দুই যুবকের মরদেহ হাসপাতালে আনা হয়। তাদের বয়স ২১ থেকে ২৫ বছর। নিহতরা আন্দোলনকারী হতে পারেন।

বরিশাল
বরিশালে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় এক ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা নিহত হয়েছেন। তার নাম টুটুল চৌধুরী (৬০)। তিনি বরিশাল মহানগরীর ১২ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি।

দুপুরে বরিশাল নগরের বটতলা এলাকার করিম কুটিরের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেন শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিকেল জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সজিব আহমেদ।

কুমিল্লা
কুমিল্লায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের সংঘর্ষে রুবেল (৩৩) নামের একজন নিহত হয়েছেন। দুপুর পৌনে ২টার দিকে দেবীদ্বার পৌরসভার বানিয়াপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত রুবেল দেবীদ্বার পৌরসভার বারেশ্বর এলাকার ইউনুস মিয়ার ছেলে।

মাগুরা
মাগুরা শহরের ঢাকা রোডে পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষে এক ছাত্রদল নেতা নিহত হয়েছেন। বেলা ১১টার দিকে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসময় তিন পুলিশ সদস্যসহ ১০ জন আহত হয়েছেন।

নিহত মেহেদী হাসান রাব্বি পারনান্দুয়ালী এলাকার অধিবাসী এবং জেলা ছাত্রদলের সহসাধারণ সম্পাদক।

মাগুরা ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের পরিচালক মহসিন উদ্দিন জানান, দুপুর আনুমানিক ১২টার সময় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ওই যুবককে হাসপাতালে আনা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাড়ে ১২টার দিকে তিনি মারা যান। তার শরীরে গুলির চিহ্ন রয়েছে।

বগুড়া
বগুড়ায় অসহযোগ আন্দোলনের সমর্থকদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও পুলিশের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনায় দুজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ৩০ জন। এদের মধ্যে অনেকে গুলিবিদ্ধ।

বগুড়ার সাতমাথায় এ হতাহতের ঘটনা ঘটে। এসময় বগুড়া টিএনটি অফিস, আওয়ামী লীগ, ছাত্র ইউনিয়ন ও জাসদ অফিস, টাউন ক্লাব, সদর ভূমি অফিস ও আওয়ামী লীগ নেতার ব্যক্তিগত কার্যালয়ে আগুন লাগিয়ে দেয় আন্দোলনকারীরা।

বিষয়টি নিশ্চিত করে বগুড়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. আব্দুল ওদুদ জানান, হাসপাতালের মর্গে দুটি মরদেহ রয়েছে।

পাবনা
পাবনায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের কর্মসূচি চলাকালে তিনজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ৪০ জন।

নিহতরা হলেন সদর উপজেলার বলরামপুর গ্রামের দুলাল উদ্দিনের ছেলে জাহিদুল (১৮), দোগাছি গ্রামের কালামের ছেলে মো. মাহাবুল (২০) ও ফাহিম (১৭)।

পাবনা জেনারেল হাসপাতালের আরএমও ডা. জাহিদুল ইসলাম তিনজনের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেন।

শেয়ার করুন